ছবি পিটিআই।
এক দিকে মোদী সরকার কৃষকদের দাবিতে কর্ণপাত করছে না। ও দিকে প্রধানমন্ত্রীর ‘মিত্র’ বলে পরিচিত শিল্পপতির সংস্থা একের পর এক সরকারি বরাত পেয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ তুলল কংগ্রেস।
শুধুমাত্র অম্বানী-আদানির মতো শিল্পগোষ্ঠীকে ফায়দা পাইয়ে দিতেই তিন কৃষি আইন এনে চুক্তি চাষ ও যত ইচ্ছে খাদ্যশস্য মজুত করার ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে বলে কৃষক নেতারা আগেই অভিযোগ তুলেছিলেন। এই যুক্তিতেই তাঁরা অম্বানীর রিলায়্যান্স সংস্থার জিয়োর মোবাইল পরিষেবা, আদানির সংস্থার তৈরি ভোজ্য তেল বয়কট করারও ডাক দিয়েছেন। আজ কংগ্রেস সরাসরি আদানিদের নাম করে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে ফায়দা পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ তুলল।
কংগ্রেস মুখপাত্র গৌরব বল্লভ বলেন, “খাদ্য নিগম বা এফসিআই-এর খাদ্যশস্য মজুত করার একা বরাত পেয়েছে আদানি এগ্রিলজিস্টিকস। ২০১৬-র পর থেকে সমস্ত চুক্তি হয়েছে। আদানি গোষ্ঠীর এই সংস্থা এখন এফসিআই-এর হয়ে পঞ্জাব, হরিয়ানা, তামিলনাড়ু, কর্নাটক, মহারাষ্ট্র, পশ্চিমবঙ্গে ৫ লক্ষ ৭৫ হাজার টন খাদ্যশস্যের দায়িত্বে। মধ্যপ্রদেশে আরও ৩ লক্ষ টন খাদ্যশস্য মজুত করার দায়িত্ব নিয়েছে আদানি। ৩০ বছরের চুক্তিতে প্রতি টন খাদ্যশস্যের জন্য নির্দিষ্ট আয়ের গ্যারান্টি দেওয়া হয়েছে আদানির সংস্থাকে।” আজ কংগ্রেস নেত্রী সনিয়া গাঁধীও বিবৃতিতে বলেছেন, “মনে হচ্ছে, হাতে গোনা শিল্পপতিদের মুনাফা নিশ্চিত করাই এই সরকারের প্রধান কর্মসূচি হয়ে দাঁড়িয়েছে।”
কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধী টুইট করে কটাক্ষ করেছেন, মোদী সরকার চাষিদের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য বা এমএসপি-র আইনি গ্যারান্টি দিতে নারাজ। কিন্তু নিজের শিল্পপতি বন্ধুদের শস্যের গুদাম চালানোর জন্য নিশ্চিত মূল্য দিচ্ছে। সরকারি মান্ডি হয় বন্ধ করা হচ্ছে, না হলে ফসল কেনাই হচ্ছে না। ছত্তীসগঢ়ে কংগ্রেস সরকারের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেল কেন্দ্রের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন, তাঁর রাজ্য থেকে এফসিআই চাল তুলছে না। রাজ্য সরকার চাষিদের থেকে চাল কিনতে শুরু করে দিয়েছে। কিন্তু এফসিআই চাল না-তোলায় রাজ্যের গুদামে আর শস্য রাখার জায়গা নেই।
আদানি গোষ্ঠী অবশ্য আগেই জানিয়েছে, তারা চাষিদের থেকে চাল-গম কেনে না। শুধুমাত্র সরকারের হয়ে খাদ্যশস্য মজুত করে। কৃষি আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলন ও সংস্থার বিরুদ্ধে আঙুল ওঠার পরে আদানি গোষ্ঠী বিজ্ঞাপন দিয়েও একই কথা বলেছিল। সেই সঙ্গে কৃষি আইনের বিরুদ্ধে অপপ্রচারেরও জবাব দিয়েছিল। সংস্থার দাবি, ২০০৫ থেকেই তারা খাদ্যশস্য মজুতের জন্য অত্যাধুনিক গুদাম, পরিকাঠামো তৈরির পরিষেবায় রয়েছে। স্বচ্ছ দরপত্র প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই তারা বরাত পেয়েছে।
কংগ্রেসের প্রশ্ন, ছত্তীসগঢ়ে মোদী সরকারের স্যুট-বুটের বন্ধুরা খাদ্যশস্য মজুতের বরাত পেলে তবে কি কেন্দ্র সেখান থেকে চাল তুলতে শুরু করবে!