ছবি: আনস্প্লাশ।
চিনের শিশুরা রোজই আক্রান্ত হচ্ছে এক নতুন অসুখে। প্রতি দিন হাজারো শিশু শুধু রোগাক্রান্ত হচ্ছে তা-ই নয়, চিকিৎসার জন্য তাদের হাসপাতালেও ভর্তি করাতে হচ্ছে নিয়মিত। চিনের অধিকাংশ হাসপাতালেরই রোগীর চাপে বেহাল দশা। তবু গত দু’মাস ধরে পরিস্থিতির হেরফের দেখা যাচ্ছে না বিশেষ। চিনের এই নতুন রোগ নিয়ে যখন গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে উদ্বেগ, ঠিক তখনই ভারতে এই রোগে আক্রান্ত সাত জন রোগী পাওয়া গিয়েছে বলে জানাল দিল্লি এমস।
চিনে যে রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা, তার নাম ওয়াকিং নিউমোনিয়া। এর কারণ এক বিশেষ ধরনের ব্যাকটেরিয়া— মাইকোপ্লাজমা নিউমোনে। দিল্লি এমসে যে সাত জন রোগীর শরীরে ওয়াকিং নিউমোনিয়ার উপসর্গ মিলেছিল, তাঁদের প্রত্যেকেরই শরীরে এই ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ প্রমাণিত হয়েছে। যদিও এমস জানিয়েছে, ভারতে এই রোগ নতুন নয়। এর আগেও এর সংক্রমণ হত ভারতে। তবে করোনার পর সে ভাবে দেখা যায়নি। গত জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত মোট ৬১১টি এ ধরনের উপসর্গের রোগীর নমুনা পরীক্ষা করেছিল এমস। কারও শরীরেই ওয়াকিং নিউমোনিয়ার ব্যাকটেরিয়া পাওয়া যায়নি। চিনে এই রোগের সংক্রমণ দেখা গিয়েছে গত দু’মাস ধরে। আর খুব সম্প্রতিই এ দেশে সাত জন রোগীর শরীরে ধরা পড়েছে এই ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ।
অবশ্য এমসের তথ্যে এখনই ভয় পাওয়ার মতো কিছু নেই বলে জানিয়েছে কেন্দ্র। এমসের তরফেও জানানো হয়েছে, চিনের ওয়াকিং নিউমোনিয়ার সঙ্গে এর সরাসরি কোনও সম্পর্ক রয়েছে বলে মনে করছে না তারা।
ওয়াকিং নিউমোনিয়া আসলে ফুসফুসের এক ধরনের সংক্রমণ। তবে এই সংক্রমণ খুব একটা জোরালো ধরনের নয়। শিশুদের সাধারণ জ্বর, সর্দিকাশির মতোই এর উপসর্গ। এমনকি, এই রোগে শিশুরা পুরোপুরি অসুস্থ হয়ে শয্যাশায়ীও হয় না। তাই এই রোগের নাম ওয়াকিং নিউমোনিয়া। যদিও চিনে এ বছর এই ওয়াকিং নিউমোনিয়াই মারাত্মক আকার নিয়েছে। এমস জানিয়েছে, চিন্তার কারণ না থাকলেও করোনার পরে এই ব্যাকটেরিয়ার ফিরে আসার বিষয়টিতে তারা নজর রাখছে।
অন্য দিকে, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক একটি বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, ‘‘মাইকোপ্লাজমা নিউমোনে একটি অত্যন্ত সাধারণ জাতের ব্যাকটেরিয়া। সাধারণ জ্বর, সর্দিকাশির সংক্রমণ হয় এর থেকে। এ ধরনের যে সমস্ত সংক্রমণ ছড়ায়, তার ১৫-৩০ শতাংশের নেপথ্যে থাকে এই ব্যাকটেরিয়া। আপাতত দেশের কোনও অংশ থেকেই এই ধরনের সংক্রমণের খবর আসেনি আমাদের কাছে।’’