স্বরাষ্ট্রসচিব অজয়কুমার ভল্লার ভিডিয়ো কনফারেন্সের পর মিটল অসম-মিজোরাম বিবাদ। —ফাইল চিত্র।
কেন্দ্রের হস্তক্ষেপে আপাতত নিষ্পত্তি৷ মিটল এক সপ্তাহ ধরে চলা অসম-মিজোরাম বিবাদ। স্বরাষ্ট্রসচিব অজয়কুমার ভল্লার ভিডিয়ো কনফারেন্সের পরেই সুরবদল হয়েছে দুই রাজ্যের। তিন দিন ধরে অর্থনৈতিক অবরোধের নামে অসমের কাছাড় জেলায় মিজোরামের প্রবেশপথ আটকে রাখা হয়েছে। অসম সরকার এ নিয়ে নীরব ছিল৷ সোমবার বৈঠকের পরেই তারা জানিয়ে দিয়েছে, সড়ক অবরোধ প্রত্যাহার হবে। দ্রুত তাঁরা বৈঠকে ডাকেন অর্থনৈতিক অবরোধের আহ্বায়কদের।
মিজোরাম সরকারও সীমা নিয়ে কোনও কথাই শুনতে রাজি ছিল না। এমনকি সার্ভে অব ইন্ডিয়ার ম্যাপ দেখে জমি চিহ্নিতকরণের প্রস্তাবও মানতে রাজি হয়নি। কিন্তু ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের পরে তারাও বলছে, সীমা বিবাদ সংঘাতে মিটবে না, আলাপ-আলোচনাতেই সমাধান হবে।
বেলা দুটোয় অজয়কুমার ভল্লা অসম ও মিজোরামের মুখ্যসচিবের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি সোজাসুজি জানিয়ে দেন, আন্তঃরাজ্য সীমায় শান্তি রক্ষায় দুই রাজ্যকেই উদ্যোগী হতে হবে৷ আর জাতীয় সড়ক কোনওভাবেই অবরুদ্ধ রাখা চলবে না৷ মূলত অসমের কাছাড় জেলা পেরিয়েই মিজোরামে ঢুকতে হয়৷ ওই সড়কে কাছাড়ের বাসিন্দাদের একাংশ অবরোধ গড়ে তোলায় সে রাজ্যে পণ্যসঙ্কটের আশঙ্কা দেখা দেয়৷ রবিবার জরুরি বৈঠকে বসে মিজোরাম মন্ত্রিসভা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে৷ অবৈধ মজুতের ব্যাপারে ব্যবসায়ীদের সতর্ক করে দেয়৷ সোমবার সড়ক খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হতেই মিজোরামের বাসিন্দাদের মধ্যেও সন্তোষ দেখা দেয়৷
বিবাদের সূত্রপাত করিমগঞ্জ জেলার অসম-মিজোরাম সীমায়৷ করিমগঞ্জের জেলাশাসক আনবুমাথান এমপির অভিযোগ, অসমের তিন কিলোমিটার ভিতরে ঢুকে ঝুম চাষ করছেন মিজোরামের চাষিরা৷ তিনি নিজে সেখানে গিয়ে ঝুমচাষিদের অস্থায়ী চালাঘর ভেঙে আসেন৷ পর দিনই মিজোরাম সরকার সেখানে ইন্ডিয়ান রিজার্ভ ব্যাটেলিয়নের ক্যাম্প বসিয়ে দেয়৷ দুই রাজ্যের জেলাশাসক পর্যায়ের বৈঠকে মিজোরাম ক্যাম্প সরাতে রাজি না হলে বিবাদ ছড়ায় কাছাড় জেলার সীমাতেও৷
আজ ফের দুই রাজ্যের অফিসার পর্যায়ের বৈঠক হয়৷ এর পরেই অসম পুলিশের স্পেশ্যাল ডিজি মুকেশ আগরওয়াল বলেন, আগামিকাল থেকে যান চলাচল স্বাভাবিক হচ্ছে৷ দুই রাজ্যই এসকর্ট দিয়ে নিজেদের এলাকায় আটকে থাকা লরিগুলিকে গন্তব্যে পৌঁছে দেবে৷ আলোচনার মাধ্যমে জমি বিবাদও মিটে যাবে বলে উভয়পক্ষ আশাবাদী৷ কিন্তু দু’রাজ্যের বিবাদে উভয় দিকে বেশ কিছু বাড়িঘর জ্বলেছে, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বহু দোকানপাট৷ তাদের ব্যাপারে কোনও বৈঠকেই কেউ কথা বলেননি৷ ক্ষতিগ্রস্তরা জানেন না, কার কাছে যাবেন ক্ষতিপূরণের দাবি জানাতে৷ সীমা থেকে সদরও যে কম দূরে নয়!