কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ফাইল চিত্র।
দেশে সন্ত্রাসবাদী কাজকর্ম আটকাতে কঠোর আনলফুল অ্যাক্টিভিটিস (প্রিভেনশন) অ্যাক্ট বা ইউএপিএ চালু করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু ২০২১ সাল পর্যন্ত এই আইনের আওতায় থাকা প্রায় চার হাজার মামলায় তদন্তই হয়নি। বিচারের অপেক্ষায় রয়েছে ২৮০০ মামলা। আর ২০১৯ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে ৪৮৯০ ইউএপিএ মামলার মধ্যে শাস্তি হয়েছে মাত্র ১৭৬ জনের। আজ কংগ্রেসের দুই সাংসদের প্রশ্নের জবাবে সংসদে এই তথ্য দিয়েছে অমিত শাহের হাতে থাকা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।
কেরলের সাংসদ টি এন প্রথাপন ও তামিলনাড়ুর সাংসদ বিষ্ণু প্রসাদ এম কে সরকারের থেকে জানতে চেয়েছিলেন, গত তিন বছরে ইউএপিএ-তে গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তির সংখ্যা কত— এর রাজ্যভিত্তিক হিসাবও চেয়েছিলেন তাঁরা। পাশাপাশি, অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বয়স ও ধর্মভিত্তিক ভিত্তিক তথ্যও চেয়েছিলেন এই দুই সাংসদ। ইউএপিএ-তে বন্দিদের দ্রুত বিচারের ব্যবস্থা করতে সরকারের কোনও পরিকল্পনা রয়েছে কি না, তা-ও জানতে চেয়েছিলেন তাঁরা। ইউএপিএ মামলাগুলি সাধারণ ভাবে কত দিন ধরে চলেছে অর্থাৎ তদন্ত থেকে শুরু করে বিচার ও শাস্তিদানে কত সময় লাগছে এবং এই আইনে গ্রেফতার হওয়া কতজন ব্যক্তির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা যায়নি, তা নিয়েও সাংসদদের প্রশ্ন ছিল।
জবাবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই আজ লোকসভায় জানিয়েছেন, আলাদা করে ধর্মভিত্তিক কোনও পরিসংখ্যান রাখা হয়নি। তিনি জানিয়েছেন, ইউএপিএ-তে তদন্তের কাজ মূলত রাজ্যগুলির পুলিশই করে থাকে।
তবে এই আইনে সন্ত্রাস-সহ বিভিন্ন ধরনের মামলার তদন্তে পুলিশ বাহিনীর ক্ষমতা বাড়ানোর চেষ্টা করে থাকে কেন্দ্রীয় সংস্থা। এ ছাড়া, জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)-র হাতে ইউএপিএ-র কিছু মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালে ইউএপিএ-র আওতায় ১৬২১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। এর মধ্যে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন ৬২ জন। তার আগের বছর, ১৩২১ জনকে ইউএপিএ-তে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তার মধ্যে পাঁচ জন ছিল অপ্রাপ্তবয়স্ক। এর মধ্যে সাজা হয়েছে ৮০ জনের। ২০১৯ সালের হিসেবে দেখা যাচ্ছে, গ্রেফতার হওয়া ১৯৪৮ জনের মধ্যে ৬ জন অপ্রাপ্তবয়স্ক। আর এদের মধ্যে চার জনের বয়স ১২ থেকে ১৬ বছরের মধ্যে।
ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস বুরোর তথ্যকে সামনে রেখে কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছে, ২০২১ সাল পর্যন্ত দেশে ইউএপিএ-র ৩৯৯৮টি মামলার তদন্ত হয়নি। যার মধ্যে ২০৪১টি মামলার তদন্ত তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে ঝুলে রয়েছে। মণিপুরে ইউএপিএ-র সবচেয়ে বেশি মামলার তদন্ত বকেয়া রয়েছে(২১৭৮)। এর পরেই রয়েছে জম্মু-কাশ্মীর। ২০২১ সাল পর্যন্ত সেখানে ৮৩০টি মামলার তদন্ত ঝুলে রয়েছে।