কাশ্মীরে নিয়ন্ত্রণরেখার কাছে পাকিস্তানি ঘাঁটিতে চিনা সেনার উপস্থিতি উদ্বেগ বাড়াল দিল্লির।
কৌশলগত ক্ষেত্রে পাকিস্তান ও চিনের সহযোগিতা বরাবরই ভারতের মাথাব্যথার কারণ। আগেও পাক-অধিকৃত কাশ্মীরের গিলগিট বালটিস্তানে চিনা সেনার উপস্থিতি নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছিল ভারত। তাতে চিন বা পাকিস্তান কর্ণপাত করেনি। এ বার কাশ্মীরের নওগাম ও টাংধর সেক্টরে নিয়ন্ত্রণরেখার কাছে পাকিস্তানি পোস্টে চিনা সেনার উপস্থিতি নজরে এসেছে গোয়েন্দাদের।
বিষয়টি নিয়ে সরকারি ভাবে মুখ খোলেনি সেনাবাহিনী। কিন্তু গোয়েন্দা সূত্রে খবর, গত বছরের শেষ দিকে নওগাম সেক্টরে চিনাদের উপস্থিতির কথা জানতে পারে সেনাবাহিনী।
সঙ্গে সঙ্গেই সব গোয়েন্দা সংস্থাকে সতর্ক করা হয়। পাক পোস্টে চিনা সেনার কয়েক জন উচ্চপদস্থ অফিসারকে দেখতে পান গোয়েন্দারা। পাক সেনার রেডিও বার্তায় আড়ি পেতে জানা যায়, চিনারা সীমান্তে কিছু পরিকাঠামো তৈরি করতে এসেছে। পরে টাংধর সেক্টরেও চিনা সেনার গতিবিধির খবর পাওয়া যায়।
বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে খবর, চিন পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডরকে সামনে রেখে পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে সেনা পাঠিয়েছে বেজিং। কৌশলগত ভাবে দিল্লিকে চাপে রাখাই বেজিংয়ের উদ্দেশ্য বলে মনে করছে সাউথ ব্লক।
চিন-পাকিস্তান বাণিজ্য করিডরটি ৩০০০ কিলোমিটার লম্বা। বালুচিস্তানের গদর বন্দর থেকে চিনের জিনজিয়াং এই করিডরের মাধ্যমে যুক্ত। সেটি বালুচিস্তান থেকে শুরু হয়ে লাহৌর, ইসলামাবাদ, গিলগিট বালটিস্তান ও কারাকোরাম সড়ক হয়ে গিয়ে পড়েছে চিনের জিনজিয়াং-এ। দিল্লির হাতে থাকা তথ্য অনুযায়ী, চিনা সেনার পাঁচটি ব্রিগেড এই অঞ্চলে মোতায়েন করেছে বেজিং। প্রত্যেকটি ব্রিগেডে ১ হাজার করে সেনা রয়েছে। আবার টাংধর সেক্টরে ৯৭০ মেগাওয়াটের একটি জলবিদ্যুৎ প্রকল্প তৈরি করছে চিনের এক সংস্থা। ফলে সেখানেও ওই প্রকল্পটির সুরক্ষার অজুহাতে রয়েছে চিনা সেনা।
বিদেশ মন্ত্রকের এক কর্তার কথায়, ‘‘পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে চিনা সেনার উপস্থিতি নিয়ে সব সময়েই প্রতিবাদ জানানো হয়।
কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছুই হবে বলে মনে হয় না। পরিস্থিতির উপরে সতর্ক নজর রাখা ছাড়া আপাতত কিছু করার নেই।’’