চিনা অনুপ্রবেশের প্রেক্ষিতে লাদাখে এলএসি বরাবর সৈন্য সমাবেশ ক্রমশ বাড়াচ্ছে ভারত। সংঘাত লম্বা হওয়ার আশঙ্কা। ফাইল চিত্র।
ডাকাতের উপত্যকা। ‘গলওয়ান’ শব্দের অর্থই হল ডাকাত। গলওয়ান ভ্যালি বা গলওয়ান নদীর নামকরণ যদিও সে কথা মাথায় রেখে হয়নি। গোলাম রসুল গলওয়ানের অবদান স্মরণীয় করে রাখতেই ওই রকমের নামকরণ করেছিল ব্রিটিশরা। কিন্তু সে ইতিহাস কেউ যদি না-ও জানেন, তা হলেও গলওয়ান উপত্যকার নামকরণের অন্য রকম সার্থকতা খুঁজে নিতে কারও অসুবিধা হবে না। কারণ কারাকোরাম এবং মূল হিমালয় যেখানে জট পাকিয়ে গিয়েছে, সেই এলাকা ব্রিটিশ রাজত্বে ডাকাতদের অবাধ মুক্তাঞ্চলই ছিল। আফগানিস্তানের পাখতুন এলাকা থেকে গিলগিট-বাল্টিস্তান হয়ে লাদাখের বিস্তীর্ণ এলাকা পর্যন্ত দাপিয়ে বেড়াত ডাকাত দল। আর এখন ওই এলাকায় আক্ষরিক অর্থেই ‘ডাকাতি’ করতে এসেছে চিন।
জম্মু-কাশ্মীরে বা লাদাখের সীমান্তে যাঁরা কাজ করেছেন, তাঁদের অনেকেই গোলাম রসুল গলওয়ানের কাহিনি জানেন। নামের শেষে ‘গলওয়ান’ শব্দ দেখেই বোঝা যায়, গোলাম রসুল কী করতেন। কিন্তু এক ব্রিটিশ অভিযাত্রী দলকে সাহায্য করার সুবাদে নিজের নাম অন্য ভাবে ইতিহাসে তোলার ব্যবস্থা করে ফেলেছিলেন তিনি। গলওয়ান নদী নামে আমরা এখন যেটাকে চিনি, সেটার তখন কোনও নাম ছিল না। নদীর উৎস খুঁজে বার করার অভিযানে নেমেছিল একটি ব্রিটিশ অভিযাত্রী দল। গোলাম রসুল গলওয়ান তাঁদের পথ দেখিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন।
গোলাম রসুলের সহযোগিতায় এতই খুশি ছিলেন ব্রিটিশরা যে, তাঁকে লাদাখের একটি বিস্তীর্ণ এলাকার সরকারি ঠিকাদার বানিয়ে দেওয়া হয়। যে নদীর উৎস খুঁজতে তিনি সাহায্য করেছিলেন, সেই নদী এবং উপত্যকার নামকরণও তাঁর নামেই হয়ে যায়— গলওয়ান রিভার, গলওয়ান ভ্যালি। সেখানেই এ বার হানা দিয়েছে চিন।
আরও পড়ুন: পরিস্থিতি স্থিতিশীল, আলোচনায় সমাধান সম্ভব, লাদাখ নিয়ে সুর নরম চিনের
কেন এই হানা? কারণ একাধিক। তবে লক্ষ্য একটাই— ভারতের উপরে প্রবল চাপ তৈরি করা। কারণগুলোয় একটু চোখ রাখা যাক।
প্রথমত, চিন এই মুহূর্তে প্রবল চাপে রয়েছে আন্তর্জাতিক মঞ্চে। গোটা পৃথিবীতে এখন নোভেল করোনাভাইরাসের প্রকোপ। এবং এই ভাইরাস চিনের উহান থেকেই ছড়িয়েছে বলে আন্তর্জাতিক শিবিরের বিরাট অংশের দাবি। আমেরিকার সুর সবচেয়ে চড়া এ নিয়ে। করোনাভাইরাসকে খোদ মার্কিন প্রেসিডেন্টও ‘উহান ভাইরাস’ বা ‘চাইনিজ ভাইরাস’ বলে ডাকছেন। চিন সে অভিযোগ নস্যাৎ করার চেষ্টা করছে। উল্টে আমেরিকার উপরে দায় চাপানোর চেষ্টাও করছে। কিন্তু চিনের সে চেষ্টা এখনও পর্যন্ত খুব একটা ফলপ্রসূ হয়নি। বরং কোভিড-১৯ সংক্রমণ কী ভাবে ঘটল, তার নেপথ্যে চিনের ভূমিকা কী, সে সব নিয়ে আন্তর্জাতিক তদন্তের তোড়জোড় শুরু হয়েছে। উহানের ল্যাবে কোনও দুর্ঘটনা থেকেই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ল কি না, ওই ল্যাবে আসলে ভয়ঙ্কর জীবাণু অস্ত্র তৈরি করার চেষ্টা হচ্ছিল কি না— সে সব তদন্ত করে দেখার দাবি উঠছে। এই পরিস্থিতি চিনের জন্য অত্যন্ত অস্বস্তিকর। ভারত যাতে এই আন্তর্জাতিক তোড়জোড়ের শরিক না হয়, তা নিশ্চিত করতে চায় চিন। তাই সীমান্তে পরিস্থিতির উত্তাপ বাড়িয়ে ভারতকে চাপে ফেলার চেষ্টা শুরু করেছে।
আরও পড়ুন- পরিস্থিতি স্থিতিশীল, আলোচনায় সমাধান সম্ভব, লাদাখ নিয়ে সুর নরম চিনের
দ্বিতীয়ত, তাইওয়ান এবং হংকং নিয়েও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে চাপ বাড়ছে চিনের উপরে। চিনা শাসনের বিরুদ্ধে তীব্র গণআন্দোলন গড়ে উঠেছে হংকং-এ। কঠোর দমন নীতি প্রয়োগ করেও চিন সে আন্দোলন দমাতে পারছে না। বরং আমেরিকা ও তার সহযোগী দেশগুলো হংকং-এর পরিস্থিতি নিয়ে বেজিঙের বিরুদ্ধে তোপ দাগতে শুরু করেছে। আর তাইওয়ানের সরকারকে তো চিন বৈধ সরকার হিসেবে মানতেই নারাজ। তাইওয়ানকে বরাবরই নিজেদের এলাকা বলে দাবি করে আসছে বেজিং। দরকার হলে সামরিক শক্তি প্রয়োগ করে তাইওয়ানকে কব্জায় নেওয়ার পথে এগনো হবে— এমন ইঙ্গিতও সম্প্রতি বেজিং দিতে শুরু করেছিল। বেজিঙের সেই অবস্থানকেও আগ্রাসন হিসেবেই দেখেছে আন্তর্জাতিক মহলের বিরাট অংশ। ফলে তাইওয়ান বিতর্কেও চিন কিছুটা কোণঠাসাই। ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ঘনিয়ে ওঠা এই অশান্তিতে ভারত যদি তাইওয়ান এবং হংকং-এর বিক্ষোভকারীদের পক্ষ নেয়, তা হলে চিনের জন্য পরিস্থিতি আরও কঠিন হবে। তাই ভারতকে উত্তর সীমান্তে ব্যস্ত রাখার কৌশল নেওয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন: উচ্চস্তরীয় বৈঠকে জেনারেল নরবণে, লাদাখে বড় সৈন্য সমাবেশ ভারতের
তৃতীয়ত, বাণিজ্য এবং অর্থনীতি নিয়েও সমস্যা বাড়ছে চিনের। আমেরিকার সঙ্গে চিনের শুল্ক যুদ্ধ চরমে পৌঁছেছে। তাতে আমেরিকারও লোকসান হচ্ছে। কিন্তু চিনকেও খুব বড় বাণিজ্যিক সঙ্কটের মুখে পড়তে হচ্ছে। আর চিনের সে সঙ্কট শুধু আমেরিকার সঙ্গে টানাপড়েনের মধ্যেও সীমাবদ্ধ থাকছে না। বিশ্বের বৃহত্তম বাজারগুলির অন্যতম যে ভারত, সেখানেও চিনা পণ্যের রমরমায় রাশ টানার ভাবনা শুরু হয়ে গিয়েছে। আমেরিকা-সহ বিভিন্ন দেশ যখন করোনাভাইরাসকে ‘উহান ভাইরাস’ নামে ডাকতে শুরু করে দিয়েছিল, ভারত কিন্তু তখনও সংযত ছিল। চিনা বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই নিজে ফোন করেছিলেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে। করোনা সংক্রমণের দায় ভারত যেন চিনের উপরে না চাপায়— এমন অনুরোধ এসেছিল সে দিন। প্রতিবেশীর প্রতি কূটনৈতিক সৌজন্য বহাল রেখে ভারত সরকার সে অনুরোধকে মর্যাদাও দিয়েছিল। কিন্তু লকডাউনের জেরে যখন বিভিন্ন ভারতীয় সংস্থার শেয়ারের দাম হু হু করে কমতে শুরু করেছে, তখন পরিস্থিতির সুযোগ নিতে তৎপর হয়ে উঠেছিল চিন। বিভিন্ন বৃহৎ ভারতীয় সংস্থার বিপুল পরিমাণ শেয়ার কিনে নেওয়ার তোড়জোড় শুরু করেছিল। ভারত সরকার সে চেষ্টা সফল হতে দেয়নি। প্রত্যক্ষ চিনা বিনিয়োগের উপরে বিধিনিষেধ আরোপ করে দেয় ভারত সরকার। নয়াদিল্লির দেখানো সৌজন্য ভুলে গিয়ে বেজিং যে সুযোগসন্ধানী আচরণ শুরু করেছিল, তার জবাব দেওয়া হবে বলেও স্থির হয়। ফলে ভারতীয় বাজারে চিনা পণ্যের অবাধ প্রবেশও কিছুটা কঠিন করে তোলা হয়। চিন এখন তার প্রতিশোধও নিতে চাইছে।
