প্রতীকী ছবি।
বিশ্ব সাক্ষরতা দিবসে শিশুদের পাশাপাশি বয়স্কদের শিক্ষার উপরেও জোর দেওয়ার পরিকল্পনা ঘোষণা করল কেন্দ্র। এ জন্য দেশে এই প্রথম জাতীয় পাঠ্যক্রম তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এনসিইআরটি-কে। প্রযুক্তির প্রয়োগে ভরসা রেখে সময় বেঁধে ঝাঁপ দিলে, নির্ধারিত সময়ের অনেক আগেই একশো শতাংশ সাক্ষরতার লক্ষ্য ছোঁয়া সম্ভব বলে অভিমত শিক্ষামন্ত্রীরও। যদিও তার জন্য যথেষ্ট বরাদ্দ উপুড় করতে সরকার কতটা তৈরি, কার্যত অনুচ্চারিত থেকেছে সেই আলোচনা।
বিশ্ব সাক্ষরতা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত ভিডিয়ো-আলোচনায় স্কুল শিক্ষা সচিব অনিতা করওয়াল আজ বলেন, “নতুন জাতীয় শিক্ষা নীতিতে শুধু বয়স্কদের শিক্ষার বিষয়ে আলোচনার জন্য একটি পুরো পরিচ্ছদ রয়েছে। কারণ, বাড়ির বড়রা শিক্ষিত না-হলে, ছোটদের পড়াশোনা শেখানোর চেষ্টাও পুরোদস্তুর কার্যকরী হয় না। বাবা-মা কিংবা পাড়া-প্রতিবেশীর অক্ষর পরিচিতি না-থাকলে, তার প্রভাব পড়ে শিশুদের পঠন-পাঠনেও।” তিনি জানান, বয়স্ক-শিক্ষার জন্য নতুন জাতীয় পাঠ্যক্রমের খসড়া তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এনসিইআরটি-কে। দেশে এই প্রথম। এর উপরে ভিত্তি করে পাঠ্যসামগ্রী তৈরি হবে। ঠিক হয়েছে, এনসিইআরটি-র ভিতরে শুধু প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য আলাদা বিভাগ তৈরি করা হবে। এই শিক্ষায় কাদের আনা যাচ্ছে আর কারাই বা এর বাইরে থেকে যাচ্ছেন, তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় সেই বিষয়ে নিয়মিত নজর রাখবে তারা। তৈরি করবে অললাইন এবং অফলাইন পাঠ্যসামগ্রীও।
ইউনেস্কোর বেঁধে দেওয়া সময়সীমা অনুযায়ী, ২০৩০ সালের মধ্যে একশো শতাংশ সাক্ষরতার মাইলফলক ছোঁয়ার কথা ভারতের। কিন্তু শিক্ষামন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল নিশঙ্কের মতে, ফি বছর এক বা দু’কোটি জনের নিরক্ষরতা দূর করার লক্ষ্যমাত্রা এখন অর্থহীন। বরং জরুরি যত দ্রুত সম্ভব পূর্ণ সাক্ষরতার লক্ষ্য ছোঁয়া। তার জন্য পড়ুয়া, শিক্ষক, অসরকারি সংস্থা থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্ট সমস্ত পক্ষের হাত মেলানো জরুরি।
করওয়াল জানান, বয়স্কদের শিক্ষার ক্ষেত্রে শুধু অক্ষর ও সংখ্যা পরিচিতি ছাড়াও জোর দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে ডিজিটাল-সাক্ষরতা এবং জীবিকার উপযুক্ত দক্ষতা তৈরির উপরেও। ঠিক হয়েছে, অ্যাপ মারফত প্রতি রাজ্যে এই বিষয়ে অগ্রগতির উপরে নজর রাখা হবে। কিন্তু যেখানে ছোটদের ক্লাসরুম-সহ স্কুলের পরিকাঠামো বাড়ন্ত, অনলাইন শিক্ষার পরিকাঠামো অপ্রতুল, সেখানে এই বিপুল কর্মযজ্ঞের জন্য অতিরিক্ত বরাদ্দ কোথা থেকে আসবে, তা অবশ্য স্পষ্ট নয় এখনও।
বিশ্ব সাক্ষরতা দিবসে সকলকে বইমুখী হওয়ার ডাক দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। বলেছেন, আরও বেশি করে বইপত্রে ডুব দিতে। বেদ, উপনিষদের পাতায় বহু সমস্যার সমাধানসূত্র লুকিয়ে রয়েছে বলে তাঁর দাবি। মোদীর কথায়, “পড়ার থেকে বেশি আনন্দ কিছুতে নেই। নেই জ্ঞানের থেকে প্রিয় বন্ধুও।”