ফাইল চিত্র।
রান্নার গ্যাসে ‘চুপিসারে’ ভর্তুকি কমানোর যে অভিযোগ মাথা তুলেছিল গত মাসে, তা আরও জোরদার হল। তেল সংস্থাগুলি আগেই জানিয়েছে, সেপ্টেম্বরে কলকাতায় ১৪.২ কেজির ভর্তুকিহীন রান্নার গ্যাস সিলিন্ডারের দাম অগস্টের থেকে ১৫.৫০ টাকা বেড়ে ৬১৬.৫০ টাকা হয়েছে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, গ্রাহকের হাতে আসা ভর্তুকির পরিমাণ আগের মাসের তুলনায় বেড়েছে মাত্র আট টাকা।
এই অবস্থায় উদ্বিগ্ন আমজনতার প্রশ্ন, তাঁদের অন্ধকারে রেখে আসলে কি নিঃশব্দে ভর্তুকি তুলে দিতে চায় কেন্দ্রীয় সরকার? এত দিন জিএসটি সমেত ভর্তুকিহীন সিলিন্ডারের দাম যদি ১০০ টাকা হত আর ভর্তুকিযুক্ত সিলিন্ডারের দাম ৯০ টাকা, তা হলে দু’য়ের মধ্যে ফারাক, অর্থাৎ ১০ টাকা জমা পড়ত গ্রাহকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। এই প্রক্রিয়ায় প্রতি মাসে দু’ধরনের সিলিন্ডারের দামই জানাত রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থাগুলি। অথচ ডিলারদের দাবি, অগস্টের মতো এ মাসেও ভর্তুকির সিলিন্ডারের দাম ঘোষণা করা হয়নি। জানানো হয়নি ভর্তুকির অঙ্কও।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, গত অগস্টেই প্রথম বার উজ্জ্বলা গ্রাহকদের সাধারণ গ্রাহকের তুলনায় বেশি ভর্তুকি দেওয়া হয়েছিল। সে মাসে উজ্জ্বলা গ্রাহক ভর্তুকি পেয়েছিলেন ৯৫.০৫ টাকা এবং সাধারণ গ্রাহক ৭৪.০৫ টাকা।
সেপ্টেম্বরে উজ্জ্বলা গ্রাহক ভর্তুকি পাচ্ছেন ১০২.৯৫ টাকা। সাধারণ গ্রাহক ৮১.৯৫ টাকা। অর্থাৎ, এ বার সিলিন্ডারের দাম ১৫.৫০ টাকা বাড়লেও সকলেরই ভর্তুকি বাড়ছে মাত্র ৭.৯০ টাকা। এত দিন ভর্তুকিহীন সিলিন্ডারের দাম যতটা বাড়ত, জিএসটির অঙ্ক বাদ দিয়ে তার প্রায় সবটাই ভর্তুকি বাবদ মিলত। তাই প্রশ্ন উঠছে, এ বার তা হলে কেন এতটা কম দেওয়া হচ্ছে ভর্তুকি? এ নিয়ে সংস্থাগুলির অবশ্য মুখে কুলুপ।
অনেকে বলছেন, হয় ভর্তুকিযুক্ত সিলিন্ডারের দাম এ মাসে বাড়ানো হয়েছে, কিংবা ভর্তুকির পরিমাণ কমানো হয়েছে। কিন্তু ভর্তুকির সিলিন্ডারের দাম ঘোষণা না-হওয়ায় এ নিয়ে ধোঁয়াশা কাটেনি। এর আগে পরিবারিক আয় বছরে ১০ লক্ষ টাকা হলে, সংশ্লিষ্ট গ্রাহকের ভর্তুকি তুলে দিয়েছে কেন্দ্র। আগামী দিনে বাকিদের ক্ষেত্রেও তেমন ভাবনা আছে কি না, তা স্পষ্ট নয় এখনও।