নাগরিক পঞ্জি ভবিষ্যতের ভিত্তি, বক্তব্য প্রধান বিচারপতির

প্রধান বিচারপতি গগৈয়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চের নির্দেশে এবং তদারকিতে এনআরসির কাজ হয়েছে। তার চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশিত হয়েছিল গত ৩১ অগস্ট। বাদ পড়ে ১৯,০৬,৬৫৭ জন।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০১৯ ০১:৩১
Share:

ছবি: পিটিআই।

আদালতের বাইরে এই প্রথম প্রকাশ্যে জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) নিয়ে মুখ খুললেন দেশের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ। নয়াদিল্লিতে একটি বই প্রকাশ অনুষ্ঠানে জোরালো ভাবে এনআরসির পক্ষে দাঁড়িয়ে তিনি বলেছেন, “জাতীয় নাগরিক পঞ্জি শুধু সংখ্যার বিষয় নয়, এটি ভবিষ্যতের জন্য এক দলিল।” তাঁর মতে, অসমে কত জন অবৈধ বসবাসকারী রয়েছেন, তা নিশ্চিত করতে এনআরসি ভবিষ্যতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এনআরসি নিয়ে সংবাদমাধ্যমের একাংশের ভূমিকার সমালোচনাও করেছেন প্রধান বিচারপতি।

Advertisement

প্রধান বিচারপতি গগৈয়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চের নির্দেশে এবং তদারকিতে এনআরসির কাজ হয়েছে। তার চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশিত হয়েছিল গত ৩১ অগস্ট। বাদ পড়ে ১৯,০৬,৬৫৭ জন। এনআরসি-র বিরুদ্ধে অসমে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠন প্রতিবাদ জানাচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়াতেও চলছে কটূক্তি। আজ ‘পোস্ট কলোনিয়াল অসম (১৯৪৭-২০১৯)’ নামে একটি বইয়ের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘এনআরসি-কে সঠিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার এটাই সঠিক সময়। জাতীয় নাগরিক পঞ্জি বর্তমানের কোনও নথি নয়। ১৯ লক্ষ বা ৪০ লক্ষ বাদ পড়াটাও কোনও বিষয় নয়। এটা আসলে ভবিষ্যতের দলিলের ভিত্তি।’’ এনআরসি প্রক্রিয়া যে সমালোচনার ঊর্ধ্বে নয়, তা মেনে নিয়েছেন প্রধান বিচারপতি। তিনি জানান, এনআরসি-র ধারণা নতুন নয়। ১৯৫১ সালেই এনআরসি হয়েছে। এ বার তা নবীকরণ করা হয়েছে মাত্র। সে ক্ষেত্রে ৪০ লক্ষ বা ১৯ লক্ষ সংখ্যাটি বড় কথা নয়। প্রধান বিচারপতির মতে, অসম বহু ভাষা, সংস্কৃতি ও জাতির মিলনস্থল। অসমবাসী ১৯৭১ সালের ভিত্তিবর্ষ মেনে নিয়ে অত্যন্ত বিচক্ষণতা ও পরিণত মনের পরিচয় দিয়েছেন। তিনি বলেন, “এর পরেও যাঁরা ভিত্তিবর্ষ নিয়ে অযথা আপত্তি তুলছেন, ঘরে বসে সোশ্যাল মিডিয়ায় দু’মুখো মন্তব্য করছেন, গুজব ছড়াচ্ছেন বা অসমের মিথ্যে ছবি তুলে ধরছেন— তাঁরা আগুন নিয়ে খেলছেন। বিদেশির সমস্যা অসমকে অনেক আঘাত দিয়েছে। আর আঘাত নেওয়ার অবস্থায় নেই অসম।’’

এনআরসি নিয়ে সংবাদমাধ্যমের একাংশের বিরুদ্ধে আজ ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ খবর প্রকাশের অভিযোগ করেছেন প্রধান বিচারপতি। তাঁর মতে, ওই ধরনের খবরের জেরে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। প্রধান বিচারপতি গগৈয়ের কথায়, ‘‘কিছু সংবাদপত্রের দায়িত্বজ্ঞানহীন সংবাদ পরিবেশনের ফলে পরিস্থিতি খারাপ হয়েছে।’’ তাঁর মতে, কত সংখ্যক অনুপ্রবেশকারী বাদ পড়ছেন, কেন এনআরসি করা হচ্ছে— এ সব নিশ্চিত করে তবেই খবর প্রকাশ করা উচিত ছিল।

Advertisement

আরও পড়ুন: সাড়ে পাঁচ বছরে ব্যবসা বেড়েছে ১৫০০০ শতাংশ! অমিত-পুত্র জয়ের বিরুদ্ধে তোপ কংগ্রেসের

দেশের উত্তর-পূর্বে এনআরসি-র প্রভাব কতটা পড়েছে তা খতিয়ে দেখতে একটি কমিটি গঠন করেছেন কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী। ওই কাজেই আজ ইম্ফলে গিয়েছেন কংগ্রেস নেতা মুকুল ওয়াসনিক, জয়রাম রমেশ, রণজিৎ মুখোপাধ্যায়েরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement