—ফাইল চিত্র।
পুরনো দুই শরিক— শিবসেনা এবং অকালি ছেড়ে গিয়েছে। বর্তমান শরিকরাও মনে করছেন, সংখ্যার অহংকারে ধরাকে সরা জ্ঞান করছেন বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব। রাজ্যগুলির শরিকদলের সঙ্গে বিভিন্ন ক্ষেত্রে তৈরি হচ্ছে সংঘাত। নির্বাচন হয়ে যাওয়া বিহার এবং নির্বাচনের মুখে দাঁড়ানো তামিলনাড়ু— উভয় রাজ্যেই যথাক্রমে জে়ডিইউ এবং এডিএমকে-র সঙ্গে বিজেপির টানাপড়েন ক্রমশ প্রকাশ্যে। বিহারের রাজ্যসভার সাংসদ গোপালনারায়ণ সিংহ আজ তাঁদের জোটেরই প্রতিনিধি মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন। তাঁর অভিযোগ, রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উপর কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই নীতীশের।
অন্য দিকে, তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী পদে এডিএমকে প্রার্থী ঘোষণা (পলানিস্বামী) ঘোষণা করার পরেও তা মানতে চাইছেন না বিজেপি নেতৃত্ব। দ্রাবিড় দলের ক্ষুব্ধ নেতাদের বক্তব্য, বিজেপি দিল্লিতে ক্ষমতাশালী হতে পারে। কিন্তু দক্ষিণে টিকে থাকতে হলে আঞ্চলিক দলের কথা শুনেই চলতে হবে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, সব মিলিয়ে যথেষ্ট অশান্তি এনডিএ সংসারে।
২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে বিজেপির সঙ্গে একজোটে লড়েছিল এআইডিএমকে। সেই সুর কিছুটা কেটে গিয়েছে বলেই মনে করছে স্থানীয় রাজনৈতিক মহল। গত মাসের শেষে এডিএমকে তাদের বিধানসভা প্রচার শুরু করেছে তামিলনাড়ুর বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী পলানিস্বামীকে সামনে রেখে। দলের তরফে সাফ বলে দেওয়া হচ্ছে, জাতীয় দল সঙ্গে আসুক বা অন্য কোনও স্থানীয় দল, সরকারে নেতৃত্ব দেবে এডিএমকে-ই। কোনও জোট সরকার গড়া হবে না। কেউ সমর্থন করলে আপত্তি নেই। বিজেপি-র প্রাক্তন জাতীয় সচিব সি টি রভি অবশ্য কন্যাকুমারীতে সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেছেন, ‘‘শরিকদের সঙ্গে প্রক্রিয়াগত কিছু সমস্যা চলছে। সব ঠিক হয়ে যাবে।’’ বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি এল মুরুগানের কথায়, ‘তামিলনাড়ুর ভোটে শেষ পর্যন্ত কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, তা দিল্লিতে দলীয় নেতৃত্ব স্থির করবেন।’’
আরও পড়ুন: আইনের কপি পুড়িয়ে ‘লোহরি’ অনড় চাষিদের
আরও পড়ুন: বায়ুসেনার জন্য দেশীয় যুদ্ধবিমান তেজস কিনতে বরাদ্দ ৪৮ হাজার কোটি
এরই মধ্যে জেডিইউ-এর সঙ্গে বিজেপির সংঘাত প্রকাশ্যে এসেছে। বিজেপির সাংসদের বক্তব্য কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয় বলেই মনে করছে রাজনৈতিক শিবির। সম্প্রতি একটি বেসরকারি বিমান সংস্থার পটনা বিমানবন্দরের ম্যানেজারকে এক বাইকআরোহী গুলি করে হত্যা করে। এর পর সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর দিকে আঙুল তুলেছেন বিজেপি সাংসদ। তাঁর কথায়, ‘‘সরকার আমাদের সমর্থনে চলছে। কিন্তু বিহারের উন্নতির জন্য মুখ খোলা উচিত বলে মনে করি। এই রাজ্যে আইনশৃঙ্খলার অবনতি হয়েছে, সঙ্গে চূড়ান্ত দুর্নীতি। কোনও নিয়ন্ত্রণই নেই।’’ তাঁর কথায়, ‘‘ভেবেছিলাম, নীতীশ যখন চতুর্থ বার মুখ্যমন্ত্রী হচ্ছেন, তিনি রাজনীতির ঊর্ধ্বে গিয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটানোর চেষ্টা করবেন। কিন্তু পরিস্থিতির উপর তাঁর নিয়ন্ত্রণ দেখা যাচ্ছে না।’’