স্মৃতি ইরানি এবং অমিত শাহ।
কয়েক ঘণ্টার বঙ্গ সফরে এসে ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসকে খোঁচা দিয়ে গেলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি। রবিবার হাওড়ার ডুমুরজলায় বিজেপি-র যোগদান মেলায় স্মৃতি বলেন, তৃণমূল ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনিকে অপমান করছে বলেই ওই দল ছেড়ে নেতা, মন্ত্রীরা বিজেপি-তে চলে আসছেন। অন্য দিকে, ভার্চুয়াল বক্তব্যে অমিত শাহ তাঁর পুরনো হুমকিই নতুন করে শোনালেন। বললেন, ‘‘বাংলা থেকে তৃণমূল সরকারকে উপড়ে ফেলতে হবে।’’
গত ২৩ জানুয়ারি কলকাতার ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হল প্রাঙ্গণে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উপস্থিতিতে ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বক্তৃতা করতে উঠতেই বিজেপি কর্মী, সমর্থকদের মধ্য থেকে ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি ওঠে। ক্ষুব্ধ ও বিরক্ত মমতা বক্তৃতা না করেই পোডিয়াম ছাড়েন। তার পরেও অবশ্য সৌজন্যের খাতিরে আগাগোড়া মঞ্চে ছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। এ নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। অস্বস্তিতে পড়লেও রাজ্যে বিজেপি নেতৃত্ব ওই ধ্বনিতে মমতার আপত্তি কেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। সেই বিতর্ক যেন রবিবার ফের উস্কে দিলেন স্মৃতি। বক্তৃতার শুরুতেই তৃণমূল ছেড়ে নেতাদের বিজেপি-তে যোগদান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘যে দলে ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনির অপমান হয় সেখানে কোনও দেশপ্রেমী থাকতে পারেন না।’’ এর পরে গোটা বক্তৃতা জুড়েই কখনও বাংলায়, কখনও হিন্দিতে রাজ্য সরকার তথা মমতার বিরুদ্ধে আক্রমণ চালিয়ে যান স্মৃতি। করোনাকালে রেশন চুরি থেকে বিজেপি নেতাদের কাজ করতে না দেওয়া-সহ রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগও তোলেন তিনি।
পুরনো কর্মসূচি অনুযায়ী রবিবার ডুমুরজলার সভায় থাকার কথা ছিল অমিতের। কিন্তু সেই সফর বাতিল হওয়ায় পরিবর্ত হিসেবেই আসেন কেন্দ্রীয় নারী উন্নয়ন মন্ত্রী স্মৃতি। সঙ্গে ছিলেন তাঁরই দফতরের প্রতিমন্ত্রী তথা রায়গঞ্জের সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরী। এ ছাড়াও ছিলেন উত্তরপ্রদেশের উপ-মুখ্যমন্ত্রী কেশবপ্রসাদ মৌর্য। তবে শারীরিক ভাবে উপস্থিত না থাকলেও ভার্চুয়াল মাধ্যমে বক্তৃতা করেন অমিত। স্মৃতির মতো তিনিও শুরুতেই প্রশ্ন তোলেন, কেন তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে এত যোগদান? নিজের প্রশ্নের উত্তর নিজেই দিয়ে অমিত বলেন, ‘‘১০ বছর আগে পরিবর্তনের স্লোগান দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল তৃণমূল। মা-মাটি-মানুষ স্লোগানও দিয়েছিলেন। মানুষ বিশ্বাস করেছিল। কিন্তু ১০ বছরে সেই স্লোগান উধাও হয়ে গিয়েছে।’’
বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্প থেকে রাজ্যের মানুষ বঞ্চিত হচ্ছেন বলেও এ দিন অভিযোগ তোলেন অমিত। সেই সঙ্গে বলেন, ‘‘রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় এলে মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকেই কেন্দ্রের আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প বাংলায় কার্যকর করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’ প্রশ্ন তোলেন, বাংলায় ‘কিষাণ সম্মান নিধি’ প্রকল্প চালু না হওয়া নিয়েও। সম্প্রতি সেই প্রকল্পে রাজ্য সরকার যে সায় দিয়েছে তা উল্লেখ করার পাশাপাশি অমিত দাবি করেন, সহমতের চিঠি দিলেও এখনও কৃষকদের তালিকা ও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের বিবরণ কেন্দ্রকে পাঠানো হয়নি। ভোটের মুখে বাংলার কৃষকদের রাজ্য সরকার বোকা বানাচ্ছে বলেও অভিযোগ তোলেন তিনি।