উপযুক্ত উপভোক্তাদের তালিকা ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে কেন্দ্রীয় পোর্টালে নথিভুক্ত করতেই হবে রাজ্যকে। ফাইল চিত্র।
দীর্ঘ টানাপড়েনের পরে নানান শর্তসাপেক্ষে পশ্চিমবঙ্গের জন্য প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার টাকা ছেড়েছে কেন্দ্র। তার পরেও কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছে, ওই প্রকল্পে বাড়ি পাওয়ার অগ্রাধিকারের বিষয়টি তারা নিজেদের হাতেই রাখছে। অর্থাৎ কে আগে বাড়ি পাবে, সেই তালিকা তৈরির ক্ষমতা থাকছে কেন্দ্রের হাতে। এ বার কেন্দ্রের তরফে জানিয়ে দেওয়া হল, উপভোক্তাদের নাম চলতি মাসের মধ্যে কেন্দ্রীয় পোর্টালে না-তুললে বাকি ‘কোটা’ অন্য রাজ্যে চলে যাবে।
রাজ্যের প্রশাসনিক সূত্রের খবর, ওই আবাস যোজনায় এ-পর্যন্ত ১৬% প্রাপকের নাম কেন্দ্রীয় পোর্টালে নথিভুক্ত করা গিয়েছে। অর্থাৎ ৮৪% নাম তোলা বাকি। এই অবস্থায় নয়া ফরমান জারি করে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক জানিয়েছে, রাজ্য সরকারকে তৎপর হয়ে অবশিষ্ট উপভোক্তাদের নাম ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে কেন্দ্রীয় পোর্টালে তুলতেই হবে। ব্যর্থ হলে বঙ্গের জন্য নির্দিষ্ট ‘কোটা’র বাকিটা বাতিল করে তা তুলে দেওয়া হবে এই কর্মসূচিতে সফল অন্য কোনও রাজ্যের হাতে।
এমন কড়া নির্দেশের মুখে সঙ্কট যে তীব্রতর হয়েছে, তা মেনে নিচ্ছে নবান্ন। রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী বুধবার এই বিষয়ে বিভিন্ন জেলাশাসকের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। সেখানে তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছেন, কেন্দ্রের বেঁধে দেওয়া সময়সীমা মেনেই প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় উপভোক্তাদের অনুমোদন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করতে হবে। নবান্ন সূত্রের খবর, মুখ্যসচিব বৈঠকে জানান, উপভোক্তাদের প্রথম কিস্তির টাকা দেওয়ার প্রক্রিয়া ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ করতে হবে এবং বাড়ি তৈরির কাজও গুটিয়ে ফেলতে হবে চলতি আর্থিক বছর অর্থাৎ ৩১ মার্চের মধ্যে। এই কাজ দ্রুত সম্পন্ন করতে এ দিন প্রয়োজনীয় বালি-ইট-সিমেন্ট জোগাড়ের কাজে জোরদার নজরদারি চালানোর জন্য জেলাশাসকদের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যসচিব। তিনি জানান, বিডিও-দের মাধ্যমে বিভিন্ন ইটভাটার সঙ্গে যোগাযোগ করে ওই সামগ্রী জোগাড়ের ব্যবস্থা করতে হবে।
সরকারি সূত্রের খবর, এ-পর্যন্ত যে-ষোলো শতাংশ উপভোক্তার নামে বাড়ি তৈরির অনুমোদন দেওয়া গিয়েছে, সংখ্যার হিসেবে সেটা প্রায় ১০.৪০ লক্ষ। মাত্র তিন মাসের মধ্যে এত বাড়ি তৈরি করা যে সহজ কথা নয়, তা মেনে নিয়েছে নবান্ন। আবার সময়সীমার মধ্যে তা সম্পন্ন করতে না-পারলে অপেক্ষা করছে কড়া পদক্ষেপ— এই উভয়সঙ্কটে সরকারের যে শিরে সংক্রান্তি অবস্থা, তা-ও স্বীকার করছে নবান্ন।