Ration

রেশন ডিলারদের কমিশন নিয়ে বিপাকে কেন্দ্র

বর্তমানে প্রতি কুইন্টাল খাদ্যশস্য কিনলে ৭০ টাকা কমিশন পেয়ে থাকেন রেশন ডিলারেরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৩:৫৮
Share:

প্রতীকী ছবি।

রেশন ডিলারদের কমিশন কত বাড়ানো উচিত তা নিরপেক্ষ ভাবে বিচার করতে ‘ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম’ সংস্থাকে দায়িত্ব দিয়েছিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। ডিলারেরা যে অর্থ দাবি করেছিলেন, ওই সংস্থা তার চেয়েও বেশি কমিশন সুপারিশ করায় তা মানতে গিয়ে রীতিমতো চাপে পড়েছে গিয়েছে কেন্দ্র। বিশেষ করে করোনা অতিমারির কারণে যখন রাজকোষ প্রায় খালি সেখানে গোটা দেশ জুড়ে রেশন ডিলারদের দাবি মেনে বর্ধিত কমিশন কী ভাবে দেওয়া সম্ভব তা নিয়ে এখন মাথায় হাত অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের। দাবি দ্রুত মানা না হলে দেশ জুড়ে আন্দোলনের কথা ভাবছেন রেশন ডিলারেরা।

Advertisement

বর্তমানে প্রতি কুইন্টাল খাদ্যশস্য কিনলে ৭০ টাকা কমিশন পেয়ে থাকেন রেশন ডিলারেরা। দীর্ঘ দিন ধরেই ওই কমিশনের পরিমাণ ৭০ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ২৫০ টাকা করার জন্য কেন্দ্রের কাছে দাবি জানিয়ে আসছিল ‘অল ইন্ডিয়া ফেয়ার প্রাইস শপ ডিলারস ফেডারেশন’। ওই দাবি যুক্তিযুক্ত কি না তা তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে খতিয়ে দেখার দায়িত্ব দেওয়া হয় ‘ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম’ সংস্থাকে। সংস্থা রিপোর্টে জানিয়েছে, অবিলম্বে ডিলারদের কমিশন ৭০ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে অন্তত ২২৪ টাকা করা হোক। যে এলাকায় রেশন দোকানের উপভোক্তা একটি নির্দিষ্ট সংখ্যার কম সেখানে রেশন ব্যবস্থাকে টিকিয়ে রাখতে কুইন্টাল পিছু ৯০০-১০০০ টাকা কমিশন দেওয়া হোক। ওই রিপোর্ট দ্রুত রূপায়ণে গত বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় খাদ্য ও গণবণ্টন সচিব সুধাংশু পাণ্ডের সঙ্গে বৈঠকে বসেন ডিলার ফেডারেশনের কর্তারা। সংস্থার জেনারেল সেক্রেটারি বিশ্বম্ভর বসু বলেন, ‘‘করোনা অতিমারির গোড়ায় বিশেষ করে লকডাউনের সময়ে মানুষের কাছে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার একমাত্র ব্যবস্থা ছিল রেশন দোকান। সংক্রমণের মধ্যে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে রেশন দোকান খোলা রেখেছেন ডিলারেরা। যার ফলে গোটা দেশে শ’খানেকের কাছাকাছি রেশন কর্মী সংক্রমিত হয়ে মারা গিয়েছেন।’’ তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমাদের একাধিক দাবি রয়েছে। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে আমাদের মূল দাবি হল দ্রুত ওই রিপোর্ট মেনে কমিশন বৃ্দ্ধি করুক সরকার। গত জানুয়ারি মাস থেকে যেন ওই রিপোর্টের ভিত্তিত আর্থিক কমিশন কার্যকর করা হয়।’’

কেন্দ্রীয় খাদ্য মন্ত্রক সূত্রের মতে, রেশন ডিলারদের সঙ্গে বৈঠকের পরেই বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য সংশ্লিষ্ট ডাইরেক্টরেটের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। খাদ্য মন্ত্রক সূত্র জানিয়েছে, তারা নীতিগত ভাবে ডিলারদের কমিশন বাড়ানোর পক্ষে। তা ছাড়া অর্থ মন্ত্রকের নির্দেশে হওয়া তৃতীয় পক্ষের করা সমীক্ষাও ডিলারদের দাবিকে সমর্থন করেছে। ফলে এ ক্ষেত্রে নিজেদের দায় এড়াতে পারে না অর্থ মন্ত্রকও। কিন্তু খাদ্য মন্ত্রক কর্তাদের আশঙ্কা, বর্তমানে আর্থিক পরিস্থিতিতে একটি বিষয় স্পষ্ট যে কেন্দ্রীয় কোষাগারের পরিস্থিতি একেবারেই ভাল নয়। সাংবিধানিক দায়বদ্ধতা মেনে রাজ্যগুলির জিএসটি ক্ষতিপূরণই মেটাতে পারছে না কেন্দ্র। ফলে এই পরিস্থিতিতে কমিশন বাড়ার প্রশ্নে অর্থ মন্ত্রক কতটা সবুজ সঙ্কেত দেবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে খাদ্য মন্ত্রকেই। ডিলার সংগঠনের বক্তব্য, সে ক্ষেত্রে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামা ছাড়া আর উপায় থাকবে না তাদের কাছে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement