গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
তৃতীয় ডিজিটাল স্ট্রাইকেরও প্রতিবাদ জানাল চিন। বুধবার তৃতীয় দফায় ভারত পাবজি-সহ ১১৮টি অ্যাপ নিষিদ্ধ ঘোষণার পরের দিনই চিনা বাণিজ্যমন্ত্রক প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছে, এই সিদ্ধান্ত চিনের ব্যবসায়ীদের আইনি অধিকার খর্ব করেছে। সিদ্ধান্ত বদলে সংশোধনের আর্জিও জানিয়েছেন চিনা বাণিজ্যমন্ত্রকের মুখপাত্র গাও ফেং। যদিও আগের দুই দফার মতো এ বারও চিনের সেই আর্জিতে ভারত কর্ণপাত করবে না বলেইি মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
পূর্ব লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় ভারত-চিন সেনা সংঘর্ষের জেরে গত ২৯ জুন টিকটক-সহ ৫৯টি অ্যাপ ভারতে নিষিদ্ধ করেছিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। তার কিছুদিন পর এই অ্যাপগুলির সহযোগী আরও ৪৯টি অ্যাপ নিষিদ্ধ হয়। আর তৃতীয় দফায় বুধবার টেনসেন্ট হোল্ডিংস-এর গেমিং অ্যাপ পাবজি সহ ১১৮টি অ্যাপ নিষিদ্ধ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। পাবজি ছাড়াও এই তালিকায় রয়েছে আলি-পে, এপিইউএস টার্বো ক্লিনার, বাইডু, ক্যাম কার্ড, সুপার ক্লিন, ফোটো গ্যালারি অ্যান্ড অ্যালবাম, লুডো অল স্টার ইত্যাদি। সরকারের অভিযোগ, এই সমস্ত অ্যাপ দেশের নিরাপত্তা, সার্বভৌমত্ব এবং নেট ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষার পরিপন্থী।
এর পরেই আজ বৃহস্পতিবার গাও ফেং বলেছেন, ভারতের এই পদক্ষেপ চিনের ব্যবসায়ী, বিনিয়োগকারী এবং পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থাগুলির আইনি অধিকার খর্ব করেছে। অ্যাপ নিষিদ্ধ করে ভারত যে ভুল করেছে, সেটাও বোঝাতে চেয়েছে চিনা বাণিজ্যমন্ত্রক। ভারতের কাছে সেই ভুল শুধরে নেওয়ার আর্জিও জানিয়েছে বেজিং। প্রথম এবং দ্বিতীয় দফার অ্যাপ নিষিদ্ধ করার পরেও প্রায় একই ভাষায় প্রতিবাদ জানিয়েছিল শি চিনফিং সরকার। কিন্তু তাতে নয়াদিল্লি কর্ণপাত তো করেইনি, উল্টে নতুন করে আরও ১১৮টি অ্যাপ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে।
আরও পড়ুন: করোনা পরিস্থিতির সুযোগ নিয়েই ভারতে হামলা চিনের, দাবি মার্কিন কূটনীতিকের
আরও পড়ুন: পাবজি-সহ ১১৮টি অ্যাপ নিষিদ্ধ
ডাউনলোডের হিসেবে সারা বিশ্বের মধ্যে ভারতে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় পাবজি। বিশ্বে মোট ডাউনলোডের ২৪ শতাংশই ভারতে। স্বাভাবিক ভাবেই ভারতের এই সিদ্ধান্তের ফলে বিরাট চাপে পড়েছে পাবজি-সহ অধিকাংশ অ্যাপের মূল চিনা সংস্থাগুলি। তবে এর ফলে ভারতে চিনা বিনিয়োগে প্রভাব পড়তে পারে, বিশেষজ্ঞদের অনেকেই তেমনটা মনে করছেন। খৈতান অ্যান্ড কোম্পানি নামে একটি আইনি পরামর্শদাতা সংস্থার অন্যতম অংশীদার অতুল পাণ্ডে বলেন, ‘‘ ইতিমধ্যেই যে সব চিনা সংস্থা ভারতে বিনিয়োগ করেছে, তাদের কাছে যেমন খারাপ বার্তা যাবে, তেমনই যে সব সংস্থা ভারতে বিনিয়োগের প্রস্তুতি নিচ্ছিল, তারাও পিছিয়ে যাবে।’’