জহওরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র নেতা কানহাইয়া কুমার। —ফাইল চিত্র।
কানহাইয়া কাণ্ডে আজ আদালতে ধাক্কা খেল দিল্লি পুলিশ।
দেশদ্রোহের অভিযোগে জহওরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র নেতা কানহাইয়া কুমার-সহ দশ জনের বিরুদ্ধে গত সোমবার দিল্লির পাটিয়ালা হাউজ কোর্টে ১২০০ পাতার চার্জশিট জমা দিয়েছিল দিল্লি পুলিশ। বিচারক দীপক সারস্বতের বেঞ্চে আজ ছিল সেই মামলার প্রথম শুনানি। কিন্তু আদালত দিল্লি পুলিশের জমা দেওয়া সেই চার্জশিট গ্রহণ করেনি। আইনজ্ঞদের মতে, ভারতীয় দণ্ডবিধিতে কোনও ব্যক্তির বিরুদ্ধে দেশদ্রোহের অভিযোগে চার্জশিট জমা দেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারের অনুমতি নিতে হয়। কিন্তু কানহাইয়াদের চার্জশিটে দিল্লি সরকারের অনুমতি ছিল না। এ নিয়ে আজ আদালতে প্রশ্নের মুখেও পড়ে দিল্লি পুলিশ। দিল্লি সরকারের আইন বিভাগের অনুমতি ছাড়া দিল্লি পুলিশ কী ভাবে ওই চার্জশিট দাখিল করল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে আদালত। ওই অনুমতি আদায়ের জন্য আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দিল্লি পুলিশকে সময় দিয়েছে আদালত।
দিল্লি পুলিশ সূত্র বলছে, তারা ইতিমধ্যেই ওই অনুমতি চেয়ে দিল্লি সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছেন। কিন্তু এ বিষয়ে সবুজ সঙ্কেত দেয়নি অরবিন্দ কেজরীবালের প্রশাসন। কেজরীবাল ঘনিষ্ঠ শিবিরের মতে, বাম ছাত্রনেতাদের বিরুদ্ধে তিন বছর আগে দেশদ্রোহের অভিযোগ এনেছিল আরএসএসের ছাত্র সংগঠন এবিভিপি। সে সময় দিল্লি সরকারের পক্ষ থেকে একটি আলাদা তদন্ত করা হয়েছিল। যে তদন্তে কানহাইয়া বা তার সঙ্গীদের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহের কোনও প্রমাণ পাননি নয়াদিল্লির জেলাশাসক। ফলে যে ঘটনায় একবার কানহাইয়াদের ক্লিন চিট দিয়েছে কেজরীবাল সরকার, সেই মামলায় নতুন করে দেশদ্রোহের অভিযোগে দিল্লি পুলিশকে তদন্ত করার অনুমতি দিলে প্রশ্নের মুখে পড়তে পারে আপ শিবির। তাই আপাতত বিষয়টি নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার পক্ষপাতী নয় কেজরীবাল প্রশাসন।
আরও পড়ুন: লড়াইয়ের হুমকি দিয়ে আলফায় বাঙালি যুবক
বিপাকে পড়ে এখন বিকল্প পথের খোঁজে দিল্লি পুলিশ। দিল্লির আইনশৃঙ্খলা কেন্দ্রের হাতে। বকলমে দিল্লি পুলিশের মাধ্যমেই রাজধানী শাসন করে মোদী সরকার। একটি সূত্রের দাবি, দেশদ্রোহের অভিযোগে তদন্ত শুরু করতে গেলে সংশ্লিষ্ট রাজ্য বা কেন্দ্রের অনুমতি দরকার। এ ক্ষেত্রে কেজরীবাল প্রশাসন শেষ পর্যন্ত অনুমতি না দিলে বিজেপি শাসিত কেন্দ্রীয় সরকার তথা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের থেকে অনুমতি চাওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে দিল্লি পুলিশ।