Corona Vaccine

দেশের সব মানুষকে টিকা দেওয়ার কোনও পরিকল্পনাই নেই, সাফ জানাল কেন্দ্র

আগামী দিনে কমবয়সিদের প্রতিষেধক দেওয়া হলেও ১৪ বছরের নীচে যাদের বয়স, তাদের টিকাকরণের কথা এখনই ভাবছে না কেন্দ্র।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০২১ ০৬:০৮
Share:

প্রতীকী ছবি।

দেশের সব মানুষকে করোনার প্রতিষেধক দেওয়ার কোনও পরিকল্পনা সরকারের নেই বলে ফের জানিয়ে দিল কেন্দ্র। আজ লোকসভায় এই সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তরে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন জানান, করোনার মতো ভাইরাসের যা চরিত্র, তাতে দেশের প্রত্যেক মানুষকে প্রতিষেধক দেওয়ার প্রয়োজন নেই। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশের ৬০-৭০ শতাংশ মানুষের শরীরে করোনার বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডি তৈরি হলেই ওই ভাইরাসের ছড়িয়ে পড়া আটকে দেওয়া সম্ভব।

Advertisement

গত ১৫ জানুয়ারি থেকে দেশ জুড়ে টিকাকরণ শুরু করেছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। প্রথম ধাপে তিরিশ কোটি ভারতীয়কে টিকাকরণের আওতায় নিয়ে আসার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। পরবর্তী পর্যায়ে দেশের প্রত্যেককে প্রতিষেধকের আওতায় নিয়ে আসা হবে কি না, এই তথ্য স্বাস্থ্য মন্ত্রকের কাছে জানতে চেয়েছিলেন এনসিপি সাংসদ সুপ্রিয়া সুলে। আজ লোকসভায় সেই প্রশ্নের জবাবে হর্ষ বর্ধন বলেন, ‘‘বৈজ্ঞানিক কারণেই করোনার প্রতিষেধক দেশের প্রত্যেক মানুষকে দেওয়ার প্রয়োজন নেই। বর্তমানে এ দেশে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নিয়ম মেনে স্বাস্থ্যকর্মী, ফ্রন্টলাইন ওয়ার্কার, প্রবীণ নাগরিক এবং ক্রনিক রোগে আক্রান্ত ৪৫-৫৯ বছর বয়সিদের প্রতিষেধক দেওয়া হচ্ছে। পরবর্তী সময়ে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মেনে আরও কম বয়সিদের প্রতিষেধকের আওতায় নিয়ে আসা হবে। কিন্তু তা বলে দেশের সব মানুষকে ওই প্রতিষেধক দেওয়ার কোনও লক্ষ্য সরকারের নেই।’’

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, করোনাভাইরাসের যা চরিত্র, তাতে দেশের ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ মানুষের শরীরে ওই ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়ার অ্যান্টিবডি তৈরি হলেই সংক্রমণ ছড়ানো রুখে দেওয়া সম্ভব। সাধারণত দু’ভাবে শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হতে পারে। প্রথমত, করোনায় আক্রান্তেরা সুস্থ হয়ে ওঠার কিছু সপ্তাহ পরে তাঁদের শরীরে স্বাভাবিক নিয়মে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়। দ্বিতীয়ত, প্রতিষেধকের মাধ্যমে শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি করা হয়ে থাকে। তৃতীয় সেরো সমীক্ষার রিপোর্টের ভিত্তিতে গত ফেব্রুয়ারি মাসে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর) জানিয়েছিল, গত ডিসেম্বরেই দেশের প্রায় ২৮ কোটি মানুষ করোনা সংক্রমিত হয়েছিলেন। যদিও সেই সময়ে খাতায়-কলমে মাত্র এক কোটি সংক্রমিতের তথ্য ছিল সরকারের কাছে। ফলে বাকি ২৭ কোটি কারা, তা স্পষ্ট ভাবে চিহ্নিত করতে না-পারাটা মন্ত্রকের কাছে একটি সমস্যা। তাই ঝুঁকি না নিয়ে প্রথম ধাপে ৩০ কোটিকে গণ-টিকাকরণের আওতায় নিয়ে আসার লক্ষ্যমাত্রা নেয় কেন্দ্র। পরবর্তী ধাপে আরও কুড়ি থেকে তিরিশ কোটি মানুষকে টিকাকরণের আওতায় নিয়ে আসার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের।

Advertisement

আগামী দিনে কমবয়সিদের প্রতিষেধক দেওয়া হলেও ১৪ বছরের নীচে যাদের বয়স, তাদের টিকাকরণের কথা এখনই ভাবছে না কেন্দ্র। হর্ষ বর্ধন জানান, অন্যদের তুলনায় ০-১৪ বছর বয়সিরা করোনায় অনেক কম আক্রান্ত হয়েছে। একেবারে ছোটদের সংক্রমণের খবর মিললেও অধিকাংশের শরীরে ওই ভাইরাসের উপসর্গ দেখা যায়নি বললেই চলে। তাই ছোটদের জন্য এখনই আলাদা করে পরিকল্পনা করেনি সরকার। তবে দীর্ঘমেয়াদি ভিত্তিতে করোনা সংক্রমণের প্রভাব ছোটদের উপরে পড়ছে কি না, তা এমসের শিশুরোগ বিভাগ গবেষণা করে দেখছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement