রাজনাথের সঙ্গে ইনটেলিজেন্স ব্যুরোর প্রধান দীনেশ্বর। ফাইল চিত্র
কড়া দমননীতির পথে হেঁটে জঙ্গি খতম করার পরিকল্পনা থেকে সরে কাশ্মীর নিয়ে আলোচনার রাস্তাতেই হাঁটার সিদ্ধান্ত নিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। আজ আলোচনার মাধ্যমে জম্মু-কাশ্মীরে শান্তি ফেরাতে প্রাক্তন গোয়েন্দা কর্তা দীনেশ্বর শর্মাকে দায়িত্ব দেওয়ার কথা জানান কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। এর আগে একাধিক বার কাশ্মীরে মধ্যস্থতাকারী নিয়োগের দাবি উঠেছে। সরকার রাজি হয়নি। কিন্তু আজ রাজনাথ সিংহ জানিয়েছেন, শান্তিপ্রতিষ্ঠার জন্য যে কোনও গোষ্ঠী ও ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলতে পারেন দীনেশ্বর শর্মা। সরকারের পক্ষ থেকে তাঁর উপরে কোনও বাধানিষেধ নেই। রাজনীতিকদের মতে, এ যাবৎ বিচ্ছিন্নতাবাদী হুরিয়তের সঙ্গে আলোচনা না করার অবস্থান নিয়েছিল সরকার। কিন্তু তা থেকে কার্যত সরে এল কেন্দ্র। খুলে দেওয়া হল সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনার রাস্তা।
আরও পড়ুন: চিনকে চ্যালেঞ্জ জানাতে সশস্ত্র ড্রোন কিনবে ভারত
সরকারের শরিক তথা জম্মু-কাশ্মীরের শাসক দল পিডিপি-র নেত্রী মেহবুবা মুফতি এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন। কিন্তু বিরোধীদের মতে, নীতি বিভ্রাটের কারণে কাশ্মীর সমস্যা নিয়ে আসলে কোনও তল পাচ্ছে না মোদী সরকার। শুরুতে এক দিকে সেনা অভিযান ও অন্য দিকে এনআইএ তদন্ত চালিয়ে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নিশ্চিহ্ন করার পরিকল্পনা নিয়েছিল সরকার। কিন্তু তাতে লাভ না হওয়ায় স্বাধীনতা দিবসের দিন লালকেল্লা থেকে প্রধানমন্ত্রী উপত্যকার সমস্যা মেটাতে কাশ্মীরের যুবকদের বুকে জড়িয়ে ধরার বার্তা দেন। গোপনে হুরিয়ত নেতাদের সঙ্গে আলোচনাও শুরু করে কেন্দ্র। কিন্তু তাতে আবার বাদ সাধে সঙ্ঘ পরিবার। সঙ্ঘের কড়া বার্তার পরে জঙ্গি দমনে পুরনো অবস্থানে ফেরার কথা জানান রাজনাথ।
কিন্তু দশ দিনের মধ্যে অবস্থান পাল্টে সেই রাজনাথই আজ জানালেন, কাশ্মীরে শান্তি ফেরাতে আলোচনায় পথেই হাঁটার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সব পক্ষের সঙ্গে কথা বলার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে মোদী জমানায় দু’বছর ইনটেলিজেন্স ব্যুরোর প্রধানের দায়িত্বে থাকা দীনেশ্বরকে। কাশ্মীরে গোয়েন্দা অফিসার হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেছিলেন দীনেশ্বর। তিনি বলেন, ‘‘আমার কাছে ব্যাপারটা বাড়ি ফিরে আসার মতো। আট-দশ দিনের মধ্যেই কাশ্মীরে যাব।’’
এই নিয়োগ নিয়ে কটাক্ষ করে কাশ্মীরের বিরোধী নেতা ওমর আবদুল্লা বলেন, ‘‘যারা মনে করছিল শক্তি প্রদর্শনই কাশ্মীর সমস্যার একমাত্র পথ, এটা তাদের পরাজয়।’’ আর কংগ্রেসের এক নেতার দাবি, ‘‘সিবিআই স্পেশ্যাল ডিরেক্টর রাকেশ আস্থানার নিয়োগ নিয়ে বিতর্ক চাপা দিতেই আজ তাড়াহুড়ো করে সাংবাদিক সম্মেলন ডাকতে বাধ্য হয়েছে সরকার।’’
সরকারের একটি অংশের মতে, মার্কিন বিদেশসচিবের সফরের আগে মধ্যস্থতাকারী নিয়োগ করে বিশ্বকে বার্তা দিল দিল্লি।