ছড়িয়েছিটিয়ে ছবি, স্মারক। প্রয়াত রামবিলাস পাসোয়ানের বাংলোর বাইরে। দিল্লিতে রবিবার। ছবি— পিটিআই।
দিল্লির ১২ জনপথের বাংলোটি খালি করানোর পদ্ধতিতে তিনি অপমানিত, দুঃখিত— এমনটাই জানালেন লোক জনশক্তি পার্টি (এলজেপি)-র সাংসদ তথা রামবিলাস পাসোয়ানের পুত্র চিরাগ। বাংলো ছেড়ে দেওয়ার পরেও এই নিয়ে একরাশ ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন চিরাগ। তিনি জানিয়েছেন, যে ভাবে তাঁকে বাংলো খালি করতে বাধ্য করা হয়েছে, সেই ঘটনায় তিনি যারপরনাই ব্যথিত। তাঁর কথায়, ‘‘কখনওই বলিনি সারা জীবন বাংলোর দখল রেখে দেবো। আমার পরিবার আইনকে সম্মান করে। আমরা বাংলো খালি করতে প্রস্তুত। কিন্তু এ ভাবে কেন আমাদের অপমানিত করা হল? বিহারের মানুষ সমস্তটাই দেখছেন।’’
গোটা ঘটনার জন্য বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার এবং রাষ্ট্রীয় লোক জনশক্তি পার্টির সভাপতি পশুপতি কুমার পারসকে দায়ী করেছেন চিরাগ। তাঁকে হেনস্থা করতেই সরকারি প্রভাব খাটিয়ে বাংলোছাড়া করতে বাধ্য করা হয়েছে বলে অভিযোগ চিরাগের। তাঁর দাবি, গত ২৯ মার্চ তাঁকে জানানো হয় এক দিনের মধ্যেই বাংলো ছাড়ার নোটিস দেওয়া হতে পারে। তিন ঘণ্টায় বাংলো ছেড়ে দিয়েছেন বলেও দাবি তাঁর। এর পাশাপাশি চিরাগের অভিযোগ, দিল্লি পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে আধিকারিকেরা তাঁদের কার্যত উচ্ছেদ করেন। রামবিলাসের ছবি, স্মারক ছুড়ে ফেলা হয়েছে বলেও দাবি চিরাগের।
যদিও আধিকারিকেরা জানান, গত বছর ডিরেক্টরেট অব এস্টেটস বাংলো খালি করার নোটিস পাঠায় পাসোয়ান পরিবারের কাছে। এর পরে বহু বার নোটিস পাঠানো হলেও বাংলোর দখল ছাড়েননি চিরাগরা।
মাসখানেক আগে ফের চিরাগকে ১২ জনপথের বাংলোটি খালি করার নোটিস দেওয়া হয়েছিল। তার জেরেই ৩০ মার্চ বাংলোটি ছেড়ে দিয়েছেন চিরাগরা। বাংলো খালি করার নোটিসের বিরুদ্ধে দিল্লি হাই কোর্টে আবেদন জানানো হয়েছিল। গত বৃহস্পতিবার সেই আর্জি খারিজ করেছে আদালত।
এই ঘটনায় চিরাগের পাশে দাঁড়িয়েছেন আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব। গত কাল কেন্দ্রীয় শাসক দল বিজেপির বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন লালু-পুত্র। তেজস্বী জানিয়েছেন, বিজেপি হনুমানের বাংলোয় আগুন ধরিয়েছে। তেজস্বীর কথায়, ‘‘রামবিলাস পাসোয়ান শেষ দিন পর্যন্ত হনুমানের মতো বিজেপির পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। সেই হনুমানেরই বাংলোয় আগুন ধরিয়ে দিল বিজেপি। বিজেপিকে সমর্থনের পরিবর্তে এমনই প্রাপ্তি ঘটে।’’
এলজেপি-র দলীয় ভাঙনের জন্যও বিজেপিকেই দায়ী করেছেন তেজস্বী। ১৯৯০ সালে প্রথম বার ১২ জনপথের বাংলোটিতে এলজেপি প্রতিষ্ঠাতা তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রামবিলাসের থাকার বন্দোবস্ত করা হয়। তার পর থেকে ওই বাংলোই ছিল দীর্ঘদিন ধরে রামবিলাসের আস্তানা। সেখানে নিয়মিত দলীয় বৈঠকও সারতেন তিনি। ২০২০ সালে রামবিলাসের প্রয়াণের পরেও ওই বাংলোটি ব্যবহার করতেন পরিবারের সদস্যেরা।
গত বছর অগস্টে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের জন্য ১২ জনপথের বাংলোটি বরাদ্দ করা হয়। চিরাগের জন্য ফ্ল্যাটের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আধিকারিকেরা।