প্রতীকী ছবি।
বিরোধীদের আনা অনাস্থা প্রস্তাব এবং তা মোকাবিলার কৌশল নিয়ে বিজেপির অন্দরেই এখন দোলাচল।
একের পর এক উপনির্বাচনের হার, চন্দ্রবাবু নায়ডুর সমর্থন প্রত্যাহারে বড় ধাক্কা খেয়েছে বিজেপি। দলের নেতারাই মানছেন, হিন্দি বলয়ে উপনির্বাচনে হারে ত্রিপুরা জয়ের আনন্দ ম্লান হয়ে গিয়েছে। পাশাপাশি, চন্দ্রবাবুর সমর্থন প্রত্যাহার এনডিএ-র মধ্যেও অশান্তি বাধিয়েছে। রামবিলাস পাসোয়ান-সহ একাধিক শরিক অসন্তোষ জানাতে শুরু করেছেন। ২০১৯-এর ভোটের দিকে তাকিয়ে রামবিলাস তো বটেই, উত্তরপ্রদেশের ছোট শরিক ওমপ্রকাশ রাজভড়ের দল সুহেলদেব ভারতীয় সমাজ পার্টিও এখন সরব হয়েছে।
নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনার কথা প্রথম বলেন ওয়াইএসআর কংগ্রেসের জগন্মোহন রেড্ডি। চন্দ্রবাবু সমর্থন প্রত্যাহারের পরেই জগন্মোহনের এই অনাস্থার পিছনে অনেকেই মোদী-অমিত শাহের কৌশল দেখেছিলেন। তাঁদের বক্তব্য ছিল, এই অনাস্থাকে কাজে লাগিয়ে বিরোধী শিবিরের ছত্রভঙ্গ দশা তুলে ধরবেন বিজেপি নেতৃত্ব। কিন্তু চন্দ্রবাবু যে আরও একটি অনাস্থা প্রস্তাব আনবেন এবং চন্দ্রবাবুর প্রধান প্রতিপক্ষ কংগ্রেস সেই প্রস্তাবকে সমর্থন করবে, এটা ভাবতেই পারেননি মোদী-শাহ। পাশাপাশি অন্য বিরোধীরাও একে ঘিরে একজোট হয়ে পড়েছেন। এতেই বিপাকে পড়েছেন মোদী-শাহ। এখন মমতা-চন্দ্রবাবু-স্ট্যালিনের মতো আঞ্চলিক নেতারা ঠিক করেছেন, অনাস্থা প্রস্তাব এলে তিন দিন ধরে আলোচনায় মোদী সরকারকে তুলোধনা করা হবে। নীরব মোদী থেকে নোট বাতিল, জিএসটি— সব বিষয় নিয়েই কেন্দ্রকে বিঁধবেন তাঁরা।
আরও পড়ুন: বিহার বিজেপিকে বার্তা নীতীশের
আর এটাই এড়াতে চাইছে বিজেপি। এমনিতেই সরকারের কাজ নিয়ে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। তার মধ্যে সংসদে বিরোধীরা এককাট্টা হয়ে সমালোচনা করলে সমস্যা বাড়বে। তাই বিজেপি এখন কৌশল পাল্টে ফেলেছে। আজ অনাস্থা নিয়ে আলোচনাকে ভেস্তে দিতে সরকার আসরে নামায় এডিএমকে–কে। কাবেরী জলবণ্টন নিয়ে সংসদে হইচই বাধিয়ে দেয় তারা। রাজনীতিকদের একটি অংশের বক্তব্য, বিষয়টি নিয়ে আগামী দু’-তিন ধরে হইচই বাধিয়ে সংসদ মুলতুবি করে দেওয়া হবে। তাতে বিরোধীরা সংসদে সরকারের মুখ পোড়ানোর সুযোগ পাবে না।
অরুণ জেটলির মতো অনেকেই মনে করছেন, অনাস্থা নিয়ে তাঁদের কৌশল ভেস্তে গিয়েছে। উল্টে চন্দ্রবাবু-কংগ্রেসে বন্ধুত্ব হয়েছে! এই অবস্থায় গোলমাল করে অধিবেশন মুলতুবি করে দেওয়াটাই বুদ্ধিমানের কাজ। সঙ্ঘ নেতৃত্বও আজ বিজেপিকে বুঝিয়ে দিয়েছে, এই পরিস্থিতিতে অনাস্থা প্রস্তাব এড়ানোই বাঞ্ছনীয়।