—ফাইল চিত্র।
যোগী আদিত্যনাথের নিজের গড় গোরক্ষপুরের বিজেপি সাংসদ রবি কিষেণ রামের ভাই ভরতের চরিত্রে। আর এক ভোজপুরি অভিনেতা মনোজ তিওয়ার অঙ্গদের চরিত্রে। রামানন্দ সাগরের ‘রামায়ণ’-এ হনুমানের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন দারা সিংহ। তাঁর ছেলে বিন্দু দারা সিংহ হনুমান সেজে অযোধ্যার মঞ্চ দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। অহিরাবণের চরিত্রে রাজা মুরাদ, রাবণের চরিত্রে শাহবাজ খান আর নারদের চরিত্রে আসরানি।
সরযূর ঘাটে বলিউড ও বিজেপি মিলেমিশে একাকার। দীপাবলির সময় অযোধ্যায় সরযূর ঘাটে দীপোৎসব চালু করেছিলেন আদিত্যনাথ। লক্ষ্য ছিল অযোধ্যায় দেশবিদেশের পর্যটকদের টেনে নিয়ে আসা। তখনও রামমন্দিরের শিলান্যাস হয়নি। এ বার শিলান্যাসের পরে উত্তরপ্রদেশ সরকার ‘অযোধ্যা কি রামলীলা’-র আয়োজন করেছে। কোভিডের জন্য এ বার সামনে বসে দেখার উপায় নেই। তাই নবরাত্রি জুড়ে দূরদর্শনেই অযোধ্যা থেকে রামলীলার সম্প্রচার শুরু হয়েছে।
বিরোধীরা বেশ বুঝতে পারছেন, যোগীর লক্ষ্য হল, রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে হাজারো অভিযোগ থেকে নজর সরিয়ে ২০২২-এর বিধানসভা ভোট পর্যন্ত শুধু রামনাম জপে যাওয়া। তা সে অযোধ্যায় মন্দির নির্মাণই হোক বা রামলীলার আয়োজন। কিন্তু তা নিয়ে মুখ খুললেও বিরোধীদেরই বিপদ। কারণ তখন পাল্টা প্রচারে নামবে বিজেপি।
আরও পড়ুন: ত্রাতা আদালত, অতিমারির মহাবিপর্যয় থেকে রেহাই কলকাতা ও বাংলার
রামমন্দিরের কাজ শুরু হয়েছিল নরেন্দ্র মোদীর হাতে ভূমিপুজোর মাধ্যমে। সরযূর তীরে লক্ষ্মণ কেল্লা মন্দিরেও একই ভাবে ভূমিপুজো করেই লম্বায় ৯০ ফুট, চওড়ায় ২৫ ফুটের মঞ্চ তৈরি হয়েছে। নবরাত্রি জুড়ে রামলীলায় খরচ প্রায় ৪ কোটি টাকা। যোগী সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রী নীলকান্ত তিওয়ারি রাজ্য সরকারের তরফে দায়িত্বে রয়েছেন। মূল পৃষ্ঠপোষক দিল্লির সাংসদ প্রবেশ বর্মা। দিল্লির ভোটের আগে যাঁর মন্তব্য ঘিরে বিতর্ক বেধেছিল। প্রবেশ নিজে শিল্পীদের সঙ্গে গিয়ে ভূমিপুজোয় যোগ দিয়েছেন। হনুমানগঢ়ীর মোহন্ত রাজু দাসের থেকে আশীর্বাদও নিয়েছেন। যোগী নিজেও রামলীলা দেখতে যাবেন বলে ঠিক হয়েছে।
আরও পড়ুন: ভাইরাস আরও দু’বছর! নয়া ভ্যাকসিন পরীক্ষার উদ্যোগ
অযোধ্যার রামলীলার উদ্যোক্তারা জানাচ্ছেন, রামের চরিত্রাভিনেতা সোনু দাগারের জন্য নেপালের জনকপুর থেকে পোশাক এসেছে। কারণ জনকপুর রাজা জনকের রাজ্য ছিল বলে মানুষের বিশ্বাস। রাবণের কিছু পোশাক শ্রীলঙ্কা থেকে নিয়ে আসা হয়েছে। রামের ধনুক নিয়ে আসা হয়েছে হরিয়ানার কুরুক্ষেত্র থেকে। প্রবেশ বর্মা জানান, রাম যে ১৪টি স্থানে পা রেখেছিলেন বলে মানুষের বিশ্বাস, সেখান থেকে মাটি এনে রামের মূর্তি তৈরি হয়েছে। মোট ১৪টি ভাষায় সোশ্যাল মিডিয়ায় অযোধ্যার রামলীলা সম্প্রচার হবে।
সাংসদদের মধ্যে মনোজ তিওয়ারি আগেও দিল্লিতে রামলীলায় অভিনয় করেছেন। কখনও পরশুরাম, কখনও অঙ্গদের চরিত্রে। রবি কিষেণকেও দিল্লির রামলীলায় ভীষ্ম, দ্রোণের চরিত্রে দেখা গিয়েছে। যোগী সরকারের মন্ত্রীরা বলছেন, গোটা দেশের মানুষ প্রতি বছর অযোধ্যায় বসে রামলীলা দেখতে ছুটে আসুন, এটাই আমাদের লক্ষ্য।