ছবি পিটিআই।
যুদ্ধ হচ্ছে না। শান্তিও নেই। বায়ুসেনা প্রধান রাকেশকুমার সিংহ ভদৌরিয়ার মতে, লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় পরিস্থিতি এমনই ‘অস্বস্তিকর’। চিন হঠকারী কিছু করে বসলে ভারতীয় বাহিনী তার মোকাবিলা করতে প্রস্তুত।
চিনের সঙ্গে আলোচনায় যে ফল হচ্ছে না, সেটা ক্রমে স্পষ্ট হয়ে উঠছে। বায়ুসেনাপ্রধানের কথাতেও তারই প্রতিফলন। চিনের বিদেশ মন্ত্রক গত কাল বিবৃতিতে দাবি করেছে, ১৯৫৯ সালে তৎকালীন চিনা প্রধানমন্ত্রী চৌ এন লাই প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা সম্পর্কে যে চিঠিটি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুকে দিয়েছিলেন, সেটিই ভারত-চিন সীমান্ত নিয়ে শেষ কথা। ওই দাবি অনুযায়ী, প্যাংগং লেকের একটি বড় অংশ, গালওয়ান নদী উপত্যকার একাংশ, দেপসাং সমভূমির আশপাশের এলাকা, চুমার, হট স্প্রিং, ডেমচক, দৌলত বেগ ওল্ডি-সহ বেশ কিছু এলাকা চিনের অধিকারভুক্ত। এই ব্যাপারে নাকি ভারত-সহ আন্তর্জাতিক স্তরে সকলেই অবহিত। ভারতের পক্ষ থেকে এর পাল্টা বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তবের কথায়, “ভারত কখনওই প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা নিয়ে ১৯৫৯ সালে দেওয়া চিনের ওই একতরফা ব্যাখ্যা মানেনি। দু’টি দেশই প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা নিয়ে অনেকগুলি চুক্তিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ রয়েছে। বস্তুত ২০০৩ সাল পর্যন্ত সীমান্তরেখা নির্ণয়ের প্রক্রিয়াও চলেছে। কিন্তু তার পর চিনের উৎসাহের অভাবেই তা থমকে গিয়েছে।”
বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্রের বক্তব্য, “ভারত প্রস্তাবিত নিয়ন্ত্রণরেখা মেনে চললেও চিন একতরফা ভাবে স্থিতাবস্থা বিঘ্নিত করার চেষ্টা করেছে। আমরা আশা করব, চিন একনিষ্ঠ ভাবে এবং মর্যাদার সঙ্গে সমস্ত চুক্তি মেনে চলবে। অবাস্তব একতরফা দাবি আর করবে না।”
তবে এতগুলি সরকারি চ্যানেল ও মেকানিজ়ম চালু থাকা সত্ত্বেও চিন যে ভারতীয় ভূখণ্ড ছেড়ে পিছু হটতে চাইছে না, তা চিনা বিবৃতি থেকেই স্পষ্ট। তাই আন্তর্জাতিক মঞ্চে চিনকে কৌশলগত ভাবে চাপে রাখার প্রক্রিয়াও চলছে। আগামী ৬ অক্টোবর বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের জাপান যাওয়া, সেই কৌশলের অঙ্গ। এ ছাড়া ৬ ও ৭ তারিখ ভারত, জাপান, অস্ট্রেলিয়া এবং আমেরিকাকে নিয়ে চিন-বিরোধী চর্তুদেশীয় অক্ষ বা কোয়াডের বিদেশমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক হবে টোকিয়োয়।