India-China Conflict

চিন-বিরোধী দেশের সেনা মহড়া, বেজিংকে নরমে-গরমে কৌশলী বার্তা দিল নয়াদিল্লি

জি২০ বৈঠকের আগে পূর্ব লাদাখ সংলগ্ন প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় চিনা সেনাকে নিজ শর্তে পিছু হটাতে এখন মরিয়া নয়াদিল্লি। তাই চিন সম্পর্কে হিসেব করে ভারত পদক্ষেপের সিদ্ধান্ত নিচ্ছে।

Advertisement

অগ্নি রায়

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১০ অগস্ট ২০২৩ ০৬:৫৭
Share:

চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। —ফাইল চিত্র।

বিষয়টি চিনের কাছে স্পর্শকাতর। সে কথা মাথায় রেখে বেজিং-বিরোধী ৩৪টি দেশের সেনা মহড়ায় যোগ দিল না নয়াদিল্লি। কিন্তু চিনকে নরমে-গরমে বার্তা দিতে বেজিং-বিরোধী অন্য একটি আকারে ছোট মালাবার নৌ মহড়ায় এ সপ্তাহে যোগ দিচ্ছে ভারতীয় নৌবাহিনী। সরকারি সূত্রে এ খবর পাওয়া গিয়েছে।

Advertisement

জি২০ বৈঠকের আগে পূর্ব লাদাখ সংলগ্ন প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় চিনা সেনাকে নিজ শর্তে পিছু হটাতে এখন মরিয়া নয়াদিল্লি। তাই চিন সম্পর্কে হিসেব করে ভারত পদক্ষেপের সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। সময়টা এখন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। চলতি মাসের তৃতীয় সপ্তাহে দক্ষিণ আফ্রিকায় আয়োজিত ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে এক মঞ্চে থাকবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। চেষ্টা চলছে সেখানে যাতে এই দুই রাষ্ট্রনেতার একটি পার্শ্ববৈঠকের আয়োজন করা যায়। দু’দেশের শীর্ষ পর্যায়ে বৈঠক হয়নি ২০২০ সালে গালওয়ান সংঘাতের পর থেকে। ব্রিকস-এ যদি ইতিবাচক বৈঠক হয়, তা হলে জি২০ বৈঠকে জিনপিংয়ের আসা নিশ্চিত হবে। মোদী সরকারও রাজনৈতিক ভাবে স্বস্তিজনক জায়গায় থাকতে পারবে বলে মনে করা হচ্ছে। সে কারণে এক দিকে যেমন বেজিংয়ের ভূমিকার সমালোচনা করা হচ্ছে, অন্য দিকে তাদের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক অবস্থান নেওয়া থেকেও বিরত থাকছে নয়াদিল্লি।

সূত্রের খবর, সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ায় আয়োজিত একটি বড় মাপের সামরিক মহড়ায় (২২ জুলাই থেকে ৪ অগস্ট) আমন্ত্রিত হয়েও যোগ দেয়নি ভারত। ‘তালিসম্যান সাবরে’ নামের এই মহড়ায় ১৩টি দেশ থেকে যোগ দিয়েছিলেন ৩৪ হাজার সেনা কর্তা। যে দেশগুলি যোগ দিয়েছিল তার মধ্যে অন্যতম আমেরিকা, ব্রিটেন, জার্মানি, ফ্রান্স, কানাডা, জাপান। এই মহড়ার লক্ষ্য ছিল, ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চিনের একাধিপত্যের বিরুদ্ধে কৌশল তৈরি করা। সূত্রের খবর, ভারতের সেনা অফিসারেরা যাতে ওই মহড়ায় যোগ দেন, সে জন্য গত মার্চে দিল্লি সফরকালে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্টনি অ্যালবানেজ় অনুরোধ করেছিলেন খোদ প্রধানমন্ত্রী মোদীকে।

Advertisement

সূত্রের খবর, বেজিংয়ের কাছে বিষয়টি স্পর্শকাতর বলে এতে যোগ দেয়নি নয়দিল্লি। ভারত-চিন সীমান্তকে স্বাভাবিক করার জন্য সাউথ ব্লকের কাছে আগামী কয়েক সপ্তাহ খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং অনিশ্চিত। ব্রিকস এবং জি২০— দু’টি শীর্ষ বৈঠকেই চিনের প্রেসিডেন্টের উপস্থিত থাকার কথা। তার মধ্যে যে কোনও একটিতে পার্শ্ববৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা থাকছে, যেখানে গালওয়ান সংঘাতের পর প্রথম বার মোদী মুখোমুখি বসে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের মেরামতি নিয়ে কথা বলার সুযোগ করে নিতে পারেন।

তবে তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে বড় মাপের সামরিক মহড়াতে যোগ না দিলেও এই সপ্তাহেই কিন্তু আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, জাপানের সঙ্গে মালাবার নৌ মহড়ায় যোগ দিচ্ছে ভারত। এই মহড়া নিয়েও চিনের তীব্র অসন্তোষ রয়েছে। কারণ, এটি সরাসরি চিনের সমুদ্রপথে দাপটের পাল্টা পদক্ষেপ। সূত্রের মতে, ভারত মালাবার থেকে সরে দাঁড়াচ্ছে না। কারণ, চিনের উপর থেকে চাপ একেবারে কমিয়েও আনতে চাইছে না সাউথ ব্লক। বেজিংয়ের উষ্মা সত্ত্বেও, মালাবারে নয়াদিল্লি আগেও যোগ দিয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement