ফাইল চিত্র।
আর দেশ জুড়ে লকডাউন হবে না। কোভিডের সংক্রমণ নতুন করে বাড়তে শুরু করলেও, অর্থনীতিতে ফের ধস ঠেকাতে নরেন্দ্র মোদী সরকার এখনও পর্যন্ত এই নীতি নিয়েই চলতে চাইছে।
মহারাষ্ট্রের মতো কিছু রাজ্যে কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ ঠেকাতে নানা রকম বিধিনিষেধ জারি হয়েছে। দিল্লিতে রাতে কার্ফু জারি হয়েছে। অন্যান্য যে সব রাজ্যে কোভিডের আগ্রাসন বাড়ছে, সেখানেও স্বাভাবিক গতিবিধির উপরে বিধিনিষেধ জারি করা হচ্ছে। কিন্তু দেশ জুড়ে যে ফের লকডাউন জারি হচ্ছে না, তা আজ কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকের পরে স্পষ্ট করে দিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পীযূষ গয়াল। তিনি বলেন, ‘‘দেশ জুড়ে লকডাউন হচ্ছে না। স্থানীয় স্তরে যে সব লকডাউন হচ্ছে, তা সাময়িক।’’
গত বছর লকডাউনের ধাক্কায় গত অর্থ বছরের প্রথম তিন মাসেই জিডিপি-র এক ধাক্কায় প্রায় ২৪ শতাংশ সঙ্কোচন হয়েছিল। সেই ধাক্কা কাটিয়ে অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে কেন্দ্র এখনও চেষ্টা চালাচ্ছে। আজ কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা বাতানুকূল যন্ত্র, এলইডি এবং সোলার পিভি মডিউলস উৎপাদনে উৎসাহ ভাতা ঘোষণা করেছে। এই দু’টি ক্ষেত্রে আগামী পাঁচ বছরে ৬,২৩৮ কোটি টাকার উৎসাহ ভাতা দেবে কেন্দ্র। যে সব সংস্থা এই ক্ষেত্রে পণ্য বা যন্ত্রাংশ উৎপাদন করবে, তারা উৎপাদনের পরিমাণের ৪ থেকে ৬ শতাংশ হারে সরকারের থেকে সরাসরি উৎসাহ ভাতা পাবে।
দেশে কারখানায় উৎপাদন বাড়াতে, নতুন লগ্নি টেনে এনে আরও কর্মসংস্থান তৈরি করতে গত নভেম্বরেই মোদী সরকার ১৩টি ক্ষেত্রে উৎপাদনে উৎসাহ ভাতা ঘোষণা করেছিল। আজকের মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তের পরে মোট ১৩টির মধ্যে ৯টি ক্ষেত্রে উৎসাহ ভাতায় মন্ত্রিসভার সিলমোহর পড়ল। শিল্প-বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গয়ালের দাবি, উৎপাদন নির্ভর উৎসাহ ভাতা প্রকল্পের ফলে ১.৬৮ লক্ষ কোটি টাকা মূল্যের উৎপাদন বাড়বে। প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকার নতুন লগ্নি আসবে। প্রায় ৪
লক্ষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কর্মসংস্থান তৈরি হবে।
এক দিকে যখন মোদী সরকার অর্থনীতিতে কারখানার উৎপাদন বাড়াতে চাইছে, সে সময় কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কায় অর্থনীতির গতি রোধ হবে কি না, তা নিয়ে ফের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। সেই আশঙ্কা খারিজ করে দিতে গয়াল আজ বলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত রাজ্য সরকার স্থানীয় স্তরে যে সব লকডাউন বা বিধিনিষেধ জারি করেছে, তা থেকে কারখানার উৎপাদনকে বাইরে রাখা হয়েছে।’’
সরকারের উচ্চপদস্থ ব্যক্তিদের বক্তব্য, এখনও পর্যন্ত ‘টেস্ট-ট্র্যাক-ট্রিট’ অর্থাৎ পরীক্ষা, চিহ্নিতকরণ ও চিকিৎসার উপরেই জোর দিচ্ছে। কেন্দ্র মনে করছে, গত বছরের মতো রাতারাতি লকডাউন না করে কঠোর নিয়ন্ত্রণের ফলে কোভিডের সংক্রমণ রোখা যেতে পারে। অপ্রয়োজনে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বা বিশৃঙ্খলা চাইছে না কেন্দ্র। এতে অর্থনীতিতে লগ্নিকারী, শিল্পপতি, ব্যবসায়ী, কর্মী-শ্রমিকদের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হয়। সরকারের মতে, এখনও পর্যন্ত যা পরিস্থিতি, তাতে খুব বেশি হলে জেলা বা শহর স্তরে লকডাউনের কথা ভাবা যেতে পারে।