গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
আইন সংশোধন হয়েছে প্রায় এক মাস আগে। সেই নতুন আনলফুল অ্যাকটিভিটিজ প্রিভেনশন অ্যাক্ট (ইউএপিএ)-এ এই প্রথম চার জনকে ইন্ডিভিজুয়াল টেররিস্ট বা স্বকীয় ‘জঙ্গি’ ঘোষণা করল ভারত। দাউদ ইব্রাহিম, হাফিজ সইদ, জাকিউর রহমান লকভি এবং মাসুদ আজহারদের জঙ্গি ঘোষণা করল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। বুধবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে এই মর্মে গেজেট নোটিফিকেশন জারি করা হয়েছে। যেহেতু জঙ্গি কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত, তাই শুধু তাদের সংগঠন নয়, ব্যক্তিগত ভাবেও তারা ‘জঙ্গি’— বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করেছে কেন্দ্র।
গত ২ অগস্ট রাজ্যসভায় পাশ হয়েছিল ইউএপিএ সংশোধনী।নয়া এই আইনে শুধু সংগঠন নয়, কোনও ব্যক্তি জঙ্গি কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত থাকলে, নির্দিষ্ট করে সেই ব্যক্তিকে জঙ্গি ঘোষণা করতে পারে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। সেই আইনেই বিজ্ঞপ্তি জারি করে বলা হয়েছে, এই চার জনই জঙ্গি কার্যকলাপ, সন্ত্রাসবাদ প্রচার করা, জঙ্গি দলে লোক নিয়োগ করা, বিভিন্ন নাশকতামূলক কাজের সঙ্গে যুক্ত বলে মনে করে ভারত। কেউ কেউ আবার জঙ্গি সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা ও মাথা। সেই কারণেই চার জনকে জঙ্গি হিসেবে ঘোষণা করা হল।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের বিজ্ঞপ্তিতে চার জনের বিরুদ্ধেই কী ধরনের অভিযোগ রয়েছে, কোন কোন নাশকতা বা জঙ্গি কার্যকলাপে যুক্ত তার সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে কেউ কেউ আবার ইতিমধ্যেই রাষ্ট্রপুঞ্জের ঘোষিত জঙ্গি তালিকাতেও রয়েছে।
আরও পডু়ন: ফের বানভাসি মুম্বই, জারি চূড়ান্ত সতর্কতা, আরও বৃষ্টির পূর্বাভাস, বিপর্যন্ত জনজীবন
মাসুদ আজহার সম্পর্কে বলা হয়েছে, সে জঙ্গি দলে নিয়োগের কাজে যুক্ত। পাশাপাশি বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানের নামে যে সব বক্তব্য পেশ করে মাসুদ আজহার, সেগুলি উগ্র ভারতবিরোধী আতঙ্কবাদে উৎসাহ দেয় এবং সেই কাজকে সমর্থন করে। পাঠানকোটে বায়ুসেনা ঘাঁটিতে জঙ্গি হানায় তার বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছে এনআইএ। পাক নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈবা এবং জামাত-উদ-দাওয়ার প্রতিষ্ঠাতা ও মাথা হাফিজ সইদ। ২০০০ সালে লালকেল্লায় হামলা, ২৬/১১ মুম্বই হামলা, উধমপুরে বিএসএফ-এর কনভয়ে হামলা-সহ একাধিক জঙ্গি হানার মাস্টারমাইন্ড সে। এই সব ঘটনায় অভিযুক্ত লস্কর-ই-তৈবার চিফ অপারেশনাল কম্যান্ডার জাকিউর রহমান লকভিও। তাকেও জঙ্গি ঘোষণা করেছে কেন্দ্র।
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
আরও পড়ুন: সারদার থেকে নেওয়া ৩১ লক্ষ টাকা ফেরত দিলেন শতাব্দী রায়
কেন্দ্রের ঘোষিত জঙ্গি তালিকায় নাম রয়েছে আন্ডারওয়ার্ল্ড ডন দাউদ ইব্রাহিমেরও। তার সম্পর্কে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক একটি অপরাধচক্র চালায় দাউদ ইব্রাহিম কাসকর। ভারত-সহ বিভিন্ন দেশে সন্ত্রাসের পরিকল্পনা, মদত ও অর্থের জোগান দেওয়া, অস্ত্র চোরাচালান, জাল নোট পাচার, টাকা ও মাদক পাচার, তোলাবাজি, বেনামে সম্পত্তি কেনা-বেচা, খ্যাতনামা ব্যক্তিদের খুনের চক্রান্ত, সমাজে সাম্প্রদায়িক বিভেদ ছড়ানোর মতো বহু অভিযোগ আনা হয়েছে ১৯৯৩ সালে মুম্বইয়ে ধারাবাহিক বিস্ফোরণে অভিযুক্ত দাউদের বিরুদ্ধে।