দুর্গাপুজো উপলক্ষে শুরু হয়েছে কেনাকাটা। ছবি পিটিআই
দুর্গাপুজোয় আনন্দ করুন মাস্ক পরে। ভিড়ভাট্টা নয়, ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে শারদোৎসবে মেতে উঠুন। তা না-হলে উৎসব শেষ হতেই করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়বে বলে আজ সতর্ক করে দিল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক।
দেশে সংক্রমণের হার আগের চেয়ে কিছুটা হলেও কমেছে। ক্রমশ বাড়ছে সুস্থের সংখ্যা। এই ইতিবাচক পরিসংখ্যান ধরে রাখার পথে অন্যতম বাধা হল অক্টোবর-নভেম্বর, এই দুই মাস। পশ্চিমবঙ্গে যেমন ওই সময়ে দুর্গাপুজো-কালীপুজো রয়েছে, তেমনই হিন্দি বলয়ে রয়েছে দশেরা, দীপাবলি ও ছটপুজো। গত কয়েক মাস কার্যত ঘরবন্দি হয়ে থাকা আমজনতা বাৎসরিক উৎসবের দিনগুলিতে পথে নামবে বলে ধরেই নিচ্ছেন স্বাস্থ্যকর্তারা। ফলে উৎসব শেষ হতেই গোটা দেশে সংক্রমণ এক লাফে বৃদ্ধির আশঙ্কা করছে কেন্দ্র।
আজ স্বাস্থ্য মন্ত্রকের সাপ্তাহিক সাংবাদিক সম্মেলনে নীতি আয়োগের সদস্য (স্বাস্থ্য) ভি কে পল বলেন, ‘‘দুর্গাপুজো থেকে দশেরা কিংবা দীপাবলি মাস্ক পরেই পালন করুন। বেশি ভিড় এলাকায় যাওয়া মানে নিজের বিপদ ডেকে আনা। পরিবর্তে ছোট ছোট দলে ঘুরে বেড়ান।’’ স্বাস্থ্য মন্ত্রকের আশঙ্কা, এটুকু সতর্ক না-হলে উৎসব শেষ হতেই ফের নতুন করে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়বে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। ভি কে পল বলেন, ‘‘দিল্লি বা কেরলেও এক সময়ে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছিল। কিন্তু সামান্য ঢিলে দিতেই ফের সংক্রমণ দ্রুত গতিতে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে। তাই আগামী দিনে স্বাস্থ্যবিধি যথাযথ ভাবে পালন করা না-হলে সংক্রমণের দ্বিতীয় ধাক্কার সাক্ষী থাকতে পারে দেশ।’’
আরও পড়ুন: কোভিডে মৃত্যু বেশি কোন আর্থিক স্তরে, নেই তথ্য
তবে শুধু উৎসবের দিনগুলিই নয়, সংক্রমণের হারকে বেঁধে রাখার ক্ষেত্রে আসন্ন শীতকালও বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছেন স্বাস্থ্যকর্তারা। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণ বলেন, ‘‘শীতকালে ইনফ্লুয়েঞ্জা বা নিউমোনিয়ার ভাইরাস বেশি সক্রিয় থাকে বলেই ধারণা রয়েছে। করোনাভাইরাস শীতকালে কতটা সক্রিয় থাকবে, তা এখনও জানা সম্ভব হয়নি। তাই যতটা সম্ভব সাবধানতা অবলম্বনের প্রয়োজন রয়েছে।’’
আরও পড়ুন: রাজ্যে এক দিনে আবারও সর্বাধিক মৃত্যু, কমল সংক্রমণের হার
স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, আজ পর্যন্ত দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৬১.৪৫ লক্ষ। মৃতের মোট সংখ্যা ৯৬ হাজার পেরিয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে সংক্রমিত ৭০,৫৮৯। সুস্থ হয়েছেন ৮৪,৮৭৭ জন। মৃতের সংখ্যা সাম্প্রতিক অতীতে প্রায় রোজই হাজার পেরিয়েছে। আজ কিন্তু সেই সংখ্যাটা কমে হয়েছে ৭৭৬। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের বক্তব্য, মহারাষ্ট্র, কর্নাটকের মতো বেশি সংক্রমিত রাজ্যগুলিতে নতুন রোগীর সংখ্যা কমতে শুরু করার ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে দৈনিক করোনা আক্রান্তের পরিসংখ্যানে। রাজেশ ভূষণের বক্তব্য, ‘‘যদি গত এগারো দিনে আক্রান্ত ও সুস্থের সংখ্যার তুলনা করি, তা হলে দেখা যাবে, মাত্র দু’দিন বাদ দিয়ে বাকি ন’দিনই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরা রোগীর সংখ্যা আক্রান্তের চেয়ে বেশি।’’