ছবি: সংগৃহীত।
ভূমিপুত্র কারা, এ নিয়েই অসমে এখন যত বিতর্ক। স্পষ্ট সংজ্ঞা নির্ধারণ না-করে সরকারও ঘোলা জলে মাছ ধরতে চাইছে। এনআরসিতে দেশি-বিদেশি স্পষ্ট হওয়ার কথা থাকলেও, তা সরকারি ভাবে এখনও মেনে নেওয়া হয়নি। তার আগেই শুরু হতে চলেছে অসমের ভূমিপুত্র মুসলিমদের লোকগণনা। তা-ও আবার বরাককে বাদ দিয়ে গণনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এতে বরাকের মুসলমানদের মধ্যে নতুন উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। তাঁদের প্রশ্ন, সরকার কি তবে ধরেই নিয়েছে, বরাকের মুসলমানরা সকলেই অনুপ্রবেশকারী!
এই আশঙ্কা নিয়ে বরাকের মুসলিম সমাজের এক প্রতিনিধি দল গুয়াহাটিতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে। কথা বলে সংখ্যালঘু উন্নয়ন মন্ত্রী রঞ্জিত দত্তের সঙ্গেও। নানা তত্ত্ব ও তথ্য দিয়ে তাঁরা বুঝিয়ে বলেন, বরাক উপত্যকার প্রায় সমস্ত মুসলমান এই অঞ্চলেরই প্রাচীন বাসিন্দা। স্মারকলিপিতে লাঠিগ্রাম মসজিদের একটি ছবি জুড়ে দেওয়া হয়। এতে উল্লেখ রয়েছে, এই মসজিদ ১৫৩৬ সালে নির্মিত। আরও উদাহরণ তুলে ধরেছেন তাঁরা। যেমন, বরাক উপত্যকার মুসলমানদের অধিকাংশের নামের শেষে চৌধুরী, বড়ভুঁইয়া, মাঝারভুইয়া, লস্কর ইত্যাদি লেখা হয়। এগুলো অন্য কোনও অঞ্চলে দেখা যায় না। কারণ ১৮১৩ থেকে ১৮৩০ সালের মধ্যে কাছাড়ি রাজা গোবিন্দচন্দ্র মুসলমানদের এই সব পদবি দিয়েছিলেন। তাঁরা ভিন্ন জায়গা থেকে এসেছেন বলে সন্দেহ করার কোনও যুক্তিই নেই। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে প্রতিনিধি দলটি তাই আবেদন জানিয়েছে, বরাকের ও বরাক থেকে অন্যত্র গিয়ে বসবাস করছেন এমন প্রত্যেক মুসলমানকে ভূমিপুত্র লোকগণনার আওতায় আনা হোক। তাঁদের জন্য অসম চুক্তির ৬ নং ধারার অধীনে সাংবিধানিক রক্ষাকবচেরও দাবি জানানো হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনাকালে বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার তথা বরাকের বিধায়ক আমিনুল হক লস্করও ছিলেন। তিনি জানান, বরাকের মুসলমানদেরও ভূমিপুত্র লোকগণনা হবে। সরকারের তরফে স্পষ্ট করে তা জানানো হয়নি।