লখনউয়ের সে দিন। - ফাইল ছবি।
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভকারীদের উপর গুলি চালানো হয়েছিল। আর তাতে মৃত্যুও হয়েছে। এই প্রথম তা স্বীকার করল উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। বিজনৌরের পুলিশ সুপারের হিসেবে, শুধু ওই জেলাতেই গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে দু’জনের। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন আইএএস পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত হচ্ছিলেন এমন এক ছাত্রও। এর আগে রাজ্য পুলিশের ডিজি ও পি সিংহ সংবাদমাধ্যমকে বলেছিলেন, ‘‘আমরা বিক্ষোভকারীদের উপর একটা গুলিও চালাইনি।’’
নতুন আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে এখনও পর্যন্ত উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন জেলায় ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের বেশির ভাগেরই দেহ মিলেছে বুলেটবিদ্ধ অবস্থায়। ও দিকে, রাজ্য পুলিশের ডিজি ও পি সিংহ এক সাংবাদিক সম্মেলনে জানিয়েছেন, লখনউয়ে বৃহস্পতিবারের হিংসার ঘটনার পিছনে ছিল ‘পপুলার ফ্রন্ট অফ ইন্ডিয়া (পিএফআই)’ নামে একটি মুসলিম সংগঠন। দিল্লিতে তাদের কেন্দ্রীয় দফতর। আর কেরলে তাদের জনভিত্তি যথেষ্টই। ওই সংগঠনের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বিজনৌরের পুলিশ সুপার সঞ্জীব ত্যাগী মঙ্গলবার বলেছেন, ‘‘গত শুক্রবার বিজনৌরে বিক্ষোভকারীরা পুলিশের বন্দুক লুঠের চেষ্টা করে। সেই বন্দুক কুড়িয়ে আনতে গেলে এক কনস্টেবলকে লক্ষ্য করে গুলি চালান বিক্ষোভকারীরা। অল্পের জন্য বেঁচে যান পুলিশকর্মী। এর পর পুলিশ পাল্টা গুলি চালায়। তাতে সুলেমান নামে ২০ বছরের এক তরুণের মৃত্যু হয়েছে। আনিস নামে আরও এক জনের মৃত্যু হয়েছে, তবে সেটা বিক্ষোভকারীদের গুলিতে।’’
পুলিশের গুলিতে নিহত সুলেমান। ছবি- টুইটারের সৌজন্যে।
সুলেমানের পরিবার জানিয়েছে, তিনি আইএএস পরীক্ষার জন্য তৈরি হচ্ছিলেন। যদিও এর আগে বিক্ষোভকারীদের উপর গুলি চালানোর কথা স্বীকার করেনি উত্তরপ্রদেশ পুলিশ।
সুলেমানের ভাই শোয়েব মালিকের কথায়, ‘‘আমার ভাই নমাজ পড়তে গিয়েছিল। নমাজ পড়ে খাওয়ার জন্য ও বাড়িতে ফিরছিল। কয়েক দিন ধরে জ্বরে কাবু হয়ে ছিল আমার ভাই। ও মসজিদ থেকে বেরিয়েই দেখে সামনে পুলিশ লাঠি চালাচ্ছে। কাঁদানে গ্যাস ছুড়ছে। পুলিশ ওকে তুলে নিয়ে গিয়ে গুলি করে।’’
রবিবার বিজনৌরে সুলেমান ও আনিসের বাড়িতে গিয়ে তাঁদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গাঁধী।