বিচারপতি এস মুরলীধর। ফাইল চিত্র।
দু’বছর আগে দিল্লি সংঘর্ষ মামলায় তাঁর একের পর এক পর্যবেক্ষণে প্রবল অস্বস্তিতে পড়েছিল অমিত শাহের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নিয়ন্ত্রণাধীন দিল্লি পুলিশ। বিজেপি নেতাদের উস্কানিমূলক মন্তব্যের ভিডিয়ো দেখার পরে দিল্লি হাই কোর্টের তৎকালীন বিচারপতি এস মুরলীধর প্রশ্ন তুলেছিলেন, এর একটি ক্ষেত্রেও এফআইআর দায়ের হয়নি কেন? এর পরেই সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়ামের সুপারিশ মেনে মাঝরাতে তাঁকে পঞ্জাব-হরিয়ানা হাই কোর্টে বদলি করা হয়। এর তীব্র প্রতিবাদ হয় আইনজীবী মহলে।
বিচারপতি মুরলীধর এখন ওড়িশা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি। এ বার কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়ামের সুপারিশ মেনে তাঁকে মাদ্রাজ হাই কোর্টে বদলির সুপারিশে সায় দিল না নরেন্দ্র মোদী সরকার।
গত ২৮ সেপ্টেম্বর কর্নাটক, রাজস্থান, জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখ এবং মাদ্রাজ হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি পদে বিচারপতিদের নাম কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রকের কাছে সুপারিশ করেছিল কলেজিয়াম। সেই সুপারিশ অনুযায়ী কর্নাটক হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি পদে বিচারপতি পি বি ভারালে, জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখ হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি পদে বিচারপতি আলি মহম্মদ মাগরে এবং রাজস্থান হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি পদে বিচারপতি পঙ্কজ মিত্তলের নিয়োগে সম্মতি দিয়ে গত কাল বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে কেন্দ্র। কিন্তু একই সঙ্গে বিচারপতি মুরলীধরকে ওড়িশা থেকে মাদ্রাজ হাই কোর্টে বদলির যে সুপারিশ করা হয়েছিল, তার কোনও উল্লেখ কেন্দ্রের বিজ্ঞপ্তিতে নেই। স্পষ্টতই, এই সুপারিশে কেন্দ্রের সায় নেই।
আইনজীবী মহলের বক্তব্য, কলেজিয়ামের সুপারিশ করা একগুচ্ছ নামের মধ্য থেকে কোনও একটি নির্দিষ্ট নাম নিয়ে আপত্তি তোলার উদাহরণ আগেও দেখা গিয়েছে নরেন্দ্র মোদী জমানায়। বর্ষীয়ান আইনজীবী গোপাল সুব্রহ্মণ্যম ও বিচারপতি কে এম জোসেফকে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি পদে এবং বম্বে হাই কোর্টের বিচারপতি আকিল কুরেশিকে মধ্যপ্রদেশ হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি পদে নিয়োগের সুপারিশে একই ভাবে আপত্তি তুলেছিল আইন মন্ত্রক। এ বার বিচারপতি মুরলীধরের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটল। ১৯৮৪ সালের শিখ বিরোধী দাঙ্গায় কংগ্রেস নেতা সজ্জন কুমারকে দোষী সাব্যস্ত করা, ২০০৯ সালে সমকামিতাকে অপরাধের তকমামুক্ত করার রায় দিয়েছিল তাঁরই ডিভিশন বেঞ্চ।