ফাইল চিত্র
সব দেশের তালিবানের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের ‘পথ দেখানো’ উচিত বলে মন্তব্য করল চিন। অন্য দিকে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাকরঁ জানিয়ে দিলেন, তালিবানের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার অর্থ তাদের স্বীকৃতি দেওয়া নয়।
চিনা বিদেশ মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, গত কাল আমেরিকান বিদেশসচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন চিনা বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই। ওয়াং ব্লিঙ্কেনকে জানান, আফগানিস্তানে পরিস্থিতির আমূল পরিবর্তন হয়েছে। তথ্য থেকেই বোঝা যাচ্ছে আমেরিকা আফগানিস্তানে জঙ্গি গোষ্ঠীগুলিকে নির্মূল করতে পারেনি। আমেরিকা ও নেটো গোষ্ঠী তড়িঘড়ি সেনা সরানোয় সেখানে জঙ্গি গোষ্ঠীগুলি ফের শক্তিশালী হওয়ার সুযোগ পেতে পারে।
আফগানিস্তানকে সন্ত্রাস-দমনের ক্ষেত্রে সাহায্য করার জন্য সঠিক পদক্ষেপ করতে আমেরিকাকে অনুরোধ করেছেন চিনা বিদেশমন্ত্রী। তিনি ব্লিঙ্কেনকে জানান, আফগানিস্তানের স্বাধীনতাকে সম্মান জানিয়েই সন্ত্রাস-মোকাবিলায় সাহায্য করতে হবে। জঙ্গি দমনের ক্ষেত্রে দ্বিচারিতা ঠিক নয়। কূটনীতিকদের মতে, তালিবান এখন আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেতে মরিয়া। সেই পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য চিনের তরফে এই বক্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ।
অন্য দিকে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের আর এক স্থায়ী সদস্য ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাকরঁ জানিয়েছেন, তালিবানের সঙ্গে তাঁদের যোগাযোগ রয়েছে। কারণ উদ্ধার অভিযান চালাতে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা প্রয়োজন। কিন্তু তার অর্থ এ নয় যে ফ্রান্স এখনই তালিবানকে স্বীকৃতি দেওয়ার কথা ভাবছে। মাকরঁ জানিয়েছেন, তালিবান কয়েকটি শর্ত পূরণ করলে তবেই স্বীকৃতির কথা ভাবা হবে বলে জানিয়েছে ফ্রান্স। প্রথমত, যাঁরা আফগানিস্তান ছেড়ে অন্য দেশে আশ্রয় নিতে চান তাঁদের আফগানিস্তান ছাড়ার সুযোগ দিতে হবে। দ্বিতীয়ত, কোনও জঙ্গি গোষ্ঠীর সঙ্গে যোগাযোগ রাখা চলবে না। তৃতীয়ত, মানবাধিকার বিশেষত মহিলাদের সম্মান রক্ষা করতে হবে।
আমেরিকান বিদেশ দফতর জানিয়েছে, আফগানিস্তানের পরিস্থিতি নিয়ে সোমবার বৈঠকে বসবেন আমেরিকা-সহ কয়েকটি দেশের বিদেশমন্ত্রী। ওই বৈঠকে কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, ইটালি, জাপান, ব্রিটেন, তুরস্ক, কাতার, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও নেটোর প্রতিনিধি থাকবেন। আগামিকাল আফগানিস্তান থেকে আমেরিকান সেনা সরে যাওয়ার কথা। তার পরের কয়েক সপ্তাহে সে দেশ সম্পর্কে বিভিন্ন দেশের কাজকর্মের মধ্যে সমন্বয় নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হবে। তার পরে আফগানিস্তানে আমেরিকার কাজকর্ম নিয়ে একটি বিবৃতি দেবেন ব্লিঙ্কেন।