শিক্ষানবিশ আমলা পূজা খেড়কর। —ফাইল চিত্র।
শিক্ষানবিশ আমলা পূজা খেড়করের মা মনোরমা খেড়কর এবং বাবা দিলীপ খেড়কর বিবাহবিচ্ছেদের অভিনয় করেছিলেন কি? একাধিক তথ্যে সেই ইঙ্গিত মিলেছে। উভয়ের বৈবাহিক সম্পর্কের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার জন্য পুণে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। মনে করা হচ্ছে, নকল বিচ্ছেদ সাজিয়েছিলেন দম্পতি। তার সুযোগ নিয়েছেন পূজাও।
পূজার বিরুদ্ধে বেআইনি ভাবে সরকারি বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার ফয়দা তোলা, আমলা হওয়ার পরীক্ষায় জাল শংসাপত্র দাখিল এবং ভুল তথ্য দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ওই অভিযোগে ইতিমধ্যেই পূজার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। আমলা হওয়ার পরীক্ষার নিয়ম অনুযায়ী, কোনও আবেদনকারীর পারিবারিক আয় বার্ষিক আট লক্ষ টাকার কম হলে তিনি ‘ওবিসি নন-ক্রিমি লেয়ার’-এ সংরক্ষণের সুবিধা পান। পূজা বিভিন্ন পরীক্ষার ইন্টারভিউতে গিয়ে জানিয়েছেন, তাঁর পারিবারিক আয় শূন্য। কারণ তাঁর বাবা এবং মায়ের বিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছে এবং তিনি মায়ের সঙ্গে থাকেন। এ ভাবে বিশেষ ওবিসি সংরক্ষণের সুযোগ নিয়েছিলেন পূজা।
ইন্ডিয়া টুডে জানিয়েছে, ২০০৯ সালে পারস্পরিক সম্মতিতে পুণের পারিবারিক আদালতে বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন জানিয়েছিলেন মনোরমা এবং দিলীপ। ২০১০ সালের ২৫ জুন তাঁদের আইনি বিবাহবিচ্ছেদ হয়। কিন্তু তার পরেও দু’জনে দীর্ঘ দিন একসঙ্গে থেকেছেন। কিছু দিন আগে পর্যন্তও মনোরমা এবং দিলীপকে একসঙ্গে দম্পতির পরিচয় দিয়েই বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে দেখা গিয়েছে। দিলীপ লোকসভা ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন। তিনি অবসরপ্রাপ্ত সরকারি আধিকারিক। হলফনামায় নিজের সম্পত্তির পরিমাণ জানিয়েছেন ৪০ কোটি টাকা। শুধু তা-ই নয়, নির্বাচনী হলফনামায় মনোরমাকে নিজের স্ত্রী হিসাবেই পরিচিত করেছেন দিলীপ। উভয়ের মিলিত সম্পত্তির হিসাবও দিয়েছেন।
সত্যিই দিলীপ এবং মনোরমার বিবাহবিচ্ছেদ হয়েছিল কি না, পূজার পারিবারিক আয় কত, জানতে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র। পুণে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।
একটি পুরনো ভাইরাল ভিডিয়োর ভিত্তিতে পূজার মাকে ইতিমধ্যে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সেখানে তাঁকে এক কৃষককে পিস্তল উঁচিয়ে হুমকি দিতে দেখা গিয়েছে। মনোরমার বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে পুলিশের কাছে এফআইআর দায়ের করেছিলেন ওই কৃষক। তার পর থেকেই মনোরমা পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন বলে জানিয়েছে পুণে পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টা-সহ একাধিক ধারায় মামলা রয়েছে। তবে ভাইরাল ওই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন।