এম নাগেশ্বর রাও।— ফাইল চিত্র।
অলোক বর্মাকে সিবিআই ডিরেক্টরের পদ থেকে অপসারণ নিয়ে প্রশ্ন ছিলই। এ বার সিবিআইয়ের ভারপ্রাপ্ত ডিরেক্টর হিসেবে এম নাগেশ্বর রাওকে নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন উঠল। তা-ও একেবারে সুপ্রিম কোর্টে।
ভারপ্রাপ্ত ডিরেক্টর হিসেবে নাগেশ্বরকে নিয়োগের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থ মামলা ঠুকল অসরকারি সংগঠন ‘কমন কজ’। সংগঠনের আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণের অভিযোগ, দিল্লি স্পেশ্যাল পুলিশ এস্টাবলিশমেন্ট আইন ভেঙে, উচ্চ পর্যায়ের বাছাই কমিটির সুপারিশ ছাড়া রাওকে নিয়োগ করা হয়েছে। একই সঙ্গে তথ্যের অধিকারের আন্দোলনকারী অঞ্জলি ভরদ্বাজের অভিযোগ, সরকার সিবিআই ডিরেক্টর নিয়োগ পদে স্বচ্ছতা রাখছে না।
প্রধানমন্ত্রী, প্রধান বিচারপতি ও লোকসভার বিরোধী দলনেতাকে নিয়ে তৈরি বাছাই কমিটি সিবিআই ডিরেক্টরের জন্য সরকারের কাছে নাম সুপারিশ করে। গত ১০ জানুয়ারি সেই কমিটির বৈঠকে সিবিআই ডিরেক্টরের পদ থেকে বর্মাকে অপসারণের সিদ্ধান্ত হলেও, নতুন ডিরেক্টর নিয়োগের সিদ্ধান্ত সেখানে হয়নি। রাওকে ভারপ্রাপ্ত ডিরেক্টর হিসেবে নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেয় মন্ত্রিসভার নিয়োগ কমিটি (যে কমিটিতে রয়েছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ)।
তবে বাছাই কমিটির সিদ্ধান্ত ঘিরে এমনিতেই বিতর্ক তুঙ্গে। কমিটিতে প্রধান বিচারপতির প্রতিনিধি হিসেবে যোগ দিয়ে বিচারপতি এ কে সিক্রি প্রশ্নের মুখে পড়েছেন। কমিটিতে বিচারপতি সিক্রি প্রধানমন্ত্রীকে সমর্থন করে বর্মাকে সরানোর পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন। তার পরে জানা যায়, তাঁকে মোদী সরকার আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে মনোনীত করছে। বিতর্কের মুখে তিনি ওই পদ নিতে অস্বীকার করেছেন।
সরকারি সূত্রের যুক্তি, সিক্রিকে আগেই মনোনীত করা হয়েছিল। প্রবীণ আইনজীবী বিশ্বজিৎ দেবের প্রশ্ন, ‘‘বিচারপতি সিক্রি তাঁকে সরকার আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে মনোনীত করছে জেনেও কেন তিনি ওই বৈঠকে যোগ দিলেন?’’
বিচারপতি সিক্রিকে এ দিন এক অনুষ্ঠানের পর এই বিতর্ক নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল। তিনি শুধু বলেন, ‘‘এই বিতর্ক টেনে নিয়ে যাওয়া হোক, আমি তাই না। বিতর্কের অবসান হোক।’’
তবে এই পরিস্থিতিতে বাছাই কমিটির সিদ্ধান্ত নিয়েই কংগ্রেস প্রশ্ন তুলেছে। সিপিএমও দাবি তুলেছে, কেন্দ্রীয় ভিজিল্যান্স কমিশনার কে ভি চৌদারির রিপোর্টকে হাতিয়ার করে বর্মাকে সরানো হয়েছে। তাঁকে বরখাস্ত করা হোক।
যাবতীয় বিতর্কের মধ্যে সিবিআইয়ে রদবদল কিন্তু অব্যাহত। আজও চার জন ডিআইজি-কে বদলি করা হয়েছে।