BBC Documentary

ভারতে তথ্যচিত্র না দেখাতে নির্দেশ

বিবিসি-র তথ্যচিত্র ‘দ্য মোদী কোয়েশ্চেন’-এ দু’দশক আগে গুজরাতের সাম্প্রদায়িক হিংসার কথা তুলে ধরা হয়েছে। তথ্যচিত্রটি ভারতে দেখা না গেলেও বিশ্বের অন্যত্র এবং সামাজিক মাধ্যমের একাংশে দেখা যাচ্ছিল।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০২৩ ০৭:৪৭
Share:

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ফাইল চিত্র।

গুজরাতের সাম্প্রদায়িক হিংসা নিয়ে তৈরি বিবিসি-র তথ্যচিত্রের লিঙ্ক এবং এই সংক্রান্ত মন্তব্য সমাজমাধ্যম থেকে তুলে নিতে বলল নরেন্দ্র মোদী সরকার। ইউটিউব ও টুইটারকে মোদী সরকার এই নির্দেশ দেওয়ার পরেই বিরোধী দলের নেতারা একে ‘সেন্সরসিপ’ আখ্যা দিয়েছেন। সংখ্যালঘুদের নিয়ে মোদীর মনোভাব নিয়ে ফের সরব হয়েছেন তাঁরা।

Advertisement

বিবিসি-র তথ্যচিত্র ‘দ্য মোদী কোয়েশ্চেন’-এ দু’দশক আগে গুজরাতের সাম্প্রদায়িক হিংসার কথা তুলে ধরা হয়েছে। তথ্যচিত্রটি ভারতে দেখা না গেলেও বিশ্বের অন্যত্র এবং সামাজিক মাধ্যমের একাংশে দেখা যাচ্ছিল। বিরোধী নেতাদের বক্তব্য, নরেন্দ্র মোদী সংখ্যালঘুদের প্রতি যে আচরণ করেছেন, এক ঘণ্টার তথ্যচিত্রে তা ফুটে উঠেছে। এই তথ্যচিত্র নিয়ে শুরু থেকেই আপত্তি জানিয়ে আসছিল মোদী সরকার। একে ‘অপপ্রচার’ আখ্যা দিয়ে দাবি করা হয়েছিল, ঔপনিবেশিক মানসিকতা থেকে তথ্যচিত্রটি তৈরি। ভারত সরকারের এই অবস্থানের পরই ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনক বিবিসি-র তথ্যচিত্র থেকে নিজের দূরত্ব তৈরি করেন। বিবিসি দাবি করেছে, যথেষ্ট গবেষণা করে তথ্যচিত্রটি তৈরি।

এই প্রেক্ষাপটেই সমাজমাধ্যম থেকে তথ্যচিত্রের লিঙ্ক ও কমেন্ট তুলে নিতে ইউটিউব ও টুইটারকে নির্দেশ দিয়েছে ভারত সরকার।

Advertisement

তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন অভিযোগ করেছেন, বিবিসির তথ্যচিত্রের উপর তাঁর টুইট মুছে দিয়েছে টুইটার। ডেরেকের বক্তব্য, এক ঘণ্টার তথ্যচিত্র দেখিয়ে দিয়েছে মোদী সংখ্যালঘুদের কতটা ঘৃণা করেন। এই তথ্যচিত্র যখন লক্ষ লক্ষ মানুষ দেখছেন, তাঁর টুইটকে তুলে নেওয়া ‘সেন্সরসিপ’ ছাড়া কিছু নয় বলেই মনে করেন ডেরেক। তৃণমূল নেতা টুইটারের থেকে পাওয়া মেল তুলে ধরে জানিয়েছেন, ভারত সরকারের অনুরোধেই সংস্থাটি এ কাজ করেছে। সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক টুইটার ও ইউটিউবকে বিবিসি-র তথ্যচিত্রের প্রথম পর্বের লিঙ্ক ভারতে না দেখানোর ব্যবস্থা করতে বলেছে। আইটি রুলস ২০২১-এর জরুরি ক্ষমতা প্রয়োগ করে ৫০টির মতো টুইট তুলে নেওয়ার জন্যও মন্ত্রকের তরফে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

কয়েকটি রাজ্যে বিধানসভা ভোটের আবহে এবং সংসদের বাজেট অধিবেশন শুরুর আগে তথ্যচিত্র-বিতর্ক নতুন মাত্রা পেয়েছে। কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ টুইটারে লিখেছেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী আর তাঁর গুণগান গেয়ে বেড়ান যাঁরা, তাঁরা মনে করছেন, বিবিসি-র তথ্যচিত্র বদনাম করতে করা হয়েছে। সেন্সরসিপও চালু হল। তা হলে প্রশ্ন, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ী কেন মোদীর অপসারণ চেয়েছিলেন?...কেন তিনি মোদীকে রাজধর্ম পালনের কথা মনে করান?’’ জয়রাম এর সঙ্গেই বাজপেয়ীর একটি ভিডিয়ো পোস্ট করেছেন। যেখানে মোদীকে পাশে বসিয়ে বাজপেয়ী বলছেন, ‘‘আমার একটাই বার্তা, উনি রাজধর্ম পালন করুন। আমি রাজধর্ম পালন করছি। পালন করার চেষ্টা করছি। রাজা কিংবা শাসক জন্ম, জাতি বা সম্প্রদায়ের ভিত্তিকে প্রজাদের মধ্যে কোনও ভাগাভাগি করতে পারে না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement