প্রতীকী ছবি।
ধূমপায়ীদের চিন্তা বাড়ল। সিগারেট, বিড়ি থেকে তামাকজাত পণ্যে আরও কর চাপানোর ইঙ্গিত দিল মোদী সরকার। তামাকজাত পণ্যে কর নীতি ঠিক করতে বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করেছে কেন্দ্র।
সিগারেট, বিড়ি ও অন্যান্য তামাকজাত পণ্যে কোথায় কতখানি কর বসানো উচিত, এই বিশেষজ্ঞ কমিটি তার সুপারিশ করবে। আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির বাজেটেই তার প্রতিফলন মিলতে চলেছে বলে সরকারি সূত্রের ইঙ্গিত।
কেন্দ্রীয় সরকারের এই সিদ্ধান্ত প্রকাশ্যে আসতেই আজ শেয়ার বাজারে সিগারেট ও তামাক প্রস্তুতকারী সংস্থার শেয়ারের দর ধাক্কা খেয়েছে। আইটিসি-র শেয়ার ৬ শতাংশেরও বেশি পড়েছে।
জিএসটি চালু হওয়ার পরে তামাকের উপরে সর্বোচ্চ ২৮ শতাংশ হারে জিএসটি আদায় করা হয়। তার উপরে তামাক শরীরের পক্ষে ক্ষতিকারক বলে জিএসটি-র পরেও অতিরিক্ত সেস চাপানো হয়। যেমন কোনও নির্দিষ্ট ব্র্যান্ডের তামাকে জিএসটি-অতিরিক্ত ৬৫ শতাংশ সেস কর চাপানো হয়। কিন্তু তা সত্ত্বেও এ দেশে সিগারেট, বিড়ি, তামাকে করের পরিমাণ আন্তর্জাতিক মানের তুলনায় যথেষ্ট কম বলে অর্থ মন্ত্রক সূত্রের ব্যাখ্যা। অর্থ মন্ত্রকের এক কর্তা বলেন, ‘‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র সুপারিশ অনুযায়ী সমস্ত তামাকজাত পণ্যে ৭৫ শতাংশ কর বসানো উচিত। দাম সাধ্যের বাইরে চলে গেলে অনেকেই তামাক সেবন ছাড়তে বাধ্য হবেন। যাঁরা ছাড়বেন না, তাঁরা অন্তত সিগারেট, বিড়ি খাওয়া কমাবেন। কিন্তু জিএসটি চালু হওয়ার পরে দেখা যাচ্ছে, কর ছাড় ইত্যাদি বাদ দিয়ে সিগারেটের উপরে ৫২.৭ শতাংশ কর আদায় হচ্ছে। বিড়িতে মাত্র ২২ শতাংশ এবং অন্যান্য তামাকে ৬৩.৮ শতাংশ।’’
জিএসটি চালুর পরে তামাকে কর বসিয়ে আদায় বিশেষ বাড়েনি। ২০১৮-১৯-এ সিগারেট থেকে কর আদায় হয়েছিল ৩৪,৮৩০ কোটি টাকা। ২০১৯-২০-তে হয়েছিল ৩৫,৬০০ কোটি টাকা।
অর্থনীতির নিয়ম মেনে অর্থমন্ত্রীরা বরাবরই বাজেটে কর আদায় বাড়াতে সিগারেট, তামাকে কর চাপানোর সিদ্ধান্ত নেন। কারণ সিগারেট, তামাকে কর বসিয়ে দাম বাড়ালেও তার বিক্রি কমে যায় না। কিছু মানুষ ধূমপান ছাড়লে বা কমালেও তার থেকে অনেক বেশি নতুন ধূমপায়ী বাজারে চলে আসেন। সরকারি কর্তারা বলছেন, প্রথমত, কোভিডের ধাক্কায় কেন্দ্র ও রাজ্যের কর আদায় কমেছে। অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে অর্থ ঢালতে হচ্ছে। এই প্রেক্ষিতে তামাকে কর বসিয়ে রাজস্ব আদায় বাড়ানোটা সহজ পন্থা। দ্বিতীয়ত, কোভিডের সময়ে দেখা গিয়েছে, ধূমপায়ীরা বেশি সমস্যায় পড়েছেন।
ভারত এমনিতেই তামাক সেবনকারীর সংখ্যায় গোটা বিশ্বে দ্বিতীয়। প্রায় ২৭ শতাংশ ক্যানসারের কারণ তামাক সেবন। সে দিক থেকেও তামাকে বেশি কর চাপানোটা যুক্তিযুক্ত সিদ্ধান্ত। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তৈরি বিশেষজ্ঞ কমিটিতে জিএসটি পরিষদ, অর্থ মন্ত্রক, কর পর্ষদের পাশাপাশি হু, নীতি আয়োগ, স্বাস্থ্য মন্ত্রকের প্রতিনিধিদেরও রাখা হয়েছে।