ছবি: সংগৃহীত।
প্রধানমন্ত্রীর নতুন বাসভবনের কমপ্লেক্সে থাকবে ১০টি ৪ তলা বাড়ি। যার সর্বোচ্চ উচ্চতা হবে ১২ মিটার। ‘সেন্ট্রাল ভিস্তা রিডেভেলপমেন্ট’ প্রকল্পে এমনই প্রস্তাব রাখা হয়েছে বলে সরকারি সূত্রে খবর।
এই প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্ব বর্তেছে সেন্ট্রাল পাবলিক ওয়ার্কস ডেভেলপমেন্ট (সিপিডব্লিউডি)-এর উপর। এই প্রকল্প থেকে কোনও মতেই প্রধানমন্ত্রীর নতুন অফিস (পিএমও) তৈরির পরিকল্পনা যে বাতিল করা হচ্ছে না, তা-ও সিপিডব্লিউডি তাদের নতুন প্রস্তাবে জানিয়েছে বলে সূত্রের খবর। যদিও নতুন প্রস্তাবে পিএমও-র উল্লেখ করেনি সিপিডব্লিউডি। সেখানেই প্রশ্ন ওঠে, তা হলে কি এই প্রস্তাব থেকে পিএমও-র নতুন বাড়ি তৈরির প্রকল্প বাদ দেওয়া হয়েছে? একটি সূত্র জানাচ্ছে, সিপিডব্লিউডি বলেছে, তাদের নতুন প্রস্তাব থেকে পুরনো কোনও প্রকল্পই বাদ দেওয়া হয়নি।
পরিবেশ এবং বন মন্ত্রকের ছাড়পত্রের জন্য বিশেষজ্ঞ প্যানেলের সামনে সিপিডব্লিউডি নতুন যে প্রস্তাব রেখেছে, তা থেকে ইঙ্গিত মিলেছে আগের কোনও প্রকল্প তারা বাতিল করছে না। নতুন প্রকল্পের খসড়ায় আগের চেয়ে খরচও বাড়ানো হয়েছে। আগে তারা এই প্রকল্পের জন্য ১১ হাজার ৭৯৪ কোটি টাকা ধার্য করেছিল। বর্তমানে তা বেড়ে হয়েছে ১৩ হাজার ৪৫০ কোটি টাকা। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠেছে।
আরও পড়ুন: কাশ্মীরে ভিড় পর্যটকের, প্রায় সব হোটেল ভর্তি জানুয়ারি পর্যন্ত
আরও পড়ুন: আজ ‘শ্রদ্ধাঞ্জলি দিবস’, কেন্দ্রের ‘রাজনৈতিক যোগ’ তত্ত্ব উড়িয়ে পাল্টা চিঠি কৃষক সংগঠনগুলোর
এই প্রকল্পে প্রধানমন্ত্রীর নতুন বাড়ি হবে ১৫ একর জায়গা জুড়ে। যাতে মোট ১০টি বিল্ডিং থাকবে। প্রতিটি বিল্ডিংয়ে একতলার উপর আরও তিনটি তলা থাকবে। ওই প্রস্তাবে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর নতুন বাসভবন ৩০ হাজার ৩৫১ স্কোয়ার মিটার এলাকা জুড়ে নির্মাণ করা হবে। নিরাপত্তারক্ষীদের জন্য পৃথক একটি বাড়ি নির্মাণ হবে ২. ৫০ একর এলাকা জুড়ে।
সিপিডব্লিউডি ওই প্রস্তাবে বলেছে, সেন্ট্রাল ভিস্তা রিডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের মধ্যেই থাকবে উপরাষ্ট্রপতির বাড়িও। যে এনক্লেভে ১৫ একর জায়গা জুড়ে ৩২টি বাড়ি নির্মাণ হওয়ার কথা। বাড়িগুলির প্রতিটি পাঁচতলা হবে। যার সর্বোচ্চ উচ্চতা ১৫ মিটার হবে। সেন্ট্রার ফর পলিসি রিসার্চে কর্মরত গবেষক কাঞ্চি কোহালি বলেন, ‘‘কেন পরিকল্পনা বদলানো হল, তা স্পষ্ট নয়। স্পষ্ট নয়, খরচ বেড়ে য়াওয়ার বিষয়টি।’’
পরিবেশ মন্ত্রক আগেই নতুন সংসদ ভবন নির্মাণে ছাড়পত্র দিয়েছে। তাদের ছাড়পত্রের জন্যই এ বার প্রধানমন্ত্রীর নতুন বাড়ির এই প্রকল্পের খসড়াও পাঠানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর স্বপ্নের ‘সেন্ট্রাল ভিস্তা প্রোজেক্ট’ নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে তিরস্কার করেও ছাড়পত্র দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
যমুনা নদীর তীরে ‘নবভারত উদ্যান’ গড়ার প্রকল্প নিয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। যমুনা নদীর পশ্চিম তীরে ২০.২২ একর জায়গা জুড়ে বহু অর্থ ব্যয়ে বিলাসবহুল বাগান এবং প্লাজা তৈরি পরিকল্পনা রয়েছে কেন্দ্রের। সেন্ট্রাল ভিস্তা প্রকল্পেরই অংশ এটি।
করোনার সংক্রমণ রুখতে সংসদের শীতকালীন অধিবেশন বাতিল করলেও কেন এই আবহেও কোটি কোটি টাকা খরচ করে নয়া সংসদ ভবন গড়ে তোলা হচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ। সেই সঙ্গে নাম না করেও মোদীকে আর এক ‘তুঘলক’ আখ্যা দিয়েছেন প্রশান্ত। কৃষক আন্দোলন নিয়েও মোদীর বিরুদ্ধে দ্বিচারিতার অভিযোগ করেছেন তিনি।
রবিবার একের পর এক টুইটে সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর নামোল্লেখ না করে তাঁকে আক্রমণ করেন প্রশান্ত। টুইটারে তিনি লিখেছেন, ‘এক দিকে সংসদের অধিবেশন বন্ধ রাখছে সরকার। অন্য দিকে, ১ হাজার কোটির টাকারও বেশি ব্যয়ে তৈরি নতুন সংসদ ভবনের শিলান্যাস করছেন প্রধানমন্ত্রী। নতুন সেন্ট্রাল ভিস্তা এবং প্রধানমন্ত্রীর নয়া বাসভবনের খরচই ১৪০০ কোটির ওপরে। তুঘলক?!’