গলওয়ান উপত্যকা এবং প্যাংগং লেকের উত্তরাংশসহ দু-তিনটি এলাকায় চিন এলএসি লঙ্ঘন করেছে বলে খবর আসছে। ফাইল চিত্র।
চতুর্থত, করোনা সংক্রমণের নেপথ্যে চিনের ভূমিকা নিয়ে বিতর্ক শুরু হওয়ার পর থেকে অনেকগুলো বৃহৎ বহুজাতিক সংস্থা চিন ছাড়তে উদ্যত। বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগ চিন থেকে ভারতে সরে আসতে পারে বলে জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে আন্তর্জাতিক মহলে। তেমন পরিস্থিতি হলে ভারতও যেন প্রস্তুত থাকে, সে বিষয়েও তৎপর নয়াদিল্লি। কিন্তু এই পরিস্থিতি কিছুতেই তৈরি হতে দিতে চায় না চিন। নিজেদের দেশ থেকে বিনিয়োগ বেরিয়ে যাওয়া চিনের জন্য যত বড় ধাক্কা, সেই বিনিয়োগ ভারতে ঢোকা তার চেয়েও বড় ধাক্কা। কারণ এক দিকে নিজেরা অর্থনৈতিক ভাবে দুর্বল হবে, অন্য দিকে প্রতিবেশী তথা নানা ক্ষেত্রের প্রতিপক্ষ ভারত শক্তিশালী হবে— এটা চিনের জন্য গোদের উপর বিষফোঁড়ার শামিল। সুতরাং ভারতের সীমান্তে অস্থিরতা তৈরি করে রাখা এখন চিনের পক্ষে খুব জরুরি। যাতে কোনও বড় বিনিয়োগকারী চিন ছাড়লেও ভারতে পা না রাখেন।
পঞ্চমত, চিনের ঘনিষ্ঠ মিত্র পাকিস্তান ক্রমশ আরও বেশি করে বিপন্ন বোধ করতে শুরু করেছে। জম্মু-কাশ্মীর থেকে ৩৭০ অনুচ্ছেদ প্রত্যাহার এবং সে রাজ্যকে ভাগ করে দিয়ে দুটো কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত করার সিদ্ধান্ত যে দিন নিয়েছে ভারত, সে দিন থেকেই পাকিস্তানে চাঞ্চল্য তৈরি হয়ে গিয়েছে। জম্মু-কাশ্মীর এবং লাদাখ প্রসঙ্গে সংসদে ভাষণ দেওয়ার সময়ে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ আবার বলেছিলেন যে, পাক অধিকৃত কাশ্মীর এবং আকসাই চিনও ভারতের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ এবং ভারত তা পুনরুদ্ধার করবে। পরে ভারতের সামরিক বাহিনীও সে বিষয় নিয়ে তৎপর হতে শুরু করে। পাক অধিকৃত কাশ্মীরে যে কোনও সময়ে অভিযান চালাতে ভারতীয় বাহিনী প্রস্তুত বলে দেশের চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ (সিডিএস) বিপিন রাওয়াতও মন্তব্য করেন। ফলে ইসলামাবাদে আতঙ্ক ক্রমশ বাড়তে থাকে। ঘনিষ্ঠ মিত্রের আতঙ্ক কমাতে চিন ময়দানে নামল এ বার। আকসাই চিন এবং লাদাখকে ভাগ করে রেখেছে যে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা (লাইন অব অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল বা এলএসি), তা পেরিয়ে কয়েক কিলোমিটার করে ঢুকে আসতে শুরু করল চিন। যাতে আপাতত চিনকে সামলাতেই ব্যস্ত হয়ে পড়ে ভারত এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীর নিয়ে আপাতত ভাবতেই না পারে।
