অজয় মিশ্র টেনি।
সংসদের শীতকালীন অধিবেশন শেষ হতে আর মাত্র চার দিন বাকি। তবে লখিমপুর খেরি কাণ্ডে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী অজয় মিশ্র টেনিকে অপসারণের দাবিতে বিরোধীরা যে ভাবে সরব, তাতে শান্তিপূর্ণ ভাবে অধিবেশন চালানো মুশকিল হবে বলেই সরকার পক্ষ মনে করছে। এই পরিস্থিতিতে সরকারের সামনে একটাই উপায়, হট্টগোলের মধ্যেই প্রয়োজনীয় বিল পাশ করিয়ে নেওয়া।
সোমবার থেকে বৃহস্পতিবার, আর মাত্র চার দিন সংসদের অধিবেশন বাকি। এই চার দিনের মধ্যেই লোকসভা ও রাজ্যসভায় মোদী সরকারকে বাজেট অতিরিক্ত ব্যয় বরাদ্দ পাশ করিয়ে নিতে হবে। এ ছাড়া, মেয়েদের বিয়ের ন্যূনতম বয়স ১৮ বছর থেকে বাড়িয়ে ২১ বছর করার জন্য বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ আইনে সংশোধন বিল এবং ভোটার কার্ডের সঙ্গে আধারের সংযুক্তিকরণের রাস্তা খুলতে নির্বাচন সংক্রান্ত আইনে সংশোধনী বিল পেশ করতে চায় সরকার। সরকারি সূত্রে ইঙ্গিত, অন্তত মেয়েদের বিয়ের বয়স সংক্রান্ত বিলটি পাশ করিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। তবে ব্যাঙ্কের বেসরকারিকরণের জন্য ব্যাঙ্ক আইন সংশোধনী বিল চলতি অধিবেশনে আসার আর সম্ভাবনা নেই বলেই সরকারি সূত্রের খবর।
প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা আজও প্রশ্ন তুলেছেন, কেন অজয়কে কেন্দ্রীয় সরকারের মন্ত্রী পরিষদ থেকে সরানো হচ্ছে না? কে তাঁকে অপসারণ করতে চাইছেন না? প্রিয়ঙ্কা বুঝিয়ে দিয়েছেন, আগামী সপ্তাহেও কংগ্রেস লখিমপুর খেরি নিয়ে প্রতিবাদ চালিয়ে যাবে। কিন্তু মোদী সরকার এখনও টেনিকে অপসারণ না করার বিষয়ে অনড়। বিজেপি সূত্রের যুক্তি, অজয় মিশ্র টেনি ব্রাহ্মণ বলেই তাঁকে মন্ত্রিসভায় নেওয়া হয়েছিল। উত্তরপ্রদেশে ঠাকুর সম্প্রদায়ের যোগী আদিত্যনাথকে মুখ্যমন্ত্রী করায় ব্রাহ্মণ সম্প্রদায় ক্ষুব্ধ। তার উপরে যোগী জমানায় মাফিয়া-গ্যাংস্টারদের মধ্যে বেছে বেছে ব্রাহ্মণদের নিশানা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। টেনি দলের ব্রাহ্মণ মুখ নন। তিনি লখিমপুর খেরি এলাকায় ‘মহারাজ’ বা ‘মাসলম্যান’ বলেই পরিচিত। কিন্তু তাঁকে সরালে ব্রাহ্মণ সম্প্রদায়ের চটে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। রাজ্যের অন্তত
৫০টি বিধানসভায় ব্রাহ্মণ ভোটই নির্ধারক শক্তি।
উত্তরপ্রদেশ থেকে দিল্লিতে ফেরার পরে বৃহস্পতিবার টেনি নর্থ ব্লকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে তাঁর দফতরে গিয়েছিলেন। তবে শুক্রবার উত্তরপ্রদেশের কিছু সাংসদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে তিনি ছিলেন না। সোমবার দিল্লিতে সশস্ত্র সীমা বলের অনুষ্ঠানে তাঁর যাওয়ার কথা। বিজেপি নেতৃত্বের যুক্তি, টেনির ছেলের বিরুদ্ধে কৃষকদের খুনের মামলা রয়েছে। কারও ছেলের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে বলে তাঁকে মন্ত্রিসভা থেকে সরিয়ে দিলে খারাপ দৃষ্টান্ত তৈরি হবে। ভবিষ্যতে এই ধরনের অনেক দাবি মেনে নিতে হবে।