প্রতীকী চিত্র।
নানা প্রকল্পের সুবিধা নিতে গেলেই নাগরিকদের নিজেদের হাজারো তথ্য সরকারকে জানাতে হয়। কিন্তু সরকারি তথ্য ভাণ্ডার থেকে আদৌ তথ্য মেলা সম্ভব কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন ছিলই। সেই প্রশ্নকে জোরালো করেছে রাজ্যের এক সমাজকর্মী তথা সমাজবিজ্ঞানের গবেষক সাবির আহমেদের অভিজ্ঞতা। তথ্যের অধিকার আইনে (আরটিআই) দায়ের করা আবেদনপত্রের জবাবে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে অন্তত ২২টি চিঠি তিনি পেয়েছেন ঠিকই। কিন্তু সেগুলির বেশির ভাগই আসল তথ্য জানাতে পারেনি।
সাবির জানিয়েছেন, প্রশাসনে বিভিন্ন লিঙ্গ এবং সামাজিক গোষ্ঠী বা জাতির প্রতিনিধিত্ব কত তা নিয়ে গবেষণা করছেন তিনি। সেই কারণেই কেন্দ্রীয় সরকারি প্রশাসনে মহিলা, সংখ্যালঘু এবং তফসিলি জাতি, জনজাতিভুক্ত মানুষের প্রতিনিধিত্ব কত তা জানতে চেয়ে আরটিআই-এর অধীনে আবেদন করেন। মূলত কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মিবর্গ ও প্রশাসন বিভাগে এই তথ্য থাকার কথা। কিন্তু তারা দিতে পারেননি। সাবিরের আবেদনপত্র এক বিভাগ থেকে অন্য বিভাগে ঘুরেছে। এর মধ্যে ব্যুরো অব পুলিশ রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট-সহ দু’টি বিভাগ তথ্য দিয়েছে। বাকিরা জানিয়েছে, সেই তথ্য সরকারের কাছে নেই।
কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন দফতর থেকে যে চিঠি সাবিরকে পাঠানো হয়েছে তাতে এ-ও বলা হয়েছে যে দফতরের কাছে যে তথ্য রয়েছে, আরটিআই-এর জবাবে তাই দেওয়ার কাজ ভারপ্রাপ্ত আধিকারিকের। আবেদনকারীর জন্য নতুন করে তথ্য ভাণ্ডার তৈরি করা কিংবা কাল্পনিক প্রশ্নের উত্তর দেওয়া সেই অফিসারের কাজ নয়। তবে কর্মিবর্গের লিঙ্গ, ধর্ম এবং জাতিভিত্তিক পরিসংখ্যান সরকারের কাছে কেন থাকবে না, সেই প্রশ্ন উঠতে পারে। প্রসঙ্গত, চাকরির আবেদনপত্রেই এই বিষয়গুলির উল্লেখ থাকে। লিঙ্গ, ধর্ম এবং জাতিভিত্তিক সংরক্ষণও দেওয়া হয়।
সাবিরের বক্তব্য, কেন্দ্রীয় সরকার নাগরিকদের তথ্য নিলেও নিজেদের তথ্য প্রকাশে আগ্রহী নয়। তাঁর অভিযোগ, এই ক্ষেত্রের প্রকৃত তথ্য সামনে এলে অসাম্যের বিষয়টি প্রকট হতে পারে বলেই কেন্দ্রীয় সরকার তথ্য প্রকাশে নারাজ। তিনি বলেন, দু’টি বিভাগ যেটুকু তথ্য মিলেছে তাতে পুরো গবেষণা না-হলেও একটি ইঙ্গিত পাওয়া যায়। সেই ইঙ্গিত ধরে হিসেব করলে বোঝা যায়, সরকারি চাকরিরত মহিলাদের প্রতিনিধিত্বের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এবং শ্রীলঙ্কা ভারতের তুলনায় এগিয়ে ছিল। সংখ্যালঘু এবং তফসিলি জাতি, জনজাতিদের ক্ষেত্রে অসাম্যের অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকার যে জাতিভিত্তিক শুমারি না-করার উপরে জোর দিচ্ছে সেটাও এই কারণেই।