তিহাড় জেলেই যেতে হচ্ছে প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমকে।
প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমকে ১৪ দিনের বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠাল বিশেষ সিবিআই আদালত। আদালতের নির্দেশে আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিহাড় জেলের ১ নং ওয়ার্ডের ৯নং কক্ষই হতে চলেছে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থ এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ঠিকানা। সিবিআই সূত্রে খবর, ২০ সেপ্টেম্বর তাঁর বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করবে সিবিআই।
আইএনএক্স মিডিয়া দুর্নীতি মামলায় প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরমের সিবিআই হেফাজতের মেয়াদ ছিল ৫ সেপ্টেম্বর, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত । এই সময়ের মধ্যে অন্তর্বর্তী জামিনের বিষয়ে নিম্ন আদালতে আর্জি না জানাতে চিদম্বরমের আইনজীবীদের নির্দেশ দেওয়া হয়। এ দিন সকালেই সুপ্রিম কোর্ট ইডি-র মামলায় তাঁর ওপর থেকে রক্ষাকবচ তুলে নেয়। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই শুনানি শুরু হয় বিশেষ আদালতে।
আরও পড়ুন:রক্ষাকবচ মিলল না সুপ্রিম কোর্টে, বিনা বাধায় চিদম্বরমকে গ্রেফতার করতে পারে ইডি
বিশেষ বিচারপতি অজয় কুমার কুহর জানিয়ে দেন, ১৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিহাড় জেলেই থাকতে হবে পি চিদম্বরমকে। তিনি যাবতীয় ওষুধ নিজের সঙ্গে রাখতে পারবেন। জেড ক্যাটাগরির নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে বিশেষ সেলে রাখা হবে চিদম্বরমকে।
চিদম্বরমের জন্যে বিশেষ আবেদন। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
কংগ্রেস নেতার তিহাড় জেল যাত্রা আটকাতে চিদম্বরমের আইনজীবীরা চেষ্টার কসুর করেননি। কপিল সিব্বল বলেন, ‘চিদম্বরম ইডির কাছে আত্মসমর্পন করতে প্রস্তুত, তাঁকে কেন জেলে টেনে নেওয়া হবে।’’ কিন্তু ইডি মামলার পরবর্তী শুনানি ১২ তারিখ। কাজেই সিব্বলের যুক্তি জেলযাত্রা আটকানোর জন্যে যথেষ্ট ছিল না। সিবিআই সূত্রের খবর, পাঁচ দফায় মোট ৯০ ঘণ্টা জেরা করা হয়েছে প্রাক্তন অর্থমন্ত্রীকে। মোট ৪৫০ প্রশ্ন আগেভাগেই তৈরি করা ছিল তাঁর জন্যে। আইএনএক্সকে ছাড়পত্র দেওয়ার বিষয়টিই ঘুরে ফিরে এসেছে প্রশ্নে।
আরও পড়ুন:এয়ারসেল-ম্যাক্সিস মামলায় স্বস্তি চিদম্বরমের, আগাম জামিন দিল দিল্লির আদালত
বৃহস্পতিবার দিনভরই নাটক চলে চিদম্বরমের ভাগ্য নিয়ে। ইডির গ্রেফতারি এড়াতে দিল্লি হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে শীর্ষ আদালতের দারস্থ হয়েছিলেন প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী। দিনের শুরুতেই সুপ্রিম কোর্ট তাঁকে জানায়, অর্থ তছরুপ সংক্রান্ত মামলায় কোনও ভাবেই শীর্ষ আদালতের রক্ষাকবচ পাবেন না তিনি। এর কিছুক্ষণ পরে আবার এয়ারসেল-ম্যাক্সিস মামলায় দিল্লিরর রউস কোর্ট কিছুটা স্বস্তি দেয় তাঁকে। এক লক্ষ টাকার বন্ডে আগাম জামিন হয় তাঁর। এই জামিনে ‘জয়’ দেখেছিলেন চিদম্বরম পুত্র কার্তি। যদিও শেষরক্ষা হল না। আদালতের রায়ে ৭৩ বছর বয়েসে তিহাড়-বাসের দুর্ভোগই পোহাতে হচ্ছে কংগ্রেস নেতাকে।
এই পরিণতি অনুমান করে, তৃতীয় দফার শেষ দিনে তাঁকে গৃহবন্দি রাখা হোক এমনও অনুরোধ করেছিলেন কপিল সিব্বল। অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল কে এম নটরাজ তখনই বলেন, এই আইনে অভিযুক্তকে গৃহবন্দি রাখার ব্যবস্থা নেই। শেষমেষ বৃহস্পতিবার বিশেষ সিবিআই আদালতে প্রাক্তন অর্থমন্ত্রীর বিচারবিভাগীয় হেফাজত হওয়ার পরে কপিল সিব্বল অতিরিক্ত বিচারপতি অজয় কুমার কুহরকে অনুরোধ করেন, চিদম্বরমকে যেন পশ্চিমী কায়দার শৌচালয় ও বিশেষ কক্ষের সুবিধে দেওয়া হয়। সেই আবেদন মঞ্জুরও হয়।