দিল্লি ‘দখলে’ মোদী সরকারের অর্ডিন্যান্স নিয়ে কেজরীওয়ালের তোপ। ফাইল চিত্র।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশকে পাশ কাটিয়ে দিল্লির প্রশাসনিক ক্ষমতার রাশ হাতে রাখতে শুক্রবার গভীর রাতে অধ্যাদেশ (অর্ডিন্যান্স) জারি করেছিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। শনিবার সকাল থেকেই সেই অধ্যাদেশ ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপান-উতোর। শনিবার বিকেলে এই বিষয়ে প্রথম বারের জন্য মুখ খুলেই কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়ালেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়াল।
সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে আপ প্রধান বলেন, “সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশকে অপমান করা হচ্ছে।” বিষয়টিকে ‘খুব খারাপ মানের মশকরা’ বলেও কটাক্ষ করেন তিনি। কেজরীওয়ালের কথায়, “মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে প্রকাশ্যে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করা হচ্ছে। এটা সরাসরি সুপ্রিম কোর্টের অবমাননা হিসেবেই ধরতে হবে।” তবে কেন্দ্র ঘুরপথে দিল্লি ‘দখল’ করতে চাইলেও তাঁরা যে থামবেন না, তা-ও স্পষ্ট করে দিয়েছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। কেজরীওয়াল বলেন, “এই অর্ডিন্যান্স সুপ্রিম কোর্টে বাধার মুখে পড়বে। কেন্দ্রীয় সরকারের এই সিদ্ধান্তে দিল্লি সরকারের কাজের গতি কমবে, কিন্তু আমরা থামব না।”
গত ১১ মে সুপ্রিম প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন সাংবিধানিক বেঞ্চ জানিয়েছিল, আমলাদের রদবদল থেকে যাবতীয় প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার রয়েছে দিল্লির নির্বাচিত সরকারের। কিন্তু শুক্রবার রাত ১১টা নাগাদ অর্ডিন্যান্স এনে ১০ পাতার গেজ়েট বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে কেন্দ্র। তাতে বলা হয়, জাতীয় রাজধানী সিভিল সার্ভিসেস কর্তৃপক্ষ গঠন করা হচ্ছে। আমলাদের নিয়োগ ও বদলির ব্যাপারে তাঁরাই সিদ্ধান্ত নেবেন। (দিল্লির) মুখ্যমন্ত্রী হবেন এর চেয়ারপার্সন। কিন্তু কমিশনে কেন্দ্র এবং লেফটেন্যান্ট গভর্নরের প্রতিনিধিদের সংখ্যা বেশি থাকায় তাঁরাই কার্যত নির্ণায়ক হবেন। শনিবার সকালেই এই বিষয়ে মুখ খুলেছিল আপ। আপ নেত্রী তথা দিল্লির মন্ত্রী আতিশী মারলেনা এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের রায় উপেক্ষা করতে অধ্যাদেশ জারি করেছে কেন্দ্র। এই অধ্যাদেশ পুরোপুরি অসাংবিধানিক। শীর্ষ আদালতের নির্দেশে মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়ালের নেতৃত্বাধীন সরকারের হাতে জনসেবামূলক কাজের ক্ষমতা চলে যাওয়ায় ভয় পেয়েছে বিজেপি। তাই তা আটকাতে অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছে।’’ তিনি জানান, বিষয়টি নিয়ে আবার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হবে দিল্লির আপ সরকার।