ভয়াবহ বিপর্যয় সিকিমে। —ফাইল চিত্র।
সিকিমে ভয়াবহ বিপর্যয়ে একাধিক সেতু, রাস্তা উড়ে গিয়েছিল। বন্ধ হয়ে পড়েছিল শিলিগুড়ি-সিকিমের রাস্তাও। তাতে সিকিমের একাধিক জায়গায় খাদ্যসামগ্রীর অভাবের অভিযোগ উঠেছে। চাল-ডাল, তেল থেকে বিভিন্ন আনাজ এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় অনেক সামগ্রীর জোগান দেয় শিলিগুড়ি। রাস্তা বন্ধ থাকায় গত ৪ অক্টোবর থেকেসেগুলি সিকিমে পর্যাপ্ত পৌঁছনো যাচ্ছে না বলে দাবি। শিলিগুড়ির ব্যবসায়ীদের দাবি, এর ফলে ব্যবসায় ভাটা পড়েছে অনেকটা। ক্ষতির পরিমাণ দিনে প্রায় ১০ কোটি ছাড়িয়েছে।
গত শুক্রবার থেকে ঘুরপথে শিলিগুড়ি সিকিম যাতায়াত শুরু হয়েছে। প্রশাসন জানাচ্ছে, সিকিম-শিলিগুড়ি রাস্তা স্বাভাবিক হয়নি। ঘুরপথে আপাতত ভারী গাড়ি যাতায়াত বন্ধ রয়েছে। পণ্যবাহী ছোট গাড়িতে কিছু সামগ্রী নিয়ে যাচ্ছেন কেউ কেউ। তা চাহিদার তুলনায় অনেকটাই কম বলে দাবি। ফলে সেখানে নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর চড়া দামের
অভিযোগও উঠেছে। যদিও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে থাকায় আশার
আলো দেখছেন সিকিম এবং শিলিগুড়ির ব্যবসায়ীরা।
শিলিগুড়ি নিয়ন্ত্রিত বাজারের সচিব তমাল দাসের বক্তব্য, ‘‘কয়েক দিনের জন্য ব্যবসায় মন্দা আনলেও স্বাভাবিকের পথে ফিরছে। রাস্তা খুললে পুরোদমে সমস্ত সামগ্রী শিলিগুড়ি থেকে পাহাড়ে উঠতে পারে।’’ নিয়ন্ত্রিত বাজার সূত্রের খবর, উত্তরবঙ্গের এই বৃহৎ পাইকারি বাজার থেকে সিকিমের বিভিন্ন এলাকায় প্রত্যেক দিন বিভিন্ন আনাজ, আদা, রসুন থেকে ফল, ছোট বড় ৩০-৪০টি গাড়িতে যেত। মাছ যেত ৩ টনের বেশি। শহরের খালপাড়া পাইকারি বাজার থেকে চাল-ডাল, তেল থেকে রোজকার বিভিন্ন সামগ্রী মিলে প্রায় প্রত্যেক দিন ৩ কোটিরও বেশি টাকার সামগ্রী সিকিমের বিভিন্ন এলাকায় যেত। বিপর্যয়ের দু’দিন তা একেবারেই প্রায় বন্ধ ছিল। ফলে পুজোর মুখে শিলিগুড়ির ব্যবসায় ভাটা পড়েছে বলে দাবি। ক্ষতির আশঙ্কা আনাজ, মাছ, ফলের মতো ব্যবসাতেও।
খালপাড়ার ব্যবসায়ীদের দাবি, সিকিমের পরিচিত অনেক ব্যবসায়ী যারা রোজ ফোন করে, নয়তো নিজে শিলিগুড়িতে গিয়ে মাল নিতেন, তাঁদের অনেকেই সে ভাবে যোগাযোগ করছেন না। কেউ ফোন করে কারও দোকান ভেসে যাওয়া, কেউ সর্বস্ব
খোয়ানোর কথা জানাচ্ছেন। ব্যবসায়ী শরৎ রাঠী বলেন, ‘‘যত দ্রুত সিকিমের রাস্তা ঠিক হবে ততই ব্যবসা বাড়বে। মানুষ স্বাভাবিক পথে ফিরবেন। সেখানকার ব্যবসায়ীরাও ক্ষতির মুখে পড়েছেন। সবটা নিয়ে আমাদেরও চিন্তা হচ্ছে।’’ রেগুলেটেড মার্কেটের আনাজ, ফল ব্যবসায়ী সংগঠনের সম্পাদক শিব কুমার বলেন, ‘‘বিপর্যয়ের দিনে সিকিমে আনাজপাতি পাঠানো যায়নি। সেখানকার অনেক ব্যবসায়ীর ফোন বন্ধ ছিল। আবার যাওয়া শুরু করেছে।’’