লাদাখে বিক্ষোভ স্থানীয়দের। ছবি: এক্স (সাবেক টুইটার)।
আলাদা রাজ্যের দাবিতে জোরদার আন্দোলনে নামার ইঙ্গিত দিল লাদাখ। ২০১৯ সালের অগস্ট মাসে সাবেক জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্য থেকে লাদাখকে পৃথক করে সেটিকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মর্যাদা দেওয়া হয়। কিন্তু হিমালয়ের কোলে থাকা এই পার্বত্য অঞ্চলটির অধিবাসীদের অধিকাংশের দাবি, লাদাখকে আলাদা রাজ্যের স্বীকৃতি দিতে হবে। শুধু তা-ই নয়, আরও তিনটি দাবির পক্ষেও সুর চড়িয়েছেন তারা।
আলাদা রাজ্যের দাবি নিয়ে কেন্দ্রের উপর চাপ বৃদ্ধি করতে আগেই বন্ধের ডাক দিয়েছিল লাদাখ অ্যাপেক্স বডি (ল্যাব) এবং কার্গিল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স (কেডিএ)। লেহ-তে পূর্ণ হরতাল পালিত হয়। কার্গিলেও হরতাল ডাকে কেডিএ। এই দুই সংগঠনের ডাকা বন্ধে ভাল রকম সাড়া মেলে। শনিবার লাদাখের লেহ জেলায় প্রতিবাদ মিছিল বের করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। হাতে লেখা প্ল্যাকার্ডে মোট চারটি দাবির কথা জানান তারা। আলাদা রাজ্য ছাড়াও সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিলে লাদাখকে অন্তর্ভুক্ত করা, স্থানীয়দের জন্য সরকারি চাকরিতে আসন সংরক্ষণ করা এবং লেহ এবং কার্গিল— দু’টি লোকসভা কেন্দ্র গড়ার দাবি জানান স্থানীয়রা।
দীর্ঘ দিন ধরেই আলাদা লাদাখকে রাজ্যের মর্যাদা দেওয়ার দাবিতে আন্দোলন ল্যাব এবং কেডিএ নামের সংগঠন দু’টি গত ২৩ জানুয়ারি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে একটি স্মারকলিপি দেয়। সেখানে আলাদা রাজ্যের দাবি তোলার পাশাপাশি লাদাখকে ষষ্ঠ তফসিলে অন্তর্ভুক্ত করার আর্জি জানানো হয়। সূত্রের খবর, জম্মু ও কাশ্মীর পুনর্গঠন আইন, ২০১৯-এ সম্ভাব্য কী কী বদল আনা যেতে পারে, তার একটি খসড়াও কেন্দ্রকে পাঠানো হয়।
লাদাখবাসীর দাবি বিবেচনা করতে সম্প্রতি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাইয়ের নেতৃত্বে কমিটি গঠন করেছে কেন্দ্র। প্রথমে এই কমিটির গঠন নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। পরে ফের কমিটি গঠন করা হয়। বর্তমান কমিটিতে রয়েছেন লাদাখের সাংসদ জামিয়াং শেরিং নামগিয়েল, লেহ ও কার্গিলের পার্বত্য পরিষদের প্রধানেরা। কিন্তু গত বছরের ৪ ডিসেম্বরের পরে আর কমিটির বৈঠক হয়নি।
এরই মধ্যে ১৯ ফেব্রুয়ারি ফের লাদাখ সংক্রান্ত কমিটির বৈঠক হবে বলে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে কেন্দ্র। সূত্রের মতে, লোকসভা ভোটের জন্য আদর্শ আচরণবিধি বলবৎ হওয়ার আগে কয়েকটি দাবি বিবেচনা করতে পারে কেন্দ্র। যেমন নুবরা ও জাঙ্কসর এলাকার জন্য জেলার মর্যাদা, লাদাখের জমি, সংস্কৃতি ও পরিচয় রক্ষার জন্য রক্ষাকবচ, পাবলিক সার্ভিস কমিশন গঠন। কিন্তু রাজ্যের মর্যাদার দাবি বিবেচনা করার কোনও সম্ভাবনা নেই। পাশাপাশি ২০২৬ সাল পর্যন্ত নির্বাচনী কেন্দ্রের সীমা পুনর্বিন্যাসের কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। ফলে দু’টি লোকসভা কেন্দ্র গঠনের দাবিও এখন বিবেচনা করা সম্ভব নয়।