প্রতীকী ছবি।
হামবানটোটা বন্দর ছেড়েছিল ২২ অগস্ট। এবার শ্রীলঙ্কার দক্ষিণ অভিমুখে এগিয়ে চলেছে চিনের উপগ্রহ এবং ক্ষেপণাস্ত্র নজরদার জাহাজ ইউয়ান ওয়াং ৫। এখনও পর্যন্ত পাওয়া তথ্যে জানা গিয়েছে, শ্রীলঙ্কার দক্ষিণতম বিন্দু দোন্দ্রা থেকে প্রায় ৪০০ নটিক্যাল মাইল (৭৪১ কিলোমিটার) দক্ষিণ-পূর্বে ভারত মহাসাগরের উপর অবস্থান করছে এই জাহাজ।
এখনও অবধি এটা স্পষ্ট নয় যে, চিনের এই সামরিক জাহাজটি চিনেই ফিরবে, না কি অন্য কোনও দিকে যাবে। তবে সূত্রের খবর, চিনের নজরদার এই জাহাজটির সাংহাইয়ের জিয়াংইন বন্দরে গিয়ে থামার কথা।
চিনের নজরদার এই জাহাজটি ১৬ অগস্ট শ্রীলঙ্কার হামবানটোটা বন্দরে পোত করে। অগস্টের শুরুতেই শ্রীলঙ্কার বন্দরটিকে পোতাশ্রয় হিসাবে ব্যবহার করার জন্য অনুমতি চাওয়া হয় চিনের তরফে। ১১ অগস্ট শ্রীলঙ্কা প্রশাসন জানায়, তারা চিনা জাহাজকে হামবানটোটা বন্দরে ঠাঁই দিচ্ছে না। এই নিয়ে একপ্রস্ত জলঘোলাও হয়। বিশেষজ্ঞদের একাংশ তখন বলেছিলেন, ভারতের চাপের মুখেই চিনা নজরদার জাহাজটিকে তাদের বন্দর ব্যবহার করার অনুমতি দিতে চাইছে না শ্রীলঙ্কা। পরে অবশ্য শ্রীলঙ্কার তরফে এই বিষয়ে অনুমতি দেওয়া হয়। ১৬ অগস্ট হামবানটোটা বন্দরে ঢোকে ইউয়ান ওয়াং ৫।
চিনের একটি সংস্থা হামবানটোটা বন্দরটিকে নিরানব্বই বছরের জন্য লিজে নিয়েছে। শ্রীলঙ্কার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষের আমলে চিনের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ ঋণ নেওয়া হয়েছে। চিনা ঋণের জালেই দ্বীপরাষ্ট্রটি অর্থনৈতিক ভাবে দেউলিয়া হয়ে গিয়েছে বলে মনে করেন সে দেশের বাসিন্দারাই।
ভারতের তরফে চিনের এই নজরদার জাহাজের বিষয়ে ঘরোয়া ভাবে ‘উদ্বেগ’ প্রকাশ করা হয়েছিল। ভারতের আশঙ্কা ছিল, চিন এই জাহাজের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন স্পর্শকাতর তথ্য, স্যাটেলাইটের অবস্থান ইত্যাদি জেনে যেতে পারে। চিন অবশ্য আশ্বস্ত করে জানিয়েছিল, তেমন কোনও উদ্দেশ্য তাদের নেই।
তবে আন্তর্জাতিক রাজনীতির যাঁরা নিবিড় পর্যবেক্ষক, তাঁদের একাংশ মনে করছেন চিনের এই নজরদার জাহাজ পাঠানোর পিছনেও একটি রাজনৈতিক বার্তা আছে। শ্রীলঙ্কার টালমাটাল অর্থনৈতিক-রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ভারত যে ভাবে পড়শি দেশটির দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে এবং সে দেশের প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমসিঙ্ঘেও ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার চেষ্টা করছেন, তাতে ‘চিন্তিত’ চিন শ্রীলঙ্কায় জাহাজ পাঠানোর মাধ্যমে সে দেশের নতুন সরকারকেও একটা বার্তা দিতে চাইল বলে মনে করা হচ্ছে।