অলঙ্করণ: শৌভিক দেবনাথ
রাফাল নিয়ে রাহুল গাঁধী-নির্মলা সীতারামনের ‘টুইট-যুদ্ধ’ এবার সংসদের অন্দরে। কংগ্রেস সাংসদের তোলা অভিযোগের জবাব দিলেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী। কিন্তু নির্মলা সীতারমনের রিপোর্ট উল্লেখ করে রাহুল আবারও বললেন, সংসদে মিথ্যে তথ্যই দিয়েছেন নির্মলা। তুলে এনেছেন আরও এক নয়া অভিযোগ। যাতে কংগ্রেস সভাপতি বলতে চেয়েছেন, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাকে গুরুত্বহীন করে অনিল অম্বানীর সংস্থাকে সুবিধা করে দিতে চাইছে মোদী সরকার।
রাফাল বিতর্কে রাহুল প্রশ্ন তুলেছিলেন, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা হ্যালের সঙ্গে রাফাল যুদ্ধবিমান কেনার চুক্তি হলেও তা বাতিল করে কেন অনিল অম্বানীর সংস্থাকে দেওয়া হল। শুক্রবার লোকসভায় প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর জবাব ছিল, হ্যালকে এক লক্ষ কোটি টাকার বরাত দেওয়া হয়েছে। কিন্তু রবিবার রাহুল দাবি করেন, প্রতিরক্ষা মন্ত্রী সংসদে মিথ্যে তথ্য দিয়েছেন। কাগজে কলমে হলেও প্রকৃতপক্ষে এক টাকারও বরাত পায়নি হ্যাল। বরাত না পেয়ে সংস্থা তাদের কর্মীদের মাইনে দিতে পারছে না। এখন কর্মীদের মাইনে দেওয়ার জন্য বাজার থেকে ধার নেওয়ার কথা ভাবছে।
সোমবার রাহুলের এই প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে নির্মলা তথ্য দিয়ে বোঝান, ‘‘২০১৪ থেকে ২০১৮ এই চার বছরে রাফালের সঙ্গে ২৬,৫৭০ কোটি টাকার চুক্তি ইতিমধ্যেই সই হয়ে গিয়েছে। ৭৩ হাজার কোটি টাকার চুক্তি পাইপলাইনে রয়েছে। এতেই প্রমাণ হয়, আমার বিবৃতি মিথ্যে নয়। এবং হ্যাল সম্পর্কে আমার মন্তব্য নিয়ে যে সন্দেহ প্রকাশ করা হয়েছে, তা মিথ্যা।’’
আরও পড়ুন: উচ্চবর্ণের আর্থিক দুর্বলদের জন্য ১০ শতাংশ সংরক্ষণ! ভোটের মুখে কল্পতরু মোদী সরকার
কিন্তু রাহুল প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর এই বক্তব্য উড়িয়ে এ দিন ফের বলেছেন, ‘‘উনি পরিষ্কার মিথ্যে কথা বলছেন। ৭৩ হাজার কোটির যে বরাতের কথা উনি বলেছেন, সেই তথ্য টেকনিক্যাল ইভ্যালুয়েশন কমিটির। কিন্তু ওই কমিটির তথ্য মানে টাকা দেওয়া নয়, বা চূড়ান্ত বরাত নয়।’’
কিন্তু রাফাল বিতর্কে সোমবার এর চেয়েও বড় অস্ত্র বের করেছেন রাহুল। জানিয়েছেন, রাফালের বরাত পাওয়া বিদেশি সংস্থা দাসোঁ এভিয়েশন এখনও একটি যুদ্ধবিমানও ভারতকে দেয়নি। তার আগেই ওই সংস্থাকে ২০ হাজার কোটি টাকা অগ্রিম দিয়ে দেওয়া হয়েছে। অথচ হ্যাল ১৫,৭০০ কোটি টাকার বরাত সরবরাহ করার পরও সেই টাকা বকেয়া পড়ে রয়েছে।’’
আরও পড়ুন: মুক্তি পেল নরেন্দ্র মোদীর বায়োপিকের প্রথম পোস্টার
এর পাশাপাশি রাহুল এ দিন ফের বলেন, ১৫ মিনিটের বিতর্কে বসলেই তিনি প্রমাণ করে দেবেন, ‘চৌকিদারই চোর’। কেন ১২৬টির বদলে ৩৬টি রাফালের বরাত দেওয়া হল, চুক্তিতে প্রধানমন্ত্রী মোদী প্রভাব খাটিয়েছিলেন কি না, যুদ্ধবিমানের সংখ্যা কমিয়ে দেওয়ার পর বায়ুসেনার পক্ষ থেকে কোনও আপত্তি করা হয়েছিল কি না, সেই সব পুরনো প্রশ্নগুলিও এ দিন ফের স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন রাহুল গাঁধী।
(ভারতের রাজনীতি, ভারতের অর্থনীতি- সব গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে আমাদের দেশ বিভাগে ক্লিক করুন।)