ষষ্ঠত, শুধু পাকিস্তান নয়, পাক অধিকৃত কাশ্মীর নিয়ে ভারত যা ভাবছে, তাতে চিনের অস্বস্তিও বাড়ছে। চিনের শিনচিয়াং প্রদেশের কাশগড় থেকে শুরু হওয়া চিন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডর ওই পাক অধিকৃত কাশ্মীরের গিলগিট-বাল্টিস্তান হয়েই পাক পঞ্জাব, সিন্ধ হয়ে বালুচিস্তানের উপকূলে পৌঁছে গ্বাদর বন্দর পর্যন্ত গিয়েছে। ভারত যদি পাক অধিকৃত কাশ্মীরে অভিযান চালায়, তা হলে চিনের তৈরি করা ওই অর্থনৈতিক করিডর তথা মহাসড়কও বিপন্ন হবে। কাশগড়ের সঙ্গে গ্বাদরের সড়ক যোগাযোগ ছিন্ন হয়ে যাবে। সুতরাং ভারতকে এখন অন্য সীমান্তে ব্যস্ত রাখার কৌশল নিচ্ছে চিন।
শুধু গলওয়ান ভ্যালিতে নয়, প্যাংগং লেকের উত্তরে হটস্প্রিং এলাকায় এবং ডেমচকেও চিনা অনুপ্রবেশের খবর আসছে। অর্থাৎ আকসাই চিন এবং লাদাখকে ভাগ করে রেখেছে যে এলএসি, দু’তিনটি জায়গায় তাকে পেরিয়ে এসেছে চিনা বাহিনী পিএলএ (পিপলস লিবারেশন আর্মি)। সে সব এলাকায় তাঁবু খাটিয়ে এবং বড়সড় সৈন্য সমাবেশ করে পুরোদস্তুর ঘাঁটি তৈরি করে ফেলার চেষ্টা করছে তারা।
প্যাংগং থেকে দৌলতবেগ ওল্ডি পর্যন্ত যে রাস্তা তৈরি করেছে ভারত, তা এখন চিনের চক্ষুশূল। ফাইল চিত্র।
এই প্রবণতা কিন্তু একটু বিরল। এলএসি বরাবর ভারত এবং চিনের বিবাদ আগেও হয়েছে। এলএসি-র অবস্থান সম্পর্কে ভারত ও চিনের মধ্যে মতভেদ রয়েছে। তাই ভারত কখনও চিনের বিরুদ্ধে অনুপ্রবেশের অভিযোগ তোলে। আবার চিন কখনও বলে যে, ভারতীয় বাহিনী তাদের এলাকায় ঢুকে পড়েছে। কিন্তু সীমান্ত বৈঠকের মাধ্যমে প্রতি বারই সমস্যার সমাধান করে ফেলা হয়। দুই বাহিনীই পিছিয়ে আসে। ভুটান-চিন সীমান্তের ডোকলামেও তেমনই হয়েছিল।
কিন্তু এ বার পরিস্থিতি আলাদা বলেই মনে হচ্ছে। একসঙ্গে বেশ কয়েকটা জায়গায় অনুপ্রবেশ এবং সেখানে এসে তাঁবু গেড়ে স্থায়ী ভাবে বসে যাওয়ার চেষ্টা আগে খুব একটা দেখা যায়নি। চিনা তৎপরতার জবাবে ভারত যে পদক্ষেপ করেছে, তা-ও খুব তাৎপর্যপূর্ণ। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে সর্বোচ্চ সামরিক কর্তাদের বৈঠক হয়েছে লাদাখের পরিস্থিতি নিয়ে। এলএসি বরাবর বিপুল সৈন্য সমাবেশ শুরু করে দিয়েছে ভারতও। গলওয়ান উপত্যায় চিন যে খানে শিবির তৈরি করেছে, তাকে তিন দিক দিয়ে ভারতীয় বাহিনী ঘিরে ফেলেছে বলেও প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রে জানা যাচ্ছে। লাদাখে সৈন্যসংখ্যা এবং সামরিক প্রস্তুতি ক্রমশ বাড়ানো হচ্ছে। অর্থাৎ এ বার সীমান্তে যে কোনও পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে হতে পারে এবং ভারতীয় বাহিনী তার জন্যই প্রস্তুত হচ্ছে— এ কথা বলাই যায়।
এই সঙ্ঘাত কিন্তু ডোকলামের উত্তেজনাকেও ছাপিয়ে যেতে পারে।