চিরাগ পাসোয়ান। —ফাইল চিত্র।
জাতগণনা নিয়ে মোদী সরকারের উপরে চাপ আরও বাড়ল। কারণ এ বার সরকারের অন্দরমহল থেকেই জাতগণনার দাবি উঠেছে। এনডিএ সরকারের শরিক দল, লোক জনশক্তি পার্টির প্রধান, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী চিরাগ পাসোয়ান রবিবার জাতগণনার দাবি তুলেছেন। চিরাগের বক্তব্য, ‘‘আমরা চাই, জাতগণনা হোক। আমার দলের অবস্থান বরাবরই স্পষ্ট। আমরা জাতগণনার পক্ষে।’’
শনিবারই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছিলেন, যথাসময়ে জনগণনা বা আদমসুমারি হবে। সিদ্ধান্ত হলেই এ বিষয়ে ঘোষণা হবে। ঠিক তার পরেই চিরাগের এই দাবি তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ বিরোধী শিবির জনগণনার সঙ্গেই জাতগণনার দাবি তুলেছে। এমনিতে জনগণনার সময় তফসিলি জাতি, জনজাতির সংখ্যা গোনা হয়। ওবিসি-দের সংখ্যা গোনা হয় না। জাতগণনায় ওবিসি-দের সংখ্যাও নির্ধারণের দাবি তুলে বিরোধীদের যুক্তি, জনগণনার ফর্মে ওবিসি-দের সংখ্যার একটা কলাম যোগ করা হোক। লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী রবিবার ফের জাতগণনার দাবিতে সরব হন। তিনি এক্স হ্যান্ডলে লেখন, “মোদীজি, জাতগণনা আটকানোর চিন্তা করে থাকলে স্বপ্ন দেখছেন। কোনও শক্তি আটকাতে পারবে না। ভারতের নির্দেশ এসে গিয়েছে, জলদি ৯০ শতাংশ ভারতীয় জাতগণনার সমর্থন ও দাবি জানাবে। নির্দেশ পালন করুন, না হলে আপনি ভবিষ্যতের প্রধানমন্ত্রীকে এই কাজ করতে দেখবেন।’’
নীতীশ কুমারের জেডিইউ অতীতে জাতগণনার দাবিতে সরব হলেও এনডিএ-তে যোগ দেওয়ার পর মুখে কুলুপ এঁটেছে। কিন্তু রামবিলাস-পুত্র চিরাগ আজ জানিয়েছেন, ‘‘জাতপাতের কথা মাথায় রেখে, অনগ্রসরদের জন্য কেন্দ্র বা রাজ্য সরকার নানা রকম প্রকল্প তৈরি করে। এই পরিস্থিতিতে অনগ্রসরদের সংখ্যা জানাটা জরুরি। যাতে অন্তত সেই অনুপাতে অর্থ বরাদ্দ করা যায়।’’ চিরাগ সম্প্রতি বিরোধীদের সুরে কেন্দ্রীয় সরকারের ৪৫টি পদে সরাসরি নিয়োগে সংরক্ষণের সুবিধা না দেওয়া নিয়েও সরব হয়েছিলেন। তার পরে সরকার পিছু হটে। এ বার তিনি জাতগণনার দাবি তোলায় বিজেপি নেতৃত্বের চিন্তা বেড়েছে। শনিবার শাহ জানান, যথাসময়ে জনগণনা হবে। বাস্তব হল, ২০২১-এ জনগণনা হওয়ার কথা থাকলেও এখনও তার কাজ শুরু হয়নি। বিরোধীদের মতে, জাতগণনা এড়াতেই জনগণনা পিছিয়ে দিচ্ছে মোদী সরকার। কংগ্রেস মুখপাত্র জয়রাম রমেশের কটাক্ষ, ‘‘তিন বছর এমনিতেই দেরি হয়ে যাওয়ার পরে স্বঘোষিত চাণক্য বলছেন যথাসময়ে জনগণনা হবে।’’ আরজেডি নেতা মনোজ কুমার ঝা আবার বলেছেন, ‘‘ঠিক সময়ে জনগণনা না হওয়ার কারণ নিয়ে সংশয় বাড়ছে।’’