ছত্তীসগঢ়ের মহিলা কমিশনের প্রধান কিরণময়ী নায়ক। ছবি: সংগৃহীত।
নারী-পুরুষের সম্পর্কে অবনতি হলেই অধিকাংশ মহিলা ধর্ষণের অভিযোগ আনেন বলে মন্তব্য করলেন ছত্তীসগঢ়ের মহিলা কমিশনের প্রধান কিরণময়ী নায়ক। বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। একটি রাজ্যের মহিলা কমিশনের প্রধান কী ভাবে ধর্ষণের মতো গুরুতর অপরাধ নিয়ে এ ধরনের মন্তব্য করলেন, সেই প্রশ্নও উঠছে।
গত কাল বিলাসপুরে নারী নিগ্রহ নিয়ে একটি আলোচনা চলছিল। সেখানেই কিরণময়ী বলেন, ‘‘যদি কোনও বিবাহিত পুরুষ কোনও মেয়েকে প্রলুব্ধ করেন, তা হলে সেই মেয়েটিকে বুঝতে হবে লোকটি মিথ্যে কথা বলছে কি না।
সেই ব্যক্তি আদৌ ওই মেয়েটির ভাল করবেন কি না, সেটাও তাঁকেই বিবেচনা করতে হবে। যখন সেই ভালটা হয় না, অধিকাংশ ক্ষেত্রে মেয়েরা তখন ধর্ষণের অভিযোগ নিয়ে পুলিশের কাছে যান।’’ সেই সঙ্গেই তাঁর সংযোজন, ‘‘বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, নারী-পুরুষের সম্মতিসূচক সম্পর্ক ছিল, হয়তো লিভ-ইন করতেন। বিচ্ছেদের পরে মহিলারা এফআইআর দায়ের করেন।’’ কিরণময়ী আরও জানিয়েছেন, আলোচনার মাধ্যমের বেশির ভাগ গার্হস্থ্য ঝামেলার মীমাংসার চেষ্টা করেন তাঁরা। তাঁর কথায়, ‘‘অনেক সময় মিটমাটের জন্য আমরা কমিশনের তরফে দম্পতিদের বকুনিও দিই। যাতে তাঁরা নিজেদের বিবাদ মিটিয়ে ফের একসঙ্গে থাকেন।’’
আরও পড়ুন: পরিবার পরিকল্পনায় জোরাজুরি নয়: কেন্দ্র
আরও পড়ুন: রবীন্দ্রনাথের জাতীয় সঙ্গীত এ বার বদলাতে চান স্বামী
নাবালিকাদের প্রতি কমিশন প্রধানের আর্জি, ‘‘ফিল্মি রোম্যান্সে গা ভাসিয়ে কারও ফাঁদে পা দিও না। এতে তোমার তো বটেই, তার সঙ্গে তোমার পরিবার, বন্ধু সকলের জীবন নষ্ট হয়ে যায়। কিরণময়ী আরও বলেছেন, ‘‘এখন নতুন চল শুরু হয়েছে যে ১৮ বছরেই বিয়ে করে নেন তরুণ-তরুণীরা। অল্প বয়সে সন্তান হয়ে যায়। তার পরে আর তাঁরা সংসার সামাল দিতে পারেন না।’’
কিরণময়ীর এই সব মন্তব্যের সমালোচনা করেছেন নারী অধিকার রক্ষা কর্মীদের একাংশ। তাঁদের বক্তব্য ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড বুরোর তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালে দৈনিক গড়ে ৮৭টা করে ধর্ষণের অভিযোগ জমা পড়েছে গোটা দেশে। নির্যাতিতা মহিলাদের একটা বড় অংশ সামাজিক লজ্জার ভয়ে পুলিশের কাছে যাওয়ারই সাহস পান না। গত বছর চার
লক্ষেরও বেশি পারিবারিক হিংসার অভিযোগ দায়ের হয়েছে সরকারি ভাবে। মহিলা কমিশনের প্রধানের এই ধরনের মন্তব্য দুর্ভাগ্যজনক বলে মনে করছেন তাঁরা।