Congress

প্রার্থী বাছাইয়েও প্রবীণ, নবীন দ্বন্দ্ব

সংসদ চত্বরে করোনাভাইরাসের বিপদ আর শেয়ার বাজারের ধস নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করতে এসেছিলেন রাহুল

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৩ মার্চ ২০২০ ০৪:৩৩
Share:

সনিয়া গাঁধী। ছবি: পিটিআই।

জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া বিজেপিতে যাওয়ার পরেই কংগ্রেসে নবীন বনাম প্রবীণের দ্বন্দ্ব চরমে উঠেছে। কংগ্রেসের রাজ্যসভার প্রার্থী বাছাইয়েও তার প্রভাব পড়ল স্পষ্ট। এরই মধ্যে আজ এক মন্তব্যে বিতর্ক আরও উস্কে দিলেন খোদ রাহুল গাঁধী।

Advertisement

সংসদ চত্বরে করোনাভাইরাসের বিপদ আর শেয়ার বাজারের ধস নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করতে এসেছিলেন রাহুল। তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, যে নেতাদের তাঁর ‘টিম’ বলে মনে করা হত, তাঁরা কেন রাজ্যসভার প্রার্থী হতে পারছেন না? কেনই বা নিজের টিমের নেতাদের (সিন্ধিয়ার মতো) দল ছাড়তে হচ্ছে? করোনাভাইরাসের প্রকোপের ফলে নরেন্দ্র মোদী সরকারের সুর ধরে বিজেপি রাহুলকে বিদেশ না যাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছে, কী বলবেন? শেষের প্রশ্নের উত্তরে রাহুল শুধু বলেন, ‘‘ওকে।’’ আর রাজ্যসভার প্রশ্নে তাঁর জবাব, ‘‘আমি কংগ্রেস সভাপতি নই। আমি রাজ্যসভার সিদ্ধান্ত নিচ্ছি না। আমার টিমে কে আছেন, কে নেই, সেটা বড় কথা নয়।’’

সকালে কংগ্রেসের প্রধান মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা প্রকাশ্যেই বলেন, ‘‘রাজ্যসভায় অনেকে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করতেই পারেন। কিন্তু এ ব্যাপারে রাহুল গাঁধী-প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরার সিদ্ধান্ত মেনে নিতে হবে।’’ রণদীপ নিজেই রাহুল শিবিরের নেতা। হরিয়ানা থেকে তিনিও প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু হরিয়ানায় তাঁর প্রতিপক্ষ কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা ভূপেন্দ্র সিংহ হুডা সনিয়াকে সাফ জানিয়ে দেন, রণদীপকে যেন দেশের কোনও রাজ্য থেকেই প্রার্থী করা না হয়। হরিয়ানার আর এক নেত্রী শৈলজা রাজ্যে দলের পদ পাওয়ায় তাঁকেও দেওয়ার দরকার নেই। বরং দেওয়া হোক তাঁর ছেলে দীপেন্দ্র হুডাকে।

Advertisement

রাতে কংগ্রেস যে তালিকা প্রকাশ করল, তাতে ভূপেন্দ্রর কথা মেনে দীপেন্দ্রকেই প্রার্থী করা হল। অর্থাৎ, বাজি মারলেন প্রবীণ নেতাই। কারণ, হরিয়ানায় সিংহভাগ কংগ্রেস বিধায়ক তাঁর সঙ্গেই। ঠিক যেমন মধ্যপ্রদেশে তালিকা ঘোষণার আগেই কাল রাতে আর এক প্রবীণ নেতা দিগ্বিজয় সিংহকে জানিয়ে দেওয়া হয়, তিনিই প্রার্থী। সিন্ধিয়ার আগে দিগ্বিজয়ই নিজের অনুগামীদের ভিন রাজ্যে পাঠিয়ে রাজ্যসভার টিকিট সুনিশ্চিত করতে চাপ দিচ্ছিলেন সনিয়া-রাহুলকে। কিন্তু রণদীপকে পাশে নিয়ে রাহুল আজ কী বলতে চাইলেন? কংগ্রেসের অনেকের মনে প্রশ্ন, রাহুল কি বোঝাতে চাইলেন সনিয়ার সঙ্গে তাঁর মতান্তর আছে? না কি বোঝালেন, সনিয়া যে প্রবীণদের কথা শুনছেন, সেটি একেবারেই তাঁর না-পসন্দ?

যদিও রাহুলের ঘনিষ্ঠ সংগঠনের নেতা কে সি বেণুগোপাল রাজস্থান থেকে, রাজীব সাতব মহারাষ্ট্র, গুজরাত থেকে শক্তিসিন গাহিল প্রার্থী হয়েছেন। প্রিয়ঙ্কা শিবিরের রাজীব শুক্লও হতে চেয়েছিলেন গুজরাত থেকে। রাজ্য থেকে বাধা আসে। রাজীব বলেন, ‘‘সনিয়া গাঁধী আমাকে প্রার্থী হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। কিন্তু এখন সংগঠনে মন দিতে চাই।’’ কংগ্রেসের রাহুল-বিরোধী শিবিরের মত, রাহুল মুখে সিন্ধিয়া সম্পর্কে নরম মনোভাব দেখাচ্ছেন। আসলে দিগ্বিজয়কে দিয়ে সিন্ধিয়াকে বার করে দিলেন রাহুল।

বিজেপিও আজ বাকি পাঁচ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করে। মধ্যপ্রদেশে দ্বিতীয় আসনেও প্রার্থী দিচ্ছে। কংগ্রেসও দেওয়াতে লড়াই হবে। হিমাচল থেকে নরেন্দ্র মোদী ঘনিষ্ঠ ইন্দু গোস্বামীও প্রার্থী। কংগ্রেস ছেড়ে শিবসেনায় যাওয়া প্রিয়ঙ্কা চতুর্বেদীকে প্রার্থী করেছেন উদ্ধব ঠাকরে। আর সনিয়ার সঙ্গে আলোচনার পরে বিহারে দুটি আসনেই আরজেডি-র প্রার্থী দিয়েছেন তেজস্বী যাদব। রঘুবংশ প্রসাদকে বাদ দিয়ে আবার আসছেন প্রেমচন্দ্র গুপ্ত। বদলে বিধানসভা ভোটে কংগ্রেসকে বাড়তি আসন ছাড়বে আরজেডি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement