সব প্রবেশিকার রাশ একটি সংস্থার হাতেই

ডাক্তারিতে ভর্তির ক্ষেত্রে ব্যাপক আর্থিক দুর্নীতির পরিপ্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে কেন্দ্রীয় ভাবে অভিন্ন মেডিক্যাল প্রবেশিকা চালু করা হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০৪:১৩
Share:

ডাক্তারিতে ভর্তির ক্ষেত্রে ব্যাপক আর্থিক দুর্নীতির পরিপ্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে কেন্দ্রীয় ভাবে অভিন্ন মেডিক্যাল প্রবেশিকা চালু করা হয়েছে। এ বার দেশের সব উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির সর্বভারতীয় পরীক্ষাগুলিকে এক ছাতার তলায় আনতে চাইছে কেন্দ্র। ওই সব পরীক্ষা নেওয়ার জন্য একটি স্বশাসিত ‘ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি’ তৈরি করা হচ্ছে বলে বুধবার বাজেট-বক্তৃতায় জানান কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি।

Advertisement

সেন্ট্রাল বোর্ড অব সেকেন্ডারি এডুকেশন (সিবিএসই), অল ইন্ডিয়া কাউন্সিল ফর টেকনিক্যাল এডুকেশন (এআইসিটিই)-এর মতো সংস্থাগুলি প্রতি বছর সর্বভারতীয় পরীক্ষা নেয়। কেন্দ্রীয় ভাবে কোনও প্রতিষ্ঠান না-থাকায় এত দিন নিজেদের দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষার পাশাপাশি সিবিএসই-কে সর্বভারতীয় জয়েন্ট এন্ট্রান্স, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগের ‘ন্যাশনাল এলিজিবিলিটি টেস্ট’ বা নেট, দেশ জুড়ে ডাক্তারিতে ভর্তির পরীক্ষা, এমনকী বিভিন্ন স্কুলে শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষাও নিতে হতো। নতুন ব্যবস্থা চালু হলে তারা এই দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি পাবে। তখন কেন্দ্রীয় ভাবে গড়া একটি সংস্থার মাধ্যমে ওই সব পরীক্ষা নেওয়া হবে।

তবে কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে বেজায় সংশয়ে পড়েছে শিক্ষা শিবির। ‘‘পুরো ব্যাপারটাই গোলমেলে। মেডিক্যাল শিক্ষার বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্র ঠিক কী চাইছে, বোঝা যাচ্ছে না। পরীক্ষার্থীরা আবার এক দফা বিভ্রান্ত হবেন বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে,’’ বলেন রাজ্যের স্বাস্থ্য (শিক্ষা) অধিকর্তা সুশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

ডাক্তারিতে ভর্তির জন্য বিভিন্ন রাজ্য নিজেদের মতো প্রবেশিকা পরীক্ষা নিয়ে আসছিল দীর্ঘদিন ধরে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই মেডিক্যালে ভর্তিতে মোটা টাকার লেনদেন হয় বলে ভূরি ভূরি অভিযোগ উঠছিল। শীর্ষ আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী গত বছর সিদ্ধান্ত হয়, আলাদা আলাদা ভর্তি-পরীক্ষা আর নয়। দেশ জুড়ে মেডিক্যালে ভর্তির জন্য নেওয়া হবে অভিন্ন প্রবেশিকা পরীক্ষা। একেবারে শেষ বেলায় এই সিদ্ধান্ত ঘোষণার ফলে বিপাকে পড়ে পশ্চিমবঙ্গ-সহ বেশ কয়েকটি রাজ্য। নিরুপায় হয়ে সুপ্রিম কোর্টেরই দ্বারস্থ হয় তারা। শেষ পর্যন্ত সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশে শুধু ওই বছরের জন্য আলাদা ভাবেই মেডিক্যাল জয়েন্টের ব্যবস্থা হয়। তবে সেটাই শেষ। এ বছর থেকে নেওয়া হচ্ছে অভিন্ন প্রবেশিকা।

তার পরেই উচ্চশিক্ষার সব প্রতিষ্ঠানে ভর্তির পরীক্ষা একটি সংস্থার আওতায় আনার সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্রীয় সরকার। এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন রাজ্য জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ডের প্রাক্তন চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ দত্ত। তবে একই সঙ্গে তাঁর বক্তব্য, ওই সব প্রবেশিকা পরীক্ষায় আঞ্চলিক ভাষা ব্যবহারের বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।

‘‘দেখতে হবে, নতুন সংস্থা আঞ্চলিক ভাষায় পরীক্ষার বিষয়টিকে প্রাধান্য দিচ্ছে কি না। পরীক্ষার পাঠ্যসূচিতে বিভিন্ন আঞ্চলিক বোর্ডের পাঠ্যক্রমের প্রতিফলন থাকা দরকার,’’ বলছেন সিদ্ধার্থবাবু।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement