বাংলাদেশ অনুমতি দেয়নি। কিন্তু পাকিস্তানের রণতরীকে আশ্রয় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল শ্রীলঙ্কা। চিনের প্রযুক্তিগত সহায়তায় নির্মিত পাকিস্তানের যুদ্ধজাহাজ পিএনএস তৈমুর সাংহাই বন্দর থেকে পাকিস্তান অভিমুখে যাত্রা শুরু করেছে। সব ঠিক ভাবে চললে চলতি মাসেই জাহাজটিকে পাকিস্তানি নৌবাহিনীর সঙ্গে যুক্ত করা হবে। জাহাজটির পোতাশ্রয় হিসাবে প্রথমে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বন্দরকে বেছে নেওয়া হলেও এই বিষয়ে বাংলাদেশ প্রশাসনের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় অনুমতি মেলেনি। শেষমেশ পাকিস্তানি এই রণতরীকে আশ্রয় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় শ্রীলঙ্কা। চলতি মাসের ১২ থেকে ১৫ তারিখের মধ্যে কলম্বো বন্দরে ভিড়তে চলেছে এই যুদ্ধজাহাজ।
মালয়েশিয়ার লুমুট বন্দর থেকে বেরোনোর পর সাত থেকে ১০ অগস্টের মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরকে পোতাশ্রয় হিসাবে ব্যবহার করতে চেয়েছিল তৈমুর। কিন্তু গোটা অগস্ট মাসকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের মৃত্যুমাস হিসাবে স্মরণ করে থাকে বাংলাদেশ। অগস্ট মাসকে বাংলাদেশ সরকার ‘শোকের মাস’ বলেও অভিহিত করে থাকে। এই কারণ দেখিয়েই পাকিস্তানি রণতরীকে আশ্রয় দিতে চায়নি বাংলাদেশের হাসিনা প্রশাসন।
এই ব্যাপারে কূটনীতির জটিল মারপ্যাঁচও দেখছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সুসম্পর্কের কথা সুবিদিত। সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই ভারত সফরে আসতে চলেছেন শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর এই সফরেই দুই দেশের যৌথ উদ্যোগে নির্মিত বাংলাদেশের ১৩২০ মেগাওয়াটের মৈত্রী তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের উদ্বোধন হবে। ‘মৈত্রী’র এই আবহে পাকিস্তানি রণতরীকে আশ্রয় দিয়ে ভারতের ক্ষোভের কারণ হতে চাইছে না বাংলাদেশ। তা ছাড়া হাসিনা বহুবার প্রকাশ্যে এবং ঘনিষ্ঠমহলে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তাঁর ক্ষোভের কথা জানিয়েছেন। বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করার জন্য এবং হাসিনাকেও প্রাণে মারার চেষ্টা করার জন্য আওয়ামি লিগ পাকিস্তানের অদৃশ্য হাতই দেখেছে।
তৈমুর গভীর সমুদ্রে লড়াই করতে পারা এক বিশেষ ধরনের যুদ্ধজাহাজ। চিনের সাহায্যে নির্মিত পিএমএনএস তুঘরিলও পাকিস্তানি নৌবাহিনীর অংশ হতে চলেছে। গভীর সমুদ্রে ভারতীয় নৌবাহিনীকে প্রতিহত করার জন্য চিন পাকিস্তানের জন্য ডিজেল-চালিত সাবমেরিনও তৈরি করছে। ২০২৮ সালে চিনের এগুলি পাকিস্তানের হাতে তুলে দেওয়ার কথা।