ফাইল চিত্র।
দেড় মাস আগে মুখ্যসচিবদের সম্মেলনে কেন্দ্রীয় সরকার খয়রাতি নিয়ে রাজ্যগুলিকে সতর্ক করেছিল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তার পরে রাজ্যগুলির খয়রাতি এবং ভোট জিততে নগদ বিলির বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর শ্রীলঙ্কার আর্থিক সঙ্কটের উদাহরণ টেনে খয়রাতির বিপদের কথা শুনিয়েছেন। সুপ্রিম কোর্টও ভোটে জিততে খয়রাতির প্রতিশ্রুতিতে অর্থনীতির গুরুতর সমস্যা বলে তকমা দিয়েছে।
এ বার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নীতি আয়োগের পরিচালন পরিষদে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে এ বিষয়ে মুখ খুলতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে। রবিবার নীতি আয়োগের পরিচালন পরিষদের বৈঠকে সভাপতিত্ব করবেন প্রধানমন্ত্রী। বৈঠকের সরকারি আলোচ্যসূচিতে অবশ্য বিষয়টি নেই। কিন্তু কোভিড-বিধ্বস্ত দেশের অর্থনীতির হাল শোধরানো, রাজ্যগুলির কোষাগারের অবস্থা নিয়ে আলোচনায় এই প্রসঙ্গ উঠতে পারে বলে সরকারি কর্তারা মনে করছেন। কারণ অর্থ মন্ত্রক ও রিজার্ভ ব্যাঙ্ক— দুইয়েরই মত, কোষাগারের বেহাল দশা সত্ত্বেও বেশ কিছু রাজ্য ভোটে জেতার জন্য খয়রাতি প্রকল্প নিয়েছে, যার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের ‘লক্ষীর ভাণ্ডার’-এর মতো প্রকল্পও রয়েছে।
রাজনৈতিক শিবির মনে করছে, নীতি আয়োগের বৈঠকে এই প্রসঙ্গ উঠলে বিরোধী শিবিরের রাজ্যগুলির দিক থেকে আপত্তি উঠতে পারে। সুপ্রিম কোর্ট এ বিষয়ে সক্রিয় হওয়ায় তামিলনাড়ুর অর্থমন্ত্রী পি ত্যাগরাজন ইতিমধ্যেই প্রশ্ন তুলেছেন, নির্বাচিত সরকার কী ভাবে অর্থ খরচ করবে, সুপ্রিম কোর্ট কী ভাবে তাতে নাক গলাতে পারে? রাজ্যগুলির বিষয়ে কেন্দ্র হস্তক্ষেপের চেষ্টা করলে, কংগ্রেস-সহ বিরোধী শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা জিএসটি নিয়ে কেন্দ্র নিজের সিদ্ধান্ত রাজ্যগুলির উপরে চাপিয়ে দিচ্ছে বলে অভিযোগ তুলতে পারেন।
সূত্রের খবর, নীতি আয়োগের বৈঠকে পুরসভাগুলির আর্থিক স্বাস্থ্য ফেরানোর দিকে নজর দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের বলবেন। এ বিষয়ে পেশা কর বা প্রফেশনাল ট্যাক্স আদায়ের ক্ষমতা পুরসভাগুলির হাতে তুলে দেওয়ার প্রস্তাব আসতে পারে। অধিকাংশ রাজ্যে রাজ্য সরকারই পেশা কর আদায় করে। কিন্তু গুজরাত, কেরলের মতো রাজ্য পুরসভাগুলি এই কর আদায়ের দায়িত্বে রয়েছে।
নীতি আয়োগ আজ জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীদের বৈঠকে ধান-গমের বাইরে অন্যান্য ফসল চাষে জোর দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হবে। ডাল, ভোজ্য তেলের দাম বৃদ্ধির কথা মাথায় রেখে তৈলবীজ ও ডালে স্বনির্ভর হওয়ার লক্ষ্য নিতে চাইছে কেন্দ্র। এই দু’ক্ষেত্রেই ভারতকে আমদানির উপরে অনেকখানি নির্ভর করতে হয়। স্কুল শিক্ষা ও উচ্চশিক্ষাতেও জাতীয় শিক্ষানীতি কার্যকর করা নিয়েও আলোচনা হবে। প্রধানমন্ত্রীর দফতরের মতে, পুরসভাগুলির কর আদায় ব্যবস্থা উন্নত করা প্রয়োজন। এ বিষয়েও রাজ্যগুলিকে বার্তা দেওয়া হবে।