প্রেমিকাকে খুনের দায়ে ২০২০ সালে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয় উদয়ন দাসের। প্রতীকী ছবি।
প্রেমিকার সঙ্গে মাসখানেক ধরে একত্রবাসের সময় তাঁকে খুন করে নিজের বাড়ির মেঝেয় পুঁতে দিয়েছিলেন। সেই অপরাধে জেলে থাকাকালীন পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদের মুখে বেরিয়ে এল আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য। প্রেমিকাকে খুনের বহু বছর আগে প্রায় একই কায়দায় নিজের মা-বাবাকেও খুন করে বাড়ির বাগানে পুঁতে দিয়েছিলেন জেলবন্দি। মঙ্গলবার তাঁকে যাবজ্জীবন কারাবাসের সাজা দিয়েছে ছত্তীসগঢ়ের এক জেলা আদালত।
সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, প্রেমিকা আকাঙ্ক্ষা ওরফে শ্বেতাকে খুনের অভিযোগে জেল হয়েছিল উদয়ন দাসের। জেলবন্দি থাকার সময়ই উদয়নের প্রতি সন্দেহ হয় পুলিশের। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন পুলিশ আধিকারিকেরা।
পুলিশের দাবি, ২০১০ সালে ছত্তীসগঢ়ের রায়পুরের ডিডি নগর এলাকায় নিজেদের বাড়িতে মা-বাবাকে খুন করেন উদয়ন। এর পর ওই বাড়ির বাগানে তাঁদের দেহ পুঁতে দিয়েছিলেন।
সংবাদ সংস্থা এএনআই সূত্রে খবর, মঙ্গলবার এই জোড়া খুনের মামলায় ৪৩ বছরের উদয়নকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন রায়পুরের জেলা ও নগর দায়রা আদালতের বিচারক হিরেন্দ্র সিংহ টেকাম। সেই সঙ্গে তাঁকে ১ হাজার টাকা জরিমানার নির্দেশও দিয়েছেন তিনি। এ ছাড়া, খুনের পর প্রমাণ লোপাটের দায়ে তাঁর ৩ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড-সহ ৫০০ টাকার জরিমানাও হয়েছে। সব সাজার মেয়াদ একসঙ্গে শুরু হবে বলে জানিয়েছেন সরকারি আইনজীবী নীলেশ ঠাকুর।
মা-বাবাকে খুনের আগে বাঁকুড়ার মেয়ে আকাঙ্ক্ষাকেও একই ভাবে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দিয়েছিলেন উদয়ন। পুলিশ সূত্রে খবর, ২০০৭ সালে উদয়নের সঙ্গে সমাজমাধ্যমে বন্ধুত্ব হয়েছিল আকাঙ্ক্ষা র। ২০১৬ সালে জুনে ভোপালে উদয়নের সঙ্গে লিভ-ইন করার জন্য বাড়ি ছাড়েন তিনি। যদিও বাড়িতে বলেছিলেন, চাকরি নিয়ে আমেরিকা চলে যাচ্ছেন। মাসখানেক পর বোনের কোনও খবরাখবর না পেয়ে সন্দেহ হয় তাঁর পরিবারের। এর পর আকাঙ্ক্ষা র ভোপালের নম্বর খুঁজে পান তাঁর দাদা। সেই সঙ্গে তিনি জানতে পারেন, উদয়নের সঙ্গে একত্রবাস করছেন আকাঙ্ক্ষা । ওই বছরের ডিসেম্বরে পুলিশের দ্বারস্থ হন আকাঙ্ক্ষা র পরিবারের সদস্যরা।
তদন্তে জানা যায়, ভোপালে থাকাকালীন আকাঙ্ক্ষা কে খুন করেন উদয়ন। তার পর প্রেমিকার দেহ বাক্সবন্দি করে সেটি বাড়ির মেঝেয় পুঁতে দেন। ওই খুনের মামলায় ২০১৭ সালে ৩০ এপ্রিল উদয়নের বিরুদ্ধে ৬০০ পাতার চার্জশিট জমা করেছিল বাঁকুড়া পুলিশ। ১৯ জন সাক্ষীর বয়ান-সহ সমস্ত প্রমাণের ভিত্তিতে ২০২০ সালে উদয়নকে যাবজ্জীবন কারাবাসের সাজা দেয় আদালত।