Crime against Women

‘পোশাক ছেঁড়া, হাত ছিল বাঁধা’, ময়নাতদন্তের বিষতত্ত্ব মানতে নারাজ উন্নাওয়ের নিহত কিশোরীর মা

শুধু বিষ দিয়ে মেয়েদের খুন করা হয়েছে, এই সহজ তত্ত্ব মানতে পারছে না নিহত কিশোরীদের পরিবার।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

আসোহা শেষ আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ২৩:২৫
Share:

প্রতীকী ছবি।

উন্নাওয়ের মৃত কিশোরীদের হাত, গলা ওড়না দিয়ে বাঁধা ছিল। জামা কাপড় ছিল অবিন্যস্ত, জায়গায় জায়গায় ছেঁড়া। তাই শুধু বিষ দিয়ে মেয়েদের খুন করা হয়েছে, এই সহজ তত্ত্ব মানতে পারছে না নিহত কিশোরীদের পরিবার। তাঁরা নিশ্চিত, তিন জনের সঙ্গেই খুব খারাপ কিছু হয়েছে। তবে সেটা কতটা খারাপ, তা এখনও তাঁদের অজনা।

Advertisement

শুক্রবার সকালেই উন্নাওয়ের আসোহা গ্রামে নিহত কিশোরীদের দেহ কড়া পুলিশি নিরাপত্তায় প্রশাসনের তরফে সৎকার করে দেওয়া হয়। তার আগে বৃহস্পতিবার ময়নাতদন্ত হয় দুই কিশোরীর দেহের। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট বলেছে, দুই কিশোরীর দেহে কোনওরকম আঘাতের চিহ্ন ছিল না। তবে তাদের যে বিষ খাওয়ানো হয়েছিল, তার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। আর এই রিপোর্টের সঙ্গেই একমত হতে পারছেন না দুই কিশোরীর পরিবার।

নিহত এক কিশোরীর মা জানিয়েছেন, চাষের ক্ষেতে তিনিই উদ্ধার করেন তিনজনকে, তখন তাদের হাত পিছন দিক থেকে ওড়না দিয়ে বাঁধা ছিল। গলাতেও ছিল ওড়নার ফাঁস। একজনের পোশাক ছিল ছেঁড়া, বাকি দু’জনের অবিন্যস্ত। তাঁর কথায়, "আমি নিজে ওদের হাতে গলায় বাঁধা ওড়না খুলেছিলাম। আমি তো জানি। ওদের যেভাবে বাঁধা হয়েছিল তাতে মনে হচ্ছে ওদের সঙ্গে খুব খারাপ কিছু হয়েছে।" যদিও এই খারাপ কিছুটা কতটা খারাপ বলে তাঁরা আশঙ্কা করছেন, তা বলতে চাননি নিহত কিশোরীর মা।

Advertisement
আরও পড়ুন:

যে দুই কিশোরীর বিষ প্রয়োগে মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট, তাদের একজনের বয়স ১৩ বছর। অন্যজনের বয়স ১৬। প্রাথমিক তদন্তে মৃত্যুর কারণ বিষপ্রয়োগ বলে জানালেও তদন্তকারীরা বলেছেন, তাঁরা পরবর্তী তদন্তের জন্য দু’জনেরই ভিসেরা সংরক্ষণ করেছেন। তৃতীয় কিশোরী, যে এই তিনজনের মধ্যে বয়সে সবচেয়ে বড়, এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ১৭ বছরের ওই কিশোরী সঙ্কটজনক হলেও স্থিতিশীল বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। তবে তাকে আরও ভাল চিকিৎসার জন্য কেন দিল্লির এইমসে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে না, কেনই বা তাকে দ্রুত সুস্থ করে তোলার ব্যবস্থা করে তার থেকে ঘটনার বিবরণ জানতে চাওয়া হচ্ছে না, তা নিয়ে বিরোধীদের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে উত্তরপ্রদেশ প্রশাসনকে। প্রশ্ন উঠেছে তবে কি কিছু চাপা দেওয়ার চেষ্টা চলছে?

প্রশাসনের তরফে বৃহস্পতিবার রাতেই সৎকারের চেষ্টা হয়েছিল দুই কিশোরীকে। শুরু হয়েছিল মাটি কাটার যন্ত্র দিয়ে কবর খোঁড়ার পর্বও। কিন্তু পরিবার এবং স্থানীয় বাসিন্দারা প্রশাসনকে বাধা দেন। মাটি কাটার যন্ত্রের সামনে কার্যত শুয়ে পড়ে দুই কিশোরীর সৎকারের প্রক্রিয়া আটকান তাঁরা। প্রশাসনকে মৃত কিশোরীর পরিবার জানায়, সূর্যাস্তের পর সৎকার তাঁদের রেওয়াজের বিরোধী। এরপর সৎকার পর্ব থামলেও, শুক্রবার সকালেই তড়িঘড়ি বাকি থাকা কাজ শেষ করে প্রশাসন। কড়া পুলিশি ঘেরাটোপে মুড়ে ফেলা হয় গোটা গ্রাম। সৎকার করার ব্যাপারে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ প্রশাসনের এই তাড়াহুড়োর কারণ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা।

তিন কিশোরীর পরিবার জানিয়েছে, ১৭ বছরের কিশোরী দশম শ্রেণির ছাত্রী। যে দু’জন মারা গিয়েছে, তারা সম্পর্কে পিসি-ভাইঝি। সবসময় একসঙ্গেই থাকত এই তিনজন। তিনজনেই স্কুলে পড়ত, পড়াশোনাতেও ভালো ছিল। বুধবার যেখানে তাদের অচেতন দেহ পাওয়া যায়, সেখান থেকে ৫০ মিটার দূরেই ছিল তাদের তিনজনেরই বাড়ি